বাংলা৭১নিউজ, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ী সদর থানা এলাকায় ইদানিং অপরাধ তৎপরতা মারত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। পুলিশের গ্রেফতার বানিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে এলাকাবাসী।
যে হারে অপরাধ ঘটছে থানায় সে হারে মামলা নেয়া হচ্ছে না। অপরাধীদের গ্রেফতারের সংখ্যা খুবই কম। ফলে বড় অপরাধীরা ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে। খানখানাপুর, পাঁচুরিয়া, বরাট, দাদশী, সুলতানপুর, বসন্তপুর, শহীদ ওহাবপুর, মূলঘর, বানীবহ, আলীপুর, রামকান্তপুর, মিজানপুর, খানগঞ্জ, চন্দনী ও রাজবাড়ী পৌরসভা এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষন, অপহরন, চাঁদাবাজি, প্রভৃতি অপরাধ বৃদ্ধি সহ মাদক ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজবাড়ী পৌর সভার সামনে হিরক ম্যানশনের দোতলায় রূপালী ব্যাংক সংলগ্ন সরকার কর্তৃক স্বীকৃত আরবান ঋণদান ও সঞ্চয় সমিতি সাধারন জনগনের টাকা আত্মসাধ করায় অপরাধীদের সনাক্ত করে পুলিশ মোটা অংকের বিনিময়ে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে ক্ষমতাশালীদের অর্থ উদ্ধার করলেও সাধারন জনগনের অর্থের কোন সমাধান করেনি। মাদকব্যবসায়ীদের বাধা দিতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছে।
গোয়ালন্দ মোড় মিল মাঠ এলাকায় দিবারাতে প্রকাশ্যে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন সেবন ও বিক্রয় হচ্ছে। ইতিপূর্বে হাতেনাতে কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও আইনী তৎপরতা না থাকায় পুনরায় মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা চলছে রমরমা। পার্টি অফিসের নামে গোপনীয় কক্ষে নিরাপদে চলে মাদক সেবন। সুলতানপুরে চোরাই মটরসাইকেলের হাট বসে কতিপয় সরকারী দলের প্রভাবশীদের ছত্রছায়ায়।
বসন্তপুর রঘুনাথপুর গ্রামের হাফেজ আবুল হাসানাত জানান, তিনি অতিশয় গরীব লোক। থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরও পুলিশ তদন্তে আসছে না। তাকে মারধর করে জোরপূর্বক তার বাড়িতে প্রতিপক্ষের লোকজন পেশীশক্তির বলে ঘর তৈরী করেছে। বসন্তপুর বাজারে গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ই-পোষ্ট সেন্টারে ডাকাতি হয়। থানায় আনিছুর রহমান অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ মামলা নেয়নি। ঢাকা-বেনাপোলগামী সোহাগ পরিবহনের একটি বাস চর খানখানাপুর এলাকায় ডাকাতে কবলে পড়ে। বাসের যাত্রীরা সর্বশান্ত হওয়ার পর পুলিশ ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার মিজান ফকির (২৪) কে গ্রেফতার করিলেও কোন মালামাল উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত ১৫ জুন দুপুরে রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা এলাকায় শাহীন মিয়ার বাড়ীতে গ্রীল ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে দুর্ধর্ষ চুরি হয়। থানায় এজাহার দেওয়া হলেও পুলিশ তদন্তে যায়নি। খানাখানপুর মিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ফ্যান চুরি হয়। থানায় এজাহারের পরিবর্তে জিডি নেওয়া হলেও পুলিশ মালামাল উদ্ধারের কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। খানাখানাপুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ইউসুফ হাসান বাজার ব্যবসায়ীদের আটক করে মোটা অংকের গ্রেফতার বানিজ্য করে।
খানখানাপুর বাজার ব্যবসায়ীর সভাপতি মোঃ হবিবর রহমান হবি সহ অন্যান্য ভুক্তভোগীরা রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম তাৎক্ষনিকভাবে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে তদন্তের নির্দেশ দেন। রাজবাড়ী সদর সার্কেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্তে সত্যতা পেলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারনে প্রতিবেদন প্রদানে বিলম্ব করছে।
রাজবাড়ী থানার ওসি মোহাম্মাদ আবুল বাসার মিয়া থানা এলাকায় অপরাধ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে শনিবার (১৭ জুন) সকাল ১০.৫৩ মিনিটে তার সরকারী নাম্বারে মতামত জানতে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস