বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে উপকূলীয় তিনজেলায় নারী ও শিশুসহ ৬জন নিহত হয়েছে। কক্সবাজার, ভোলার মনপুরা ও রাঙামাটিতে মোরার প্রভাবে ঝড়ে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড়ে মহেশখালীর শাহপরীর দ্বীপসহ বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার শহর, মহেশখালী, শাহপরীর দ্বীপ ও কুতুবদিয়ায় বহু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ায় উড়ে গেছে অনেক বাড়িঘরের টিনের চাল। উপড়ে পড়েছে প্রচুর সংখ্যক গাছপালা।
প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ থেকে বাঁচতে মঙ্গলবার সকালে শহরের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে আসার পর ভয়-আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের ৬নং জেডিঘাট এলাকায় বদিউল আলমের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৫৫) মারা যান।
চকরিয়া: মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চকরিয়া উপজেলায় ঝড়ে গাছচাপায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন, চকরিয়ার বড়ভেওয়া এলাকার মৃত নূর আলম সিকদারের স্ত্রী সায়েরা খাতুন (৬৫) ও একই উপজেলার পূর্ব জুমখালী এলাকার আবদুল জব্বারের ছেলে রহমত উল্লাহ (৫০)। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন গণমাধ্যমকে এসব মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
ভোলা প্রতিনিধি: ভোলা মনপুরায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাত থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে কাদাপানিতে মায়ের কোল থেকে পড়ে গিয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মনপুরা উপজেলার কলাতলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, গতকাল রাতে কলাতলী গ্রামের মনির বাজারের পাশের সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন সালাউদ্দিন ও তাঁর পরিবার। এ সময় মায়ের কোল থেকে কাদাপানিতে পড়ে রাশেদ নামের এক বছর বয়সী এক শিশু মারা যায়।
রাঙামাটি প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ বৃহত্তর চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে ১১৭ কি.মি বেগে অতিক্রম করার সময় এর প্রভাব পড়েছে রাঙামাটিতেও। ওই সময় শহরের আসামবস্তি ও বেকদেবী এরাকায় গাছচাপায় ২ জন নিহত হয়েছে। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
কুতুবদিয়া প্রতিনিধি: ১১৭ কিলোমিটার গতিবেগে অতিক্রম করার সময় ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র তাণ্ডবে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় বহু ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। তবে, বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে দ্বীপবাসী। মোরা’র প্রভাবে সাগর থেকে বড় ধরনের জলোচ্ছাস এসে সব কিছু তলিয়ে নিয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা করছিল মানুষ।
ঘূর্ণিঝড় মোরা অতিক্রম করার সময় কুতুবদিয়ার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বাড়িঘরগুলো বিধ্বস্ত হয়েছে বেশি। প্রচণ্ড ধমকা হাওয়ায় অনেক বাড়িঘরের টিনের চান উড়ে গেছে। উপড়ে পড়েছে বহু গাছপালা। তবে, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
বিধ্বস্ত সেন্টমার্টিন: ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। ঝড়ে সেন্টমার্টিনে ২ শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কাঁচা ঘর বেশি। আধাপাকা ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগ ঘরের চালা উড়ে গেছে। এ ছাড়া বহু গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে।