বাংলা৭১নিউজ,(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ করোনা সন্দেহভাজন প্রায় ৫২ জনের নমুনা হারিয়ে গেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাব থেকে। সোমবার বিষয়টি জানাজানি হলে স্বাস্থ্য বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার করোনা সন্দেহভাজন ৫২ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য গত ১২ জুলাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়।
আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯ দিনেও ফল আসেনি।
তবে গত ২০ জুলাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সায়েরা খান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন নমুনাগুলো হারিয়ে গেছে। এ ঘটনা জানার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমদ শিমুল সরাসরি রাজশাহী মেডিকেল কলেজে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি নমুনা হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা সন্দেহভাজন বিবেচনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ গত ৮ ও ১১ জুলাই দুদিনে থানা পুলিশের একজন পরিদর্শকসহ আট পুলিশ সদস্য, এক ইউপি চেয়ারম্যান ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৫২ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন।
এসব নমুনা গত ১২ জুলাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের আরটিপিসিআর ল্যাবে হস্তান্তর করা হয় পরীক্ষার জন্য। কিন্তু গত ৯ দিনেও এসব নমুনার ফল না পাওয়ায় গত ২০ জুলাই শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. সায়েরা খান নিজেই যোগাযোগ করেন রামেক ল্যাবের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।
সেখান থেকে তাকে জানানো হয়, শিবগঞ্জের ৫২টি নমুনা পাওয়া যাচ্ছে না। এসব নমুনা হারিয়ে গেছে।
বিষয়টি নিয়ে ল্যাবসংশ্লিষ্টরা জানান, শিবগঞ্জের ৫২টি নমুনা বাতিল হয়েছে। পরীক্ষা ছাড়াই এতগুলো নমুনা কীভাবে বাতিল হতে পারে, সে বিষয়ে লিখিতভাবে জানাতে বলেন তিনি।
এদিকে জানা গেছে, ৫২টি নমুনা হারিয়ে যাওয়ায় পুনরায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে রামেক ল্যাবে পাঠাতে বলা হয়েছে মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের পক্ষ থেকে। ফলে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. সায়েরা খান বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাব থেকে পুনরায় ওই সব ব্যক্তির নমুনা বিনামূল্যে সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠাতে বলা হয়েছে। কিন্তু যাদের নমুনা হারিয়েছে, তাদের সেভাবে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
নমুনা দেয়ার পর ফলের জন্য ৯ দিন অপেক্ষার পর তারা ফল না পেয়ে যে যার মতো করে নিজ নিজ পেশায় ও কাজে চলে গেছেন।
এ সময়ে এভাবে তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব কিনা ভেবে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি জটিল বলে মনে করেন তিনি।
নমুনা হারানোর বিষয়টি সরাসরি স্বীকার না করলেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. সাবেরা গুলনাহার বলেন, যে কোনো কারণেই হোক শিবগঞ্জের ৫২টি নমুনার ফল পাওয়া যায়নি।
আমরা ওইসব নমুনা বাতিল বলে ধরে নিয়েছি। পরীক্ষা ছাড়াই নমুনা কীভাবে বাতিল ঘোষণা করা হবে– এ বিষয়টি সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
নমুনা হারিয়ে যাওয়ায় করোনা পরীক্ষা নিয়ে অবহেলার বিষয়টি সামনে এসেছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগী মানুষ।
বাংলা৭১নিউজ/এসআর