শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য ৯৪০ প্রশ্ন ভরিতে আরও ১৮৭৮ টাকা কমলো সোনার দাম সব প্রার্থী আমাদের কাছে সমান: ইসি আলমগীর টোল আদায়ে দুর্নীতি, দুদকের হস্তক্ষেপে ইজারা বাতিল রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে আছে ইউরোপ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : কাদের এপ্রিলে নির্যাতনের শিকার ১৯৩ নারী-শিশুকন্যা ৯ মে পর্যন্ত চলবে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মৃত ব্যক্তিদের জাল সনদ: মিল্টন সমাদ্দারের ৩ দিনের রিমান্ড গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয়, উন্মুক্ত : তথ্য প্রতিমন্ত্রী যাত্রীবাহী বাস থেকে ৭টি স্বর্ণের বারসহ চোরকারবারি আটক আমন মৌসুম থেকেই চাল ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধ করা হবে : খাদ্যমন্ত্রী টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১০ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণের অভিযোগ আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে শনিবার থেকে খোলা স্কুল-কলেজ: শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইসলামী ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা জমা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো ৪৯ টাকা শেয়ার ছাড়বে রূপালী ব্যাংক নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

রাখাইন সমস্যা নিরসনে জরুরি হস্তক্ষেপ চাইলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ৭৪ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মানবিক সমস্যা নিরসনে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এখানে সে চিঠি দেওয়া হলো:
নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি ও সদস্যবৃন্দ,
আপনারা অবগত আছেন যে, মিয়ানমারের রাখাইন এলাকায় মানবীয় ট্র্যাজেডি ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ একটি ভয়ংকর রূপ নিয়েছে, যে বিষয়ে অবিলম্বে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আক্রমণে শত শত রোহিঙ্গা জনগণ নিহত হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। বহু গ্রাম সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে, বেসামরিক মানুষকে নির্বিচারে আটক করা হচ্ছে এবং শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। আতঙ্কের বিষয়, মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলোকে এই এলাকায় প্রায় একবারেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না, যার ফলে দারিদ্র্যপীড়িত এই এলাকায় মানবিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। স্থানীয় সরকারি সূত্রগুলোর হিসাবে, গত ১২ দিনে এক লক্ষ কুড়ি হাজারেরও বেশি মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। মৃত্যুর মুখে নারী, পুরুষ ও শিশুদের এই ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ও অভিবাসন থেকে সৃষ্ট পরিস্থিতি প্রতিদিন আরও খারাপ হচ্ছে।
গত বছরের শেষে পরিস্থিতির বেশ অবনতি ঘটলে বেশ কয়েকজন নোবেল লরিয়েট ও বিশ্বের বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দসহ আমি এ বিষয়ে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে আপনাদের নিকট যৌথভাবে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। আপনাদের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এবার পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে নিরীহ নাগরিকদের ওপর অত্যাচার বন্ধ এবং রাখাইন এলাকায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমি আপনাদের নিকট আবারও অনুরোধ জানাচ্ছি।
আমি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে সম্ভাব্য সকল উপায়ে জরুরিভাবে হস্তক্ষেপের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমি আপনাদের কাছে জরুরি পদক্ষেপের অনুরোধ জানাচ্ছি যাতে নিরীহ বেসামরিক মানুষদের ওপর নির্বিচার সামরিক আক্রমণ বন্ধ হয়, যার কারণে এই অসহায় মানুষগুলোকে নিজ দেশ ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গিয়ে রাষ্ট্রহীন মানুষে পরিণত হতে না হয়।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার ২০১৬ সালে যে ‘রাখাইন অ্যাডভাইজরি কমিশন’ গঠন করেছিল, তার সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকারকে উদ্বুদ্ধ করতে আপনারা যেন জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, সে জন্য আমি বিশেষভাবে আপনাদের অনুরোধ জানাচ্ছি। কফি আনানের সভাপতিত্বে গঠিত এই কমিশন যার অধিকাংশ সদস্যই ছিলেন মিয়ানমারের নাগরিক—রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান, অবাধ চলাচলের সুযোগ, আইনের চোখে সমান অধিকার, রোহিঙ্গাদের স্থানীয় প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, যার অভাবে স্থানীয় মুসলিমরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল এবং নিজ ভূমিতে ফিরে আসা মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সহায়তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছিল।
দশকের পর দশক ধরে চলা নির্যাতন র্যাডিকালাইজেশনের জন্ম দিচ্ছে, যা ‘রাখাইন অ্যাডভাইজরি কমিশন’ যথাযথই উপলব্ধি করেছে। এই ভীতি থেকে র্যাডিকেলদের দ্বারা মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ একটি বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। ফলে এই এলাকায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠনশীল উদ্যোগ নেওয়া না হলে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকবে, যা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এই ক্রমাগত সহিংসতা বন্ধ করতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কর্মপন্থায় সাহসী পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। মিয়ানমার সরকারকে জানিয়ে দেওয়া দরকার যে, সে দেশের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও অর্থায়ন রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমার সরকারের নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক পরিবর্তনের ওপর নির্ভরশীল। মিয়ানমার সরকারকে জানিয়ে দেওয়া দরকার যে, অপপ্রচার, ঘৃণা ও সহিংসতার উসকানি বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে, নিবর্তনমূলক বিভিন্ন নীতি ও আইন বাতিল করতে হবে এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এই এলাকায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবীয় সমস্যা সমাধানে তার ভূমিকা পালন করেছে, এটা দেখার জন্য বিশ্ববাসী অপেক্ষা করছে।
আপনাদের বিশ্বস্ত,
মুহাম্মদ ইউনূস

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com