গত ৩রা মে ভারতীয় শ্রমিকদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের মধ্যে তারা তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়াতে না পারায় এবং এ কারণে দেশে পরিবারের কাছে ফিরতে না পারার কারণেই তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।এর আগে গত চৌঠা মেও এ সকল শ্রমিকেরা ভারতে চলে যাওয়াসহ বকেয়া মজুরি প্রদাণ ও মানসম্মত খাবারের দাবীতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
এদিকে এ পরিস্থিতিতে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টদেরকে নিয়ে জরুরী বৈঠক করছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এই রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদেশী রয়েছেন ১৮০২ জন। এরমধ্যে চায়না ২১ জন এবং ১৩৪৪ জন ভারতীয় রয়েছেন।
উল্লেখ্য, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার রামপালে অবস্থিত একটি প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। রামপালে ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড, ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে।বিদ্যুৎ প্রকল্পটি নির্মিত হবে সুন্দরবনের থেকে ১৪ কিলোমিটার উত্তরে। সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে পশুর নদীর তীর ঘেঁষে এই প্রকল্পে ১৮৩৪ একর জমির সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০১০ সালে জমি অধিগ্রহণ করে বালু ভরাটের মাধ্যমে নির্মানের কাজ শুরু করা হয়েছে।
২০১০ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জাতীয় তাপবিদ্যুৎ কর্পোরেশন (এনটিপিসি) এর মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে সংস্থা দুটি ২০১৬ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন করতে সম্মত হয়।২০১২ সালের ২৯ শে জানুয়ারী বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এনটিপিসি’র সাথে একটি বিদ্যুৎ কেন্দর নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে।
যৌথ উদ্যোগে তৈরি সংস্থা বাংলাদেশ ভারত বন্ধুত্ব শক্তি সংস্থা (বিআইএফপিসি) নামে পরিচিত।বিটিআরসি এবং এনটিপিসি ৫০:৫০ অংশিদারীত্বের ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে।এনটিপিসি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা করবে। বাংলাদেশ ও ভারত সমানভাবে এই প্রকল্পের মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার করবে। বাকি মূলধন, যা ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য হতে পারে, তা এনটিপিসি থেকে সাহায্যের মাধ্যমে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্র মতে, যৌথ উদ্যোগ কোম্পানীটি একটি ১৫ বছর কর ছাড়ের সুবিধা ভোগ করবে।
কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য এই প্রকল্প পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে।২০১৬ সালে ইউনেস্কোর একটি প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়পত্রে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নকে সন্দেহজনক বলে অভিহিত করে, এবং প্রকল্পটিকে বন্ধ করার জন্য বলা হয়।
১ আগস্ট ২০১৩ সালে বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তর (ডোই) বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ অনুমোদন করে, কিন্তু তারপর বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর তার অবস্থান পরিবর্তিত করে এবং প্রকল্পটি নির্মানের জন্য ৫০ টি শর্ত জারি করে।কিন্তু সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থান মৌলিক পূর্বনির্ধারিত একটিকে শর্ত লঙ্ঘন করে।
সাধারনত এই ধরনের প্রকল্পগুলো পরিবেশগত সংবেদনশীল এলাকার থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বের বাইরে নির্মান করতে হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এবি