চরাঞ্চলের মানুষের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সময় হাতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প। কিন্তু তারপরও পরিবর্তন হয়নি তাদের ভাগ্য। ব্যতিক্রম নয় রাজবাড়ী সদরের মিজানপুরের চরাঞ্চলবাসী। এখনো প্রায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা।
জানা যায়, মিজানপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত পদ্মার দুর্গম চর মৌকুড়ী, কাঠুরিয়া ও আম্বারিয়া। এসব চরে বাস করে শতাধিক পরিবার। মূলত ফসল উৎপাদন আর মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মার পানি কমার সঙ্গে এসব চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। এতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। কিন্তু নদী ভাঙন রোধে নেওয়া হয়নি প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ। তাই আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীনের শঙ্কায় দিন পার করছেন চরাঞ্চলবাসী।
চরের মোহন খাঁ, রশিদ মোল্লা, শাজাহান, তালেব ব্যাপারি, সামাদ ব্যাপারি অভিযোগ করে বলেন, কেউ তাদের দেখতে বা খোঁজ খবর নিতে যান না। এখন নদী ভেঙে তাদের ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে তাদের বসতবাড়িও একসময় নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। পাশাপাশি শহরের দিকে যেভাবে নদী শাসনের কাজ হচ্ছে সেভাবে চরের প্রান্তেও হলে তাদের জমি রক্ষা পেতো বলে মনে করেন তারা। তাই চরে শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি নদী শাসনের অনুরোধ জানান তারা।
তারা আরও বলেন, চরে চলাচলের জন্য কোনো রাস্তা নেই। জেলা শহরের সঙ্গে চরাঞ্চলবাসীর যোগাযোগের একমাত্র বাহন নৌকা। নেই পড়াশুনার জন্য স্কুল এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা। তাই জরুরি রোগী বহনের সময় সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। আর সামান্য প্রয়োজনেই ঝুঁকি নিয়ে পারি দিতে হয় উত্তাল পদ্মা।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমি মো. সায়েফ জানান, মিজানপুরের দুর্গম চরের মানুষের জন্য বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ওই চরাঞ্চলে ২৭টি সোলার প্যানেল এবং বন্যার সময় নৌকায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে এসব চরে দ্রুত স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, উপজেলার অন্যান্য বাসিন্দারা যে সুবিধা পায় চরবাসীকেও সে ধরনের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা রয়েছে। এছাড়া নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
বাংলা৭১নিউজ/জিকে