শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দুই পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতার মুক্তির দাবিতে গাজীপুরে সমাবেশ, মহাসড়কে তীব্র যানজট একদিন বিশ্বের মানুষ ভারতের ভিসার জন্য লাইনে দাঁড়াবে: মোদি নির্বাচন হলে সব সংকট কেটে যাবে: মির্জা ফখরুল মামলার তদন্তে পুলিশ নয়, আলাদা সংস্থার প্রস্তাব কমিশনের দ্রুত নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে সরকার কাজ করছে তামিমের অবসর : যা বলছেন মুশফিক-রিয়াদ-শান্তরা মেঘনায় দুই স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৩ এ কে আজাদ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হবিগঞ্জে বাস চাপায় তিন নারী শ্রমিক নিহত ‘গণমানুষের ক্যান্সার হাসপাতাল’ তৈরিতে তহবিল সংগ্রহ শুরু যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তি বাস্তবায়নে ‘কাছাকাছি অবস্থানে’ হামাস-ইসরাইল বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পলাতক আ.লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামানের সাক্ষাৎ আ.লীগের নিবন্ধন থাকবে কিনা ‘সময় বলে দেবে’: সিইসি ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা ৭ রোহিঙ্গা ফেনীতে আটক কিছুটা নিয়ন্ত্রণে পাঁচদিন ধরে চলা লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বাজার তদারকি করছে ৫ টিম সুশাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ায় টাকা পাচার বন্ধ হয়েছে : গভর্নর হামলাকারীদের কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে দুটি নতুন ট্রেন

লবণসহিষ্ণু সিমের নতুন জাত উদ্ভাবন

গাজীপুরপ্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৯ এপ্রিল, ২০২১
  • ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

সিমের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) একদল গবেষক। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. গোলাম রসুল। সম্প্রতি জাতীয় বীজ বোর্ড এটি অনুমোদন করেছে।

নতুন বিইউ সিম-৭ জাতটি লবণসহনশীল ও উচ্চফলনশীল হওয়ায় বাংলাদেশের বিস্তৃত দক্ষিণাঞ্চলে শীত মৌসুমে পতিত থাকা জমির সুষ্ঠু ব্যবহার ও অধিক পরিমাণ সবজি উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

প্রফেসর ড. মো. গোলাম রসুল জানান, নতুন উদ্ভাবিত এ জাতে গাছপ্রতি ২ দশমিক ৪ থেকে ৩ দশমিক ৫ কেজি সিম উৎপাদিত হয়। সেই হিসেবে হেক্টর প্রতি সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ফলনশীলতা ৩৫ টন।

Sim

তিনি বলছেন, ১২ ডিএস/এম লবণাক্ততা সহনশীল হওয়ায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৯টি উপকূলীয় জেলাসহ সারাদেশে আবাদ করা সম্ভব এই জাতের সিম। তিনি আরও বলেন, বিশ্বে টাটকা সবজিতে ০.৫ থেকে ৩২.০ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম অ্যান্থসায়নিন পাওয়া যায়। তবে নতুন এই জাতটিতে উচ্চমাত্রায় অ্যান্থসায়ানিনের উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেছে।

অ্যান্থসায়নিন হলো পোলিফেনোলিক রঞ্জক যা পরাগায়নে সাহায্যকারী পতঙ্গ এবং বীজ বিস্তারককে আকর্ষণ করে ফসলের বংশ বিস্তারের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে গাছকে সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে। শাকসবজিতে প্রাপ্ত অ্যান্থসায়নিন মানবদেহের ভাস্কুলার প্রদাহ হ্রাস এবং থ্রম্বোসিস (রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধা) প্রতিরোধে যথেষ্ট কার্যকরী বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্বীকৃত।

Sim

প্রফেসর ড. মো. গোলাম রসুল জানান, প্রায় সব জাতের সিমই জাব পোকা এবং জ্যাসিড দ্বারা আক্রান্ত হয়। শীতের অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে সিমের প্রধান পতঙ্গ শত্রু। অর্থাৎ এফিড এবং জ্যাসিড মাত্রাতিরিক্তভাবে বংশবিস্তারের কারণে ফসলটি মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে ফলন কমে যায়, যা থেকে নতুন জাতটি প্রতিরোধী।

অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রোপণ করলে ১৩০ দিনে ভক্ষণযোগ্য ফল সংগ্রহ করা যায় নতুন জাতের এই সিম থেকে। তবে বীজ সংগ্রহের জন্য আরও ২০ দিন সময় বেশি লাগবে।

সিমের জাতটি সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া বলেন, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়ন বজায় রাখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নতুন জাতের এই সিম উপকূলীয় এলাকার কৃষকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিপ্লব ঘটাতে সম্ভব হবে বলে আশা করি।

Sim

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে ২০ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৪৪ হাাজর ৫০ টন সিম উৎপাদিত হচ্ছে (বিবিএস, ২০২০)। দেশের প্রায় সব জাতগুলো মৌসুমের একই সময়ে ফলন দেয় এবং বেশিরভাগ চাষি একই সময়ে তাদের সিম বাজারে নিয়ে আসেন। এতে করে সিমের বাজারমূল্য হ্রাস পায়। তাছাড়া খরা, লবণাক্ততা, অতিবৃষ্টি, পোকামাকড় (এফিড) বা রোগবালাইয়ের আক্রমণে উৎপাদন কমে যায়।

বাংলাদেশের মোট আয়তনের ৩৭% উপকূলীয় এলাকা। ওই এলাকাতে চাষ উপযোগী সবজি তথা সিমের অনুমোদিত উফশি তেমন জাত নেই। এমতাবস্থায়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, টেকসই খাদ্য উৎপাদন বজায় রাখা এবং খরা, অতিবৃষ্টি ও লবণাক্ততার প্রভাব প্রতিরোধসহ বিস্তৃত উপকূলীয় এলাকায় চাষযোগ্য নতুন জাত উদ্ভাবনই সর্বোত্তম ও বিকল্প উপায় বলে মনে করা হচ্ছে।

Sim

উৎপাদন পদ্ধতি

দেশের সব জেলাতে শীত মৌসুমে এই জাতের বীজ রোপণ করা যেতে পারে। গোবর-মাটির মিশ্রণে ভরা (অর্ধেক-অর্ধেক) ছোট পলিথিন ব্যাগে চারা গজিয়ে পরবর্তীতে মাঠে গর্তে লাগানোই ভালো। প্রতি গর্তে ১০ কেজি পচা গোবর, ১০ গ্রাম ইউরিয়া (দুইবারে), ৩০ গ্রাম টিএসপি ও ২০ গ্রাম পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে।

বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা শতকরা ৯০ ভাগ বিবেচনায় নিয়ে প্রতি হেক্টরে ৪.০ থেকে ৫.০ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। বীজ লাগানোর ১৩০ দিনের মধ্যে সবজি ফসল হিসাবে সিম সংগ্রহ করা যায়। তবে বীজ সংগ্রহের জন্য আরও ২০ দিন সময় বেশি লাগবে। এক কঞ্চি বিশিষ্ট বাউনি বা মাচা চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে এই সিম উৎপাদন করা যায়।

বাংলা৭১নিউজ/এমএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com