বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: সুইডিশ একাডেমি, যারা সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার নির্ধারণ করে, এতো বড়ো সঙ্কটে আর কখনো পড়েনি। নজিরবিহীন এই সংকটের মূলে রয়েছেন সুইডিশ একাডেমি বোর্ডের একজন নারী সদস্যের স্বামী।
গত বছরের নভেম্বর মাসে ফরাসী একজন ফটোগ্রাফার জ্যঁ ক্লদ আর্নল্টের বিরুদ্ধে ১৮ জন নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। অভিযুক্ত এই ফটোগ্রাফার সুইডিশ একাডেমির বোর্ডের একজন সদস্য, কবি ও লেখক কাটারিনা ফ্রস্টেনসনের স্বামী। সুইডিশ একাডেমির আর্থিক সহযোগিতায় একটি সাংস্কৃতিক প্রকল্প পরিচালনা করতেন তিনি।
বলা হচ্ছে, কথিত এসব ঘটনার বেশ কয়েকটি ঘটেছে এই একাডেমিরই বিভিন্ন ভবনে।
অভিযোগ ওঠার পর সুইডিশ একাডেমি মিজ ফ্রস্টেনসনকে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেয়। এনিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে সুইডিশ একাডেমি। ফলে তাকে সরানো যায়নি।
পরে এ নিয়ে ক্ষোভ-প্রতিবাদ বাড়তে থাকলে কাটারিনা ফ্রস্টেনসন নিজে এবং একাডেমির প্রধানসহ মোট ছয়জন পদত্যাগ করেন।
সুইডিশ একাডেমিতে সদস্যরা আজীবনের জন্যে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। কোনো কিছুতে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করতে পারলেও তাদের পদত্যাগের বিধান নেই। কিন্তু এখন এই নিয়ম পরিবর্তনের বিষয়েও কথাবার্তা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে সুইডিশ একাডেমি তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, সংস্থাটিকে সক্রিয় করে তুলতে এবং এর প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে তারা এবছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তারা বলছে, এবছরের পুরস্কার আগামী বছরের বিজয়ীর সাথে ঘোষণা করা হবে। বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ছয় বছর ছাড়া মাত্র একটি বছরে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়নি। সেটি ছিল ১৯৩৫ সালে যেবছর যোগ্য বিজয়ী খুঁজে পায়নি একাডেমি।
এবছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়া না হলেও সুইডিশ একাডেমি বলছে, অন্যান্য বিষয়ে পুরস্কার বিজয়ীদের নাম যথারীতি ঘোষণা করা হবে।
ভাষ্যকারদের অনেকেই বলছেন, এই কেলেঙ্কারিতে বিশ্বজুড়ে সুইডিশ একাডেমির ভাবমূর্তি মারাত্মক পোড় খাবে। সুইডেনের রাষ্টীয় রেডিও এসআর-এর মাতিয়াস বার্গকে উদ্ধৃত করে লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকা লিখছে- বিশ্বের সবচেয়ে স্বনামধন্য সাহিত্য পুরষ্কার যে একাডেমি দেয়, তাদেরই বিচারবুদ্ধি এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
নোবেল ফাউন্ডেশন বোর্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, নোবেল একাডেমির প্রতি আস্থা মারাত্মক পোড় খেয়েছে। ‘এখন বলা কঠিন এত পুরো নোবেল পুরষ্কারই কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে…আস্থা ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে’।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস