লক্ষ্মীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী উম্মে কুলসুমকে তালাক দেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আবুল কালাম। পরে কাবিনের আড়াই লাখ টাকা ও ভরণপোষণের দাবিতে আদালতে মামলা করেন কুলসুম। ওই মামলায় কালাম দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। জামিনে বের হয়ে গত আটমাসে তিনি কুলসুমকে ছয়বার পিটিয়ে আহত করেছেন।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন কুলসুম। তিনি বলেন, সবশেষ রোববার (৩ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যচরভূতা গ্রামে কুলসুমসহ তার পরিবারের ওপর হামলা করেন কালাম। এসময় কুলসুমকে বেদম মারধর করা হয়। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উম্মে কুলসুম মধ্যচরভূতা গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্র ও কুলসুমের ভাষ্যমতে, কুলসুম ও কালাম সম্পর্কে চাচাতো ভাইবোন। ২০১০ সালে কুলসুম অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। তখন দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে পালিয়ে গিয়ে তারা বিয়ে করেন। এরপর দীর্ঘদিন তারা পলাতক ছিলেন। তবে তাদের বিয়ে মেনে নেয় উভয়ের পরিবার। জীবিকার তাগিদে কালাম বিয়ের দুই বছর পর বিদেশে পাড়ি দেন। পাঁচ বছর দেশে ফেরেন। তাদের সংসারে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
সংসারে নতুন সদস্য মেয়েকে নিয়ে তাদের দাম্পত্যজীবন সুখে-শান্তিতে কাটছিল। হঠাৎ তাদের সম্পর্কে অবনতি হয়। তাদের প্রায়ই ঝগড়া হতো। এক পর্যায়ে কালাম লক্ষ্মীপুর আদালতে গিয়ে কুলসুমকে তালাক দেন।
এ ঘটনায় কুলসুম ক্ষিপ্ত হয়ে কাবিনের টাকা ও ভরণপোষণের দাবিতে লক্ষ্মীপুর আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় গ্রেফতার হয়ে কালাম দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। আটমাস আগে তিনি জেল থেকে জামিনে বের হন। এরপর থেকে ছয়বার সপরিবারে কুলসুমকে পিটিয়ে জখম করেন কালাম।
যোগাযোগ করা হলে কাছে কুলসুমকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেন আবুল কালাম। তিনি বলেন, ‘যতবার সামনে পড়বে ততবার মারবো। তারা (কুলসুম ও তার পরিবার) আমার জীবনটাকে শেষ করে দিয়েছে।’
এ বিষয়ে ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আহসান উল্লাহ হাসান বলেন, ‘সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে আদালতে মামলাও চলে। আমরা সামাজিকভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। তবে তাদের আন্তরিকতার অভাবে তা সম্ভব হয়নি।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগীকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তবে এখনো অভিযোগ দেননি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ