বাংলা৭১নিউজ, এ কে এম আব্দুল্লাহ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনা সদর উপজেলার মৌগাতী ইউনিয়নের বাদে বহর গ্রামের ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি চাঞ্চল্যকর এম এ হারেছ (৩৫) হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করেছে সি আই ডি পুলিশ। জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ এবং পরকীয়া প্রেমের কারণেই দুর্বৃত্তরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে হত্যা করেছে।
নেত্রকোনার সিআইডি’র এস আই প্রীতেশ তালুকদার মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় সাংবাদিকদের জানান, বাদে বহর গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ হারেছের সাথে একই গ্রামের আব্দুছ ছালামের জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল।
এ নিয়ে ছালাম সব সময় হারেছকে ঘায়েল করতে চেষ্টা করছিল। ঘটনাক্রমে হারেছের সাথে আলমগীর ওরফে আলমের স্ত্রী শিরিনের পরকীয়া প্রেমের বিষয়টি জানতে পেরে সুচতুর ছালাম আলমগীরকে ক্ষেপিয়ে তুলে। এ নিয়ে আলমগীরের সাথে তার স্ত্রী শিরিনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং তার সাথে সংসার করবে না বলে স্ত্রীকে তিন মাস পূর্বে পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ থেকে বাদে বহর পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে ছালাম গংরা হারেছকে উচিৎ শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে।
এরই অংশ হিসেবে আলমগীরকে দিয়ে তার স্ত্রীর সাথে ফোনালাফের মাধ্যমে সম্পর্ক স্বাভাবিক করণের চেষ্টা চালায় এবং আবার ঘর সংসার করার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে প্রলুব্ধ করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ছালাম গংরা ২০ জুন শিরিনকে দিয়ে সুকৌশলে হারেছকে ফোন করে রাতে তার পিত্রালয়ে আসতে বলে।
পরকীয়া প্রেমের ঠানে সরল বিশ^াসে হারেছ রাত ১০দিকে তার স্ত্রীকে বিশ^কাপ ফুটবলের খেলা দেখে আসছি বলে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
হারেছ শিরিনের পিত্রালয়ের কাছাকাছি আসলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ছালাম, কমল, কাদির, সাজু, কাঞ্চন, লাল মিয়া ও আলমগীর তাকে ধরে ফুডা বিলের পাড়ে নিয়ে গিয়ে গলায় কাপড় পেছিয়ে শ^াসরুদ্ধ করে হত্যার পর ধারালো ছুরি দিয়ে পেট ছিদ্র করে লাশ গুম করার জন্য বিলের পানিতে ফেলে দেয়। পরদিন ফুডা বিলের পানি থেকে লাশ উদ্ধার করার পর মৃতকের ভাই ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
সূত্রবিহীন এ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডি পুলিশকে। সিআইড’র বিশেষ পুলিশ সুপার মতিউর রহমান এবং অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার সাঈদ আহমেদের তত্বাবধানে মামলা তদন্ত কালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি শিরিন তার পরিচয় গোপন রেখে সুফিয়া নাম ধারণ করে ধানমন্ডির ঝিগাতলা এলাকায় জনৈক আসাদুজ্জামান এর বাসায় কাজের ভূঁয়া হিসেবে কাজ নিয়ে আত্মগোপন করে। সঙ্গীয় ফোর্সসহ আমি তিন দিন ভ্রাম্যমান সবজি বিক্রেতার বেশ ধরে সেখান থেকে গত ৭ আগষ্ট শিরিনকে গ্রেফতার করে নেত্রকোনায় সিআইডি অফিসে নিয়ে আসি।
ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখে এক পর্যায়ে সে মুখ খুলতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে শিরিন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দেয়। এভাবেই চাঞ্চল্যকর এম এ হারেছ হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হয়। পরবর্তীতে সিআইডি পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িত সকলকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস