বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: কাটিং মাস্টার ওবায়দুলের ছুরিকাঘাতেই খুন হয় উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা(১৩)। এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
ঘাতক ওবায়দুল রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে অবস্থিত ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং মলের বৈশাখী টেইলার্সের কাটিং মাস্টার। তাকেই এখন খুঁজছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার এসআই মোশাররফ হোসেন জানান, বুধবার উইলস লিটলফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে ওভারব্রিজে রিশাকে ছুরিকাঘাতের পর থেকেই পলাতক রয়েছেন কাটিং মাস্টার ওবায়দুল।
ঘটনার পর তাকে গ্রেপ্তার করতে বৈশাখী টেইলার্সে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। গত কয়েদিন ধরে সে তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে গ্রেপ্তার করতে সম্ভাব্য সব স্থানে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
এসআই মোশাররফ হোসেন জানান, রিশা মৃত্যুর পর ওবায়দুলকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। আশা করা হচ্ছে- শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
রবিবার সকালে রিশার বাবা রমজান আলী বলেন, বৈশাখী টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ওবায়দুলই রিশাকে ছুরিকাঘাত করেছে। গত বুধবার রিশাকে আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) নেয়ার পর রিশা তার মাকে এ কথা জানায়।
‘ছুরিকাঘাতে আহতাবস্থায় রিশাকে বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। টানা চারদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর রবিবার সকালে মারা যায় সে’।
উইলস লিটল ফ্লাওয়ারের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাফি জানায়, সে ফুটওভার ব্রিজের নিচ দিয়ে কলেজে যাচ্ছিল। এ সময় চিৎকার শুনে ফুটওভার ব্রিজের ওপরে গিয়ে রিশাকে আহতাবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় একজনকে দৌড়ে পালাতে দেখে সে।
রিশার মা তানিয়া হোসেন জানান, ৫-৬ মাস আগে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে অবস্থিত ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং মলে বৈশাখী টেইলার্স নামে একটি টেইলার দোকানে জামা বানাতে দেয় রিশা। ওই সময় তার মোবাইল নম্বরটিও দেয়া হয়। এরপর থেকে ওই টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ওবায়দুল তার মেয়েকে প্রায়ই ফোনে উত্ত্যক্ত করত। পরে বাধ্য হয়ে ফোনের ওই সিমটিও বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রায়ই মেয়েকে বিরক্ত করত। স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকত।
রিশার স্কুলের শিক্ষক শরীফুল ইসলাম জানান, রিশা স্কুলে সবসময় হাসিখুশি থাকতো। মেধাবী রিশা খুবই চঞ্চল প্রকৃতির ছিল।
কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে ফুট ওভারব্রিজের ওপর ২৪ আগস্ট বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশাকে (১৫) ছুরিকাঘাত করা হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রিশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার পেটের বাম পাশে ও বামহাতে ছুরিকাঘাত করা হয়। রিশার বাসা রাজধানীর বংশালের ১০৪ সিদ্দিক বাজারে।
ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার স্কুলছাত্রীর মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ধারায় এবং পেনাল কোডে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করে ওবায়দুল খান (২৯) নামে এক ব্যক্তিকে মামলায় আসামি করা হয়। আসামি ওবায়দুল ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের বৈশাখী টেইলার্সের কাটিং মাস্টার।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ