কঠোর হৃদয় সত্যগ্রহণে ব্যর্থ হয়। মানসিক প্রশান্তি থেকে বঞ্চিত করে। হৃদয়ের কঠোরতা দূর করতে ইসলাম মানুষকে কিছু আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে। তা হলো—
বেশি বেশি জিকির করা : আল্লাহর জিকির ও স্মরণ মানুষের অন্তরের কঠোরতা দূর করে তাতে কোমলতা ও সজীবতা সৃষ্টি করে।
হৃদয়ের বিক্ষুব্ধতা দূর করে তাতে প্রশান্তি বয়ে আনে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা মুমিন তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা প্রশান্ত হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহর স্মরণ অন্তরগুলোকে প্রশান্ত করে। ’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ২৮)
আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি : অন্তরের কঠোরতা এক প্রকার শাস্তি ও অভিশাপ। রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্তরের কঠোরতা থেকে আল্লাহর দরবারে মুক্তি চাইতেন। তিনি দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে চারটি বিষয় থেকে মুক্তি চাই; এমন জ্ঞান, যা উপকারে আসে না; এমন অন্তর, যা (আপনার ভয়ে) ভীত নয়; এমন আত্মা, যা তৃপ্ত নয়; এমন দোয়া, যা কবুল করা হয় না। ’ (নাসায়ি, হাদিস : ৫৪৬৭)
আল্লাহর সাহায্য চাওয়া : অন্তরের কঠোরতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অন্যতম আমল হলো, আল্লাহর সাহায্য চাওয়া। আল্লাহকে ডাকলে আল্লাহ তাঁর বান্দার ডাকে অবশ্যই সাড়া দেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের রব বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয়ই যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে। ’ (সুরা মুমিন, আয়াত : ৬০)
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালোবাসা : আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-কে ভালোবাসা ঈমানের পূর্বশর্ত। যার মনে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা জাগে, তার হৃদয় কঠোর থাকতে পারে না। সে হৃদয় উর্বর হয়ে ওঠে এবং সে ইবাদতের স্বাদ পেতে শুরু করে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, তিনটি গুণ যার মধ্যে আছে, সে ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারে; ১. আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে অধিক প্রিয় হওয়া; ২. কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসা; ৩. কুফরিতে প্রত্যাবর্তনকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো অপছন্দ করা। (বুখারি, হাদিস : ১৬)
জনকল্যাণমূলক কাজ করা: অন্ন-বস্ত্রহীন মানুষের পাশে দাঁড়ালে, এতিম-দুঃখীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে অন্তরের কঠোরতা দূর হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যদি তুমি তোমার অন্তরকে নরম করতে চাও, তবে মিসকিনকে খাবার খাওয়াও এবং এতিমের মাথায় হাত বুলিয়ে দাও। ’ (সহিহুল জামে, আনিসু-সারি ফি তাখরিজি আহাদিসি ফাতহিল বারি, পৃষ্ঠা ৬২৩)
কবর জিয়ারত : কবর জিয়ারত, কবর ও কিয়ামত দিবসের আলোচনায় মানুষের অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) কবর জিয়ারতে উৎসাহী করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা কবর জিয়ারত করো। কেননা তা তোমাদের পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১২৮৫)
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ