লক্ষ্মীপুরে ডাব খাওয়ানোর কথা বলে শ্বাসরোধে মামুন হোসেন নামে (১২) এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় সৎ বাবা মো. মাকসুদ ওরফে মাসুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, দাম্পত্য বিরোধকে কেন্দ্র করে শিশু মামুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ একটি নালায় ফেলে রাখে মাসুদ। আদালতে মাসুদ হত্যাকারী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। রায়ের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন।
মাসুদ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের চৌপল্লী গ্রামের হাসান চৌকিদারের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী রাহেনা বেগম সুমি সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের টুমচর গ্রামের কলিম উল্যার মেয়ে। ২০১২ সালে প্রথম স্বামী বরিশালের বাসিন্দা আবু ছিদ্দিকের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। এ সংসারে সুমন ও মামুন নামে দুই ছেলে ছিল। পরে মাসুদের সঙ্গে সুমির দ্বিতীয় বিয়ে হয়।
তারা চট্টগ্রামে বসবাস করতো। সুমির আগের সংসারের ছেলেরা টুমচর গ্রামে নানার বাড়িতে থাকতো। নানি মারা গেলে সুমি তাদেরকে চট্টগ্রামে নিজের কাছে নিয়ে যায়। এনিয়ে স্বামী মাসুদের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এতে বড় ছেলে সুমনকে অন্যত্র কাজে দিয়ে দিলেও ছোট ছেলে মামুন সঙ্গেই থাকতো।
২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি সুমি তার ছেলে মামুন ও স্বামী মাসুদকে নিয়ে টুমচর গ্রামে বাবার বাড়িতে আসে। তখন স্থানীয় একটি মাদরাসায় মাহফিল চলছিল। মাহফিলে যাওয়ার কথা বলে মামুনকে নিয়ে মাসুদ ঘর থেকে বের হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে ডাব খাওয়ানোর কথা বলে মাসুদ একটি নির্জন বাগানে তাকে নিয়ে যায়। সেখানে নাক-মুখ চেপে ধরে মামুনকে হত্যা করা হয়।
পরে নালায় ফেলে রেখে বাড়ি যান। বাড়িতে মামুনের কথা জিজ্ঞেস করলে মাহফিল থেকে হারিয়ে গেছে বলে জানায় মাসুদ। এতে তিনি নিজেই অন্যদের সঙ্গে মামুনকে খুঁজতে থাকে। পরদিন দুপুরে মামুনের মরদেহ নালায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ ঘটনায় সুমি বাদি হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ