ঈদের লম্বা ছুটিতে দর্শনার্থীদের ভিড়ে জমজমাট রাঙামাটি। শহরের যান্ত্রিক কোলাহল ভুলে প্রকৃতির কোলে নিজেদের সঁপে দিতে হ্রদ-পাহাড়ের এই শহরে ছুটে এসেছেন হাজারো পর্যটক।
ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতু পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল থেকে দলে দলে পর্যটকরা ভ্রমণ করছেন বিনোদনের জনপ্রিয় এই স্থানে। কেউ আসছেন পরিবার নিয়ে, কেউ দম্পতি, আবার কেউ আসছেন বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে। শুধু ঝুলন্ত সেতুতেই তাদের ভ্রমণ সীমাবদ্ধ নয়। নৌঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে কাপ্তাই হ্রদে নৌ বিহারও করছেন পর্যটকরা। হ্রদ-পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করে যান্ত্রিক জীবনের এক গেঁয়েমি দূর করছেন তারা।
চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আমিনুল আমিন বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে রাঙামাটিতে বেড়াতে এসেছি। এর আগেও এসেছিলাম, রাঙামাটির রুপ দেখে আমরা মুগ্ধ, তাই বারবার আসা।
আরেক পর্যটক দম্পতি বিধান দে ও সেতু দে বলেন, আমরা গতকাল পরিবার নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যেই আরণ্যক, পলওয়েল পার্ক এই জায়গাগুলো ঘোরা শেষ, এবার কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণে যাচ্ছি। হ্রদের সৌন্দর্য আমাদের সত্যিই বিমোহিত করেছে।
পর্যটন নৌযান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, গতকাল ঈদের দিন পর্যটকদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও, আজ থেকে পর্যটক সমাগম বেড়েছে। সকাল থেকে আমাদের অনেকগুলো বোট পর্যটকদের নিয়ে সুবলংসহ অন্যান্য স্পটগুলোর উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। আশা করছি আগামীকাল থেকে পর্যটকদের উপস্থিতি আরও বাড়বে।
ঝুলন্ত সেতুর পাশপাশি পলওয়েল পার্কসহ অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোতেও রয়েছে পর্যটকের সরব পদচারণা। পর্যটকরা পার্কের ভেতরে থাকা বিভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। শিশুরা টয় ট্রেন ও দোলনাতে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পলওয়েল পার্কের মিনি ঝুলন্ত সেতুতেও কেউ কেউ হেঁটে বেড়াচ্ছেন। হ্রদের শান্ত জল ও সবুজ প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত পর্যটকরা।
এদিকে শহরের অধিকাংশ হোটেল-মোটেলে বুকিং বেড়েছে। হোটেল মতি মহলের ব্যবস্থাপক চন্দন কুমার বর্মন বলেন, ঈদের ছুটিতে বেশ পর্যটক হবে সেটি আমরা আগেই ধারণা করেছিলাম। ঈদের আগে আমাদের প্রায় ৩০ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গিয়েছিল। এই মুহূর্তে আগামী শুক্রবারের জন্য আরও নতুন বুকিং হচ্ছে।
রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, আজ প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার পর্যটক ঝুলন্ত সেতুতে ভ্রমণ করেছেন। এ ছাড়া অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। বর্তমানে আমাদের হোটেল-মোটেলগুলোতে ৬০ শতাংশ বুকিং রয়েছে। আাগামী ৩ তারিখ থেকে শতভাগ বুকিং রয়েছে। আশা করছি এই মৌসুমে আমাদের বেশ ভালো ব্যবসা হবে।
এবারের ঈদের ছুটিতে প্রায় ২০ হাজার পর্যটক রাঙামাটিতে ভ্রমণ করবেন বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে