যুক্তরাজ্যে কেয়ার ওয়ার্কার ভিসায় আসার সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মূলত ইউরোপের দেশটির বয়স্কদের দেখভালের জন্যই এই কেয়ার ওয়ার্কার নেওয়া হয়। আমাদের দেশ থেকে এখন অনেক নারী শ্রমিকও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে মনোনিবেশ করছেন, বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। তাই বাংলাদেশিদের জন্য এটি একটি অভূতপূর্ব সুযোগ বলা যায়।
কেয়ার ওয়ার্কার ভিসা
সম্প্রতি ব্রিটেনে কেয়ার ওয়ার্কার ভিসা চালু হয়েছে, বাংলাদেশিদের জন্য যা সুবর্ণ সুযোগ। কেয়ার স্টাফদের জন্য ভিসানীতি শিথিল করেছে ব্রিটেন। তার মানে, নতুন করে কেয়ার ওয়ার্কার আসার সুযোগ তৈরি হচ্ছে ব্রিটেনে। এই ভিসার আওতায় বাংলাদেশ থেকেও অনেকে আবেদন করতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে কেয়ার ওয়ার্কারদের জন্য শিক্ষা ও কাজের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হবে।
প্রশ্ন হচ্ছে- কেয়ার ওয়ার্কার ভিসায় কতজন লোক নেবে ব্রিটেন? করোনার পর যুক্তরাজ্যের কেয়ার হোমগুলোতে তীব্র ওয়ার্কার সংকটের কারণে হেলথ অ্যান্ড কেয়ার ভিসার চালু করে ব্রিটিশ সরকার। ডিপেডেন্ট সুবিধাসহ এই সেক্টরে ভিসা চালু করা হয়।
তাছাড়া বেক্সিটের কারণে অনেক কর্মী চলে গেছেন। এরই মধ্যে ব্রিটেনে কেয়ার ওয়ার্কার, কেয়ার এসিসটেন্স এবং হোম কেয়ার কর্মীদের জন্য অভিবাসন নিয়ম শিথিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
দেশটির স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে বলা হয়েছে, কর্মীদের শূন্যতা পূরণের জন্য বিদেশ থেকে হাজার হাজার অতিরিক্ত কেয়ার ওয়ার্কার নিয়োগ করা হবে। কেয়ার কর্মীদের শূন্যতা তৈরি হচ্ছে এবং টার্নওভারের সম্মুখীন হচ্ছেন।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত স্টুডেন্টসহ বাংলাদেশ থেকে হাজারেরও বেশি চাকরি প্রার্থী কেয়ার ওয়ার্কার ভিসায় নিজেদের সুইচ করেন। বিশেষ করে যারা স্টুডেন্ট ভিসায় দেশটিতে গিয়েছিলেন, তাদের একটি অংশ ছাত্রত্ব ভিসা বাতিল করে কেয়ার ভিসায় চলে যান। তবে এই ভিসায় ভারতীয়দের আধিক্যই বেশি।
নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে কর্মীদের সংখ্যা প্রায় ৪২ হাজার কমেছে। গবেষকরা বলেছেন, স্টাফ সংকটের কারণে দুর্বল বয়স্ক ব্যক্তিদের কেয়ার হোমগুলো বন্ধ হচ্ছে। আর এ কারণে শূন্যতা পূরণ করার জন্য কেয়ার কর্মীদের হোম অফিসের ঘাটতি পেশার তালিকায় যুক্ত করা হবে। তার মানে, এ খাতে বাইরে থেকে কর্মী আনার তালিকায় যুক্ত করা হবে।
লন্ডন প্রবাসী সাংবাদিক মিল্টন বলেন, এই সেক্টরে এখনো ৭০ হাজারের মতো পদ খালি আছে। যোগ্যরা আসলে ভালো সুবিধা পাবেন।
তিনি আরও বলেন, যারা বাংলাদেশ থেকে আসতে চান, তাদের ট্রেনিং নিতে হবে। যদি সুযোগ থাকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বা হাসপাতালে গিয়ে অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। তাহলে ভবিষ্যতে অনেক কাজে আসবে। এক্ষেত্রে সরাসরি কেয়ার হোম বা এজেন্টের মাধ্যমে আসলে অনৈতিক লেনদেন থাকতে পারবে না এবং ইংরেজি বিষয়ে দক্ষতা থাকতে হবে।
কেয়ার ওয়ার্কারদের বেতন কত?
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটেনের বাইরে থেকে আসা কর্মীদের বছরে ২০ হাজার ৪৮০ পাউন্ড বেতন দেওয়া হবে। যা বাংলাদেশী টাকায় ২৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকার বেশি। এছাড়াও কেয়ার ওয়ার্কার তাদের পরিবার, অর্থাৎ স্বামী বা স্ত্রী ও সন্তানসহ ব্রিটেনে আসার ভিসা পাবেন।
ধারণা করা হচ্ছে, কেয়ার ওয়ার্কারদের ক্ষেত্রে ১২ মাসের ভিসার সুযোগ থাকবে।
কোন কোন পোস্টে লোক নেবে
কেয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট, কেয়ার ওয়ার্কার, কেয়ারার, হোম কেয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট, হোম কেয়ারার ও সাপোর্ট ওয়ার্কার (নার্সিং হোম)। এসব পোস্টের জন্য কর্ম খালি খুঁজলেই মিলবে নানান উত্তর।
কীভাবে চাকরি খুঁজবেন এবং দরখাস্ত করবেন
গুগলে এসব নাম লিখে কর্ম খালি খুঁজলে আপনারা কীভাবে দরখাস্ত করবেন, তা বিস্তারিত পেয়ে যাবেন। মূলত একটি জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করে এবং একটি সাহায্যকারী চিঠি সঙ্গে যুক্ত করে এমপ্লয়ারদের নির্ধারিত ই-মেইলে পাঠিয়ে দেবেন।
কোথায় কোথায় এই চাকরির কর্মখালির খোঁজ পাবেন?
linkedin, Indeed, Reed, carehome, jobsite, homecare, totaljob, agencycentral ageuk jobcommunityg-এসব সাইটে গিয়ে পোস্টগুলোতে কর্ম খালি খুঁজতে পারেন।
দরখাস্তের সঙ্গে কী কী জমা দিতে হয়?
যদি কোনো স্পন্সর আপনাকে কাজ দিয়ে দেয়, তাহলে কী কী জিনিস জমা দেবেন?
১. দরখাস্ত
২. পাসপোর্ট
৩. সার্টিফিকেট অব স্পনসর (এমপ্লয়ার দেবে)
৪. এমপ্লয়ারের সঙ্গে চুক্তি
৫. অ্যাপ্লিকেশন ফি (২৩২ পাউন্ড, ৩ বছরের ভিসা ফি)
৬. এনএইচফি (লাগবে না)
৭. টিবি টেস্ট সার্টিফিকেট
৮. আইইএলটিএস সার্টিফিকেট
৯. এক মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ১২৭০ পাউন্ড থাকবে, মেইনটেইন্যান্স ফান্ড।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ