বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করে ‘জাতীয় কমিটি’র কর্মসূচিতে পুলিশের হামলার সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন তুলেছেন, সব মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে রামপালেই কেন ওই প্রকল্প করতে হবে?
ভারতের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সেখানে অঙ্গীকার করে আসার কারণে প্রকল্পটি করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার ঢাকায় এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) বারবার জোর গলায় বলছে, রামপালেই বিদ্যুৎকেন্দ্র হতেই হবে। কেনরে ভাই? এত কিসের গরদ? গরদ কি শুধু বিদ্যুৎ দেবেন সেজন্য, নাকি কোথাও দাসখত লিখে এসেছেন? তা না হলে রামপালেই কেন বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে মরিয়া হয়ে নেমেছেন?’
এ সময় প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসা ‘তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটি’র কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটার সমালোচনা করেন বিএনপির এই নেতা।
রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের হলরুমে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলমের কারামুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ‘ঢাকাস্থ কিশোরগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম’ এর আয়োজন করে।
বিভিন্ন সংগঠন-সংস্থা-রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা সত্ত্বে সুন্দরবনের অদূরে রামপালে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প করতে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে সরকার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই অত্যাধুনিকভাবে এ প্রকল্প করা হবে। এতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। তবে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিপন্ন হবে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। সাম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে অংশ নিয়ে প্রকল্প নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেখানে আশ্বস্ত করেছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফলে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না।
নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী সহিংসতা চান না। তিনি স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চান বলেই নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু ভালো কথা তারা (আওয়ামী লীগ) শুনে না।’
‘তারা বাঘের পিঠে উঠে বসেছে, নামার তো কোনো উপায় নেই। সেই কারণে তারা কোনো কিছু শুনতে চান না। শেষ দিন পর্যন্ত তারা নির্যাতন চালিয়ে যাবে। এছাড়া তাদের আর কোনো বিকল্প নেই। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের শক্তি দিয়ে এই শক্তিকে পরাজিত করতে হবে’, বলেন বিএনপি মহাসচিব।
রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আলোচনার বিকল্প নেই জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্র মানেই আলাপ-আলোচনা, গণতন্ত্র মানেই সংলাপ। আলোচনার কথা আমরা সবসময় বলব। কিন্তু সেই অধিকার যখন হরণ করা হবে তখন আন্দোলন করতে হবে সোচ্চার হতে হবে।’
এ সময় নিজেদের ঝগড়া-বিবাদ বন্ধ করে দলকে শক্তিশালী করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ঘরের মধ্যে স্লোগান দিলে হবে না। তুমুল গণআন্দোলনের মাধ্যমে রাজপথ দখলে নিতে হবে। তাহলেই দাবি আদায় হবে, গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালের সভাপতিত্বে এবং আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, আবদুস সালাম প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ