বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও গণধর্ষণের দায়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ ছয় শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাকে দায়ী করে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে অং সান সু চি’র নেতৃত্বাধীন সরকার।
মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হতেইকে উদ্ধৃত করে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমার’র খবরে এ কথা বলা হয়েছে।
জ হতেই বলেছেন, “ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করা হয়েছিল হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের একটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে। মিয়ানমার সরকার যে হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের রেজুলেশনের সঙ্গে নেই, তা সব সময়ই স্পষ্ট করে বলেছি। এ কারণে আমরা ওই প্রক্রিয়ায় অংশ নিইনি এবং ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে মিয়ানমারে ঢুকতে দিইনি। তাই হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের কোনো রেজুলেশনের সঙ্গে আমরা একমত নই, তা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্যও নয়।”
মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র দাবি করেন, তার দেশ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে বিশ্বাসী। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেসব ‘ভুয়া’ অভিযোগ এ পর্যন্ত করেছে, সেগুলো তদন্তের জন্যও মিয়ানমার একটি কমিশন গঠন করেছে।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার চলতি বছরের শুরুতে রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে চার সদস্যের ওই কমিশন গঠনের ঘোষণা দেয়। স্থানীয় দুইজনের সঙ্গে ওই কমিশনে সদস্য হিসেবে আছেন ফিলিপিনো কূটনীতিক রোজারিও মানালো এবং জাতিসংঘে জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত কেনজো ওশিমা।
গত সোমবার (২৭ আগস্ট) জাতিসংঘের মিয়ানমার-বিষয়ক স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গণহত্যার অভিপ্রায় থেকেই রাখাইনের অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। আর মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চির বেসামরিক সরকার বিদ্বেষমূলক প্রচারকে উসকে দিয়ে, গুরুত্বপূর্ণ আলামত ধ্বংস করে এবং সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা না করে সেই নৃশংসতায় ভূমিকা রেখেছে।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে আইন প্রয়োগের নামে ভয়ঙ্কর ওই অপরাধ সংঘটনের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা শুরুর পর এই প্রথম মিয়ানমার সরকারের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এলো।
এর প্রতিক্রিয়ায় জ হতেই বলেন, মিয়ানমার সরকার কারো ফেইসবুক বন্ধ করতে বলেনি। ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ ওই পদক্ষেপ নিয়ে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে।সূত্র: পার্সটুডে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস