টানা দ্বিতীয় মাসে গ্যাস উত্তোলন বাড়তে চলেছে রাশিয়ার। আগস্টের পর সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধেও গ্যাস উৎপাদন বেড়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়াত্ত গ্যাস কোম্পানি গ্যাজপ্রমের। কিন্তু এত গ্যাস যাচ্ছে কোথায়? মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লমবার্গের খবর অনুসারে, ইউরোপীয় বাজারে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ ক্রমাগত কমলেও চীনে রপ্তানি বেড়েই চলেছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত তথ্যমতে, এ মাসের ১ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত দৈনিক ৮৪ কোটি ৭০ লাখ ঘনমিটার গ্যাস উত্তোলন করেছে রাশিয়া, যা গত আগস্টের তুলনায় ২ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। চলতি বছরে এ পর্যন্ত দেশটির মোট গ্যাস উৎপাদন ৩০ হাজার ৮০ কোটি ঘনমিটার ছাড়িয়েছে। তবে এটি গত বছর একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৬ শতাংশ কম।
রাশিয়ার গ্যাসের অন্যতম প্রধান ক্রেতা ইউরোপ। মহাদেশটিতে প্রতি বছর যে পরিমাণ গ্যাসের দরকার হয়, তার এক-তৃতীয়াংশই সরবরাহ করতো রাশিয়া। তবে ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপ কিয়েভের পক্ষ নেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয় মস্কো। রুশ জ্বালানিতে নানা বিধিনিষেধ দিয়েছে ইউরোপও।
চলতি মাসের শুরুর দিকে নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে ইউরোপীয়দের ওপর সবশেষ আঘাত হানে রাশিয়া। এটি কবে নাগাদ ফের চালু হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর বাইরে দৈনিক ১৭ কোটি ৩০ লাখ ঘনমিটার গ্যাস রপ্তানি করেছে গ্যাজপ্রম। এটি গত আগস্টের তুলনায় ২২ শতাংশ কম। আর চলতি বছরের শুরুর থেকে সংস্থাটি প্রধান বিদেশি ক্রেতাদের কাছে গ্যাস সরবরাহ করেছে ৮ হাজার ৪৮০ কোটি ঘনমিটার, যা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৩৯ শতাংশ কম।
রাশিয়া থেকে ইউরোপে প্রায় সব প্রধান গ্যাস-পাইপলাইন বন্ধ রয়েছে। ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে সরবরাহ বন্ধ। হাঙ্গেরি ও সার্বিয়াতে সরবরাহ করা হচ্ছে তুর্কস্ট্রিম পাইপলাইনের সাহায্যে, যেটি গেছে রাশিয়া থেকে তুরস্ক পর্যন্ত।
গ্যাজপ্রম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাওয়ার অব সাইবেরিয়া লিঙ্কের মাধ্যমে চীনে গ্যাস সরবরাহ নিয়মিতই চুক্তিভিত্তিক পরিমাণকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এতে দৈনিক সরবরাহের নতুন রেকর্ড হয়েছে গত ১০ সেপ্টেম্বর। রাশিয়া থেকে চীনে এ বছর দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ কোটি ঘনমিটার গ্যাস রপ্তানি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২১ সালে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪০ কোটি ঘনমিটার।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ