মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৩:৩৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ডেঙ্গুতে মাকে হারিয়েছি, আর যেন কেউ মারা না যায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী চীনে হাসপাতালে ছুরি হামলায় নিহত ২, আহত ২৩ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে আইইবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে দুই পরিবর্তন সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তথ্য আদান-প্রদান করবে চসিক-সিএমপি ধান ও চালের মানে আপস করা হবে না : খাদ্যমন্ত্রী সুজানগরে বিপুল পরিমাণ টাকা ও ১০ সহযোগীসহ চেয়ারম্যান প্রার্থী আটক দানবীর আরপি সাহার অন্তর্ধান ও মির্জাপুর গণহত্যা দিবস ৬ মাস বন্ধ থাকবে কমলাপুর-টিটি পাড়া সড়কের একটি লেন প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের দুই হাত ভেঙে দিলো কিশোর গ্যাং চাল-শাকসবজি-আমসহ অনেক ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে ঝিনাইদহে হাসপাতালে নবজাতক চুরি করতে এসে ২ নারী আটক! ভিসা হয়নি বেশিরভাগ হজযাত্রীর, সময় আরও বাড়ছে আজই সিরিজ নিশ্চিত করতে পারবে বাংলাদেশ! ৮ বিভাগেই বৃষ্টির আভাস, বিদায় নিতে পারে তাপপ্রবাহ লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিলেন মোদী উপজেলা নির্বাচন সিরাজগঞ্জে গোপন বৈঠক, ৫ প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ গ্রেপ্তার ৬ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ ন্যায্যমূল্যে পণ্য মানুষের কাছে পৌঁছাতে কাজ করছে টিসিবি ঢাকায় আসছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

যে মাছ খেলে নেশা থাকে ৩৬ ঘণ্টা

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

মাছ খান না, বা ভালোবাসেন না এমন মানুষ কম। প্রিয় মাছের নাম খাদ্য তালিকায় প্রায় সবারই থাকে। নানা ধরনের মাছ পাওয়া যায় দুনিয়াজুড়ে। একেক  মাছের স্বাদ একেক রকম। তবে মাছ খেলে নেশা হয় এমন কথা অনেকেই বিশ্বাস করবেন না। সত্যিই এটি অবিশ্বাস্য! কিন্তু সত্য এই যে, এক ধরনের মাছ রয়েছে যা খেলে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা নেশার ঘোর থাকে। এবং এ সময় অদ্ভুত সব স্বপ্ন দেখবেন আপনি। 

বিস্ময়কর এই মাছের নাম সারপা সালপা। কথাটি আরবি থেকে এসেছে। যার অর্থ মতিভ্রমকারী মাছ। মাছটি দেখতে ভীষণ সুন্দর! রুপালি আশের উপর সোনালি ডোরা কাটা দাগ। দেখলে যে কেউ এর সৌন্দর্যের প্রশংসা করবেন। বিশেষ এই মাছের দেখা মিলবে ভূমধ্যসাগর এবং আটলান্টিক সাগরের উপকূলে। 

সারপা সালপা মাছ খাওয়ার পর আপনি অন্য জগতে হারিয়ে যাবেন। মাথার ভেতরে শুনতে পাবেন অদ্ভুত শব্দ। চোখে দেখবেন অকল্পনীয় এবং অলৌকিক বিষয়। যা আপনাকে বাস্তব থেকে নিয়ে যাবে কল্পনার জগতে। অর্থাৎ মাছটি খাওয়ার পর আপনার হ্যালুসিনেশন হবে।

এই মাছের নাম জড়িয়ে আছে ইতিহাসের পাতায়। রোমান সাম্রাজ্যের অধিপতিরা সারপা সালপা খেয়েই নেশায় বিভোর থাকত। পপলিনেসিয়ানরাও এই মাছ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খেয়ে নেশা করত। নেশায় তারা বুঁদ হয়ে থাকত প্রায় ৩৬ ঘণ্টা। সে সময় আমোদ-প্রমোদ বা নেশার জন্যই মূলত এই মাছ খাওয়া হতো। 

সারপা সালপা সম্পর্কে অবাক করা তথ্য পাওয়া যায় ২০০৬ সালে ক্লিনিকাল টক্সিকোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক অনুচ্ছেদ থেকে। জানা যায়, ১৯৯৪ সালে চল্লিশ বছর বয়সী এক লোক ফ্রাই করে খান সারপা সালপা মাছ। সে সময় ফ্রেঞ্চ রিভেইরায় অবকাশ যাপন করছিলেন তিনি। খাওয়ার পর তার বমি হতে থাকে এবং তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন। চোখে দেখতে থাকেন অদ্ভুত সব জিনিস। তিনি দেখেন তার চারপাশে সব উড়ছে এবং হিংস্র পশুরা শব্দ করছে। ফলে ভয় পেয়ে পালাতে চান তিনি। গাড়িতে উঠে চালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এরপর কোনো রকমে হাসপাতালে পৌঁছান ওই ব্যক্তি। ৩৬ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেন তিনি। অবাক করা ব্যাপার হলো, দুদিন হাসপাতালে থাকার পর বাসায় ফিরে তিনি সেই ৩৬ ঘণ্টার অনেক কথাই ভুলে যান। 

এরপর ২০০২ সালে ঘটে এমন আরেকটি ঘটনা। ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ সারপা সালপা রান্না করে খান। এরপরই শুরু হয় গণ্ডগোল। চোখের সামনে দেখতে পান হাজারো পাখির কিচিরমিচির এবং হাজার হাজার মানুষ জড়াজড়ি করে কাঁপছে। ভয়ে কাউকে এই ঘটনা জানাননি সেই বৃদ্ধ। ভেবেছিলেন তার মাথায় সমস্যা হয়েছে। ঠিক দুদিন পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেন তিনি। 

এই অদ্ভুত ধরনের হ্যালুসিনেশনকে বলা হয় ইকথিয়ো আলিইনো টক্সিজম। রিফ বল ফাউন্ডেশনের সমুদ্র প্রাণিবিজ্ঞানী ক্যাথেরিন জ্যাডোট বলেন, এই মাছে থাকা রাসায়নিক উপাদান স্নায়ুতন্ত্রকে সংক্রমিত করে। ফলে মতিভ্রম ঘটে। 

ভিট্রো সেলুলে ও ডেভলপমেন্টাল বায়োলজিতে ২০১২ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সারপা সালপা মূলত সামুদ্রিক শৈবাল পসাইডোনিয়া ওশেনিয়াকে খাবার হিসেবে গ্রহণ করে। ঘাসে থাকা বিষাক্ত উপাদান মাছটির শরীরে প্রবেশ করে। যে কারণে রান্না করলে এই মাছে উপাদানটি থেকে যায়। উপাদানটি সঠিকভাবে সনাক্ত করা না গেলেও ধারণা করা হয় সেটি ইন্ডোল গ্রুপভুক্ত কোনো অ্যালকলয়েড। মাছটি যে শৈবাল খেয়ে জীবন ধারণ করে সেই শৈবালে এই উপাদান বিদ্যমান। এই অ্যালকলয়েডগুলোর গঠন এলএসডি ড্রাগে থাকা রাসায়নিক কিংবা ভিন্ন আরেকটি হ্যালুসিনোজেন ডিমেথলিট্রিপথামিনের মতো।

গবেষকরা জানান, বিশেষ এই মাছের যে কোনো অংশ খেলেই যে মতিভ্রম হবে ব্যাপার এমন নয়। মাছটির শরীরের চেয়ে মাথায় ওই বিশেষ উপাদান বেশি থাকে। যে কারণে মাথা খেলে হ্যালুসিনেশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বিশেষ করে শরৎ এবং গ্রীষ্মে এই মাছ বেশি পরিমাণে পসাইডোনিয়া ওশেনিয়া খায়। – ২০১২ সালের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, যেসব মাছ শরৎকালে ধরা হয়েছে তাতে বিষের পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। আবার ২০০৬ সালের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বসন্তের শেষ কিংবা গ্রীষ্মে এই মাছ খেলে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। 

যদিও এই মাছ সম্পর্কে এখনো সব তথ্য দিতে পারেননি গবেষকরা। তাতে ভয়ের কিছু নেই। মাছটি আচমকা আপনার খাবার প্লেটে আসবে না। এ জন্য আপনাকে অর্ডার দিতে হবে। যেতে হবে আটলান্টিক মহাসাগরের পাড়ের কোনো রেস্তোরাঁয়। নেশায় মাতাল হয়ে অদ্ভুত স্বপ্ন দেখতে চাইলে একবার খেয়ে দেখতে পারেন মাছটি। তবে হ্যাঁ, আপনার উদ্ভট কর্মকাণ্ডের জন্য কিন্তু কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।  

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com