বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্র এখন আর রাষ্ট্র নেই। রাষ্ট্র এখন পুরোপুরিভাবে একটা যন্ত্রণা, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নের কারখানা হয়ে গেছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তখন সফল হতে পারে, যখন এটার তিনটা স্তম্ভই কাজ করতে পারে। যেখানে আজ তিনটা স্তম্ভই তারা (বর্তমান সরকার) দখল করে নিয়েছে। যাকে আমি বলি তারা বাংলাদেশের আত্মাটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা যে আত্মাটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি, কাজ করেছি, লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি আমাদের সে আত্মা বিনষ্ট করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আজ অনেকে বলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। আমি তো বলি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে কি নেই তা তো জানি না, কিন্তু যারা বিচারক তারাই সেই স্বাধীনতাটাকে ধ্বংস করছে বর্তমানে। বড় বড় পত্রিকার এডিটর চ্যানেলের এডিটর তারা আজ কী ভূমিকা পালন করছে… এখানে অনেক সাংবাদিক উপস্থিত আছেন, তারা আমাদের থেকে কম জানেন না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কয়েকদিন আগে ঈশ্বরগঞ্জে ৩০ বছর আগের মামলায় ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাবেক এমপি হাবিবকে ৭০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সারা দেশে বিচারের নামে চলছে অবিচার। আর এ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতিকে রক্ষা করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন, তারেক রহমান নির্বাসিত থেকেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সবাই মিলে আসুন এই দানবীয় সরকারকে বিদায় করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করি।
আওয়ামী লীগের বিরোধিতা এখন আইনিভাবে অপরাধ
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে এখন যেটা দাঁড়িয়েছে যে, সরকার একটা নির্দিষ্ট বয়ান হাজির করছে, তার বিরুদ্ধে গেলে সেটা আইনিভাবে একটা অপরাধ। আওয়ামী লীগের বিরোধিতা এখন আইনিভাবে অপরাধ, সেটা কিন্তু সাইবার সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতির মুখোমুখি।
তিনি বলেন, এখন ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমরা যখন লড়ছি, তখন আমাদের ন্যায্যতার ভিত্তিটা কী? আমাদের ন্যায্যতার ভিত্তি হচ্ছে আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরি করতে পারছি না এবং সেখানে বিচার বিভাগকে তার সর্বোচ্চ স্বাধীনতার জায়গায় এবং গণমাধ্যমকে তার সর্বোচ্চ স্বাধীনতার জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কর্মসূচি নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। আমরা যত বেশি এই কর্মসূচিকে মানুষের সামনে হাজির রাখতে পারব, যত বেশি এই কর্মসূচির প্রতি আমাদের যে অঙ্গীকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব, তত মানুষের সামনে ওই স্বপ্নটা তৈরি হবে, যে স্বপ্নকে আদায় করার জন্য, বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য মানুষ একটা মরিয়া লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপি নেতা অধ্যাপক হাসান মুর্শেদ খান, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ