বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমারে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানের মধ্যে অন্তত ১০টি এলাকায় বাড়িঘর পোড়ার চিহ্ন মিলেছে বলে দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
দমন-পীড়নের মুখে পালাতে থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি জন তিন দিনেই বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
মিয়ানমারে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানিতে উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রও।
গত ২৪ অগাস্ট রাতে রাখাইনে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর ওই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের মুখে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকতে সীমান্তে ঠাঁই নিয়েছে; এলাকা ছাড়ছে রাখাইনরাও।
সহিংসতার মধ্যে গুলির জখম ও আগুনের ক্ষত নিয়ে অনেকে বাংলাদেশে এসে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন।
এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ উপগ্রহ চিত্র দেখে রাখাইন প্রদেশে পোড়ার ঘরের চিহ্ন দেখার কথা জানাল।
এইচআরডাব্লিওর এশিয়া বিষয়ক উপ-পরিচালক ফিল রবার্টসন বলেছেন, নতুন উপগ্রহ চিত্র খুবই উদ্বেগের এবং রাখাইন প্রদেশে যা হচ্ছে, তা থামাতে জাতিসংঘ ও দাতা সংস্থাগুলোর ভূমিকা নেওয়ার দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে।
মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, গত ২৫ অগাস্ট দুপুরে জে দি পেইন ও কোয়ে তান কুক এলাকায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ২৮ অগাস্ট মংডু শহর এবং মংডুর বিভিন্ন গ্রামে আরও আটটি এলাকায়ও আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
উপগ্রহ চিত্রে পাওয়া ঘটনাস্থল এবং গণমাধ্যমে আসা প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনার মিল পেয়েছে এইচআরডাব্লিও।
রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানের পক্ষে পুলিশ ও সেনা চৌকিতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির হামলা মোকাবেলাকে যুক্তি দেখাচ্ছে মিয়ানমার সরকার। তবে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা নির্বিচারে নির্যাতনের অভিযোগ তুলছেন।
রবার্টসন বলেন, “বিদ্রোহীদের উপর সব দায় চাপিয়ে মিয়ানমার সরকার নির্যাতনের পথ থেকে সরে আসতে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত এড়াতে পারে না।”
এলিস ওয়েলস জঙ্গি ও সন্ত্রাসী দমনে বাংলাদেশের পদক্ষেপের প্রশংসা করে এক্ষেত্রে সহযোগিতা দিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এদিকে ইউরোপে বসবাসরত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের জনগোষ্ঠীর মানুষদের রক্ষায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
দি ইউরোপিয়ান রোহিঙ্গা কাউন্সিল ও রোহিঙ্গা কমিউনিটি আয়ারল্যান্ড পাঠানো এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানিয়েছে।
সংগঠন দুটি রোহিঙ্গাদের দমন-পীড়নের হাত থেকে রক্ষায় মিয়ানমার সরকারকে চাপ দিতে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আসিয়ান জোট এবং বাংলাদেশ, ভারত ও চীনের সক্রিয়তা প্রত্যাশা করেছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস