মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন রিচার্জের সর্বনিম্ন সীমা বাড়িয়েছে। এখন থেকে অপারেটরটির গ্রাহকদের সর্বনিম্ন ২০ টাকা রিচার্জ করতে হবে। এর আগে সর্বনিম্ন ১০ টাকা রিচার্জ করা যেত। গ্রামীণফোন গ্রাহকদের এসএমএস দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি যারা মাইজিপি অ্যাপ ব্যবহার করেন তাদেরকেও ওই অ্যাপের মাধ্যমে নোটিশ দেয়া হচ্ছে।
এতে করে গ্রাহকদের মাঝে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রাহকরা। তারা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এর তীব্র সমালোচনা করেছেন।
গ্রামীণফোন জানিয়েছে, আমাদের বিভিন্ন প্রডাক্টের সুবিধা সরলীকরণ করার অংশ হিসেবে ফ্লেক্সিলোডের সর্বনিম্ন রিচার্জ ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ২০ টাকার কমে সুলভ মূল্যে ১৪ ও ১৬ টাকার মিনিট প্যাকগুলো এবং সব রিচার্জ কার্ডগুলো আগের মতোই চালু থাকবে। ২১ এবং ২৯ টাকা রিচার্জে দুই দিন এবং তিন দিন মেয়াদে যেকোনো লোকাল নম্বরে গ্রাহকরা বিশেষ কলরেট সুবিধা পাবেন।
ক্ষুদ্ধ গ্রাহকরা কিছু কিছু অনলাইন গ্রুপে গ্রামীণফোনকে বয়কটের দাবিও জানানো হয়েছে। দীর্ঘ ৯ বছর গ্রামীণফোন ব্যবহার করেন কারওয়ান বাজারের হারুন। মাইজিপিতে নোটিশ পেয়ে তিনি বলেন, একজন গ্রাহকের ওপর এ ধরনের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া রীতিমতো শোষণ।
আমি আমার সিমে কত টাকা রিচার্জ করবো সেটা আমার সিদ্ধান্ত। কিন্তু কোম্পানি সেটা নির্ধারণ করে দেয়ার কোনো অধিকার নেই। আরেক গ্রাহক সাইম হাসান বলেন, টাকার বিনিময়ে আমরা মোবাইল অপারেটরদের সেবা নিয়ে থাকি। এখন যদি তারা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয় এই পরিমাণ টাকা ছাড়া সেবা দেয়া যাবে না তাহলে সেটা ঠিক হবে না। তাছাড়া আমার আর্থিক সক্ষমতা না-ও থাকতে পারে। এভাবে ব্যবসা করাটা অন্যায়।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হিসাবে দেশে এখন ১৮ কোটি ৪২ লাখ সক্রিয় সিম রয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের সিম সংখ্যা ৮ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার।
গ্রাহক সংখ্যা, রাজস্ব ও মুনাফার দিক দিয়ে গ্রামীণফোন বাংলাদেশের শীর্ষ অপারেটর। গত সপ্তাহে বিটিআরসি সেবার মান সন্তোষজনক নয় উল্লেখ করে গ্রামীণফোনের নতুন সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
অবশ্য গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় টেলিকম ব্র্যান্ড গ্রামীণফোন বিটিআরসি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা আইটিইউ’র সেবার মানদণ্ড অনুসরণ করার পাশাপাশি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মানদণ্ড থেকেও এগিয়ে। ধারাবাহিকভাবে নেটওয়ার্ক ও সেবার মানোন্নয়নে তারা বিটিআরসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া নিলামেও গ্রামীণফোন সর্বোচ্চ অনুমোদিত তরঙ্গ অধিগ্রহণ করেছে। এমতাবস্থায় অপ্রত্যাশিত এ চিঠি ও নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে আমরা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছি। আমরা মনে করি, আমাদের সম্ভাব্য গ্রাহকদের স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনাই হবে এ সমস্যা সমাধানের সর্বোত্তম উপায়।
বাংলা৭১নিউজ/এবি