বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন চালু হবে এ মাসেই সাবেক সেনা সদস্য হত্যায় ৯ জনের যাবজ্জীবন ইতা‌লি ভিসাপ্রার্থীদের যে বার্তা দি‌লেন পররাষ্ট্র উপ‌দেষ্টা ময়মনসিংহে ‘চাঁদাবাজ’ রানাসহ ৬ আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার নিরাপদ খাদ্য পেতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমাতে হবে ছয়দিন বন্ধ থাকবে সোনামসজিদ স্থলবন্দর টি-টোয়েন্টি থেকে মাহমুদউল্লাহর অবসর ঘোষণা শেখ হাসিনা কোথায় আছেন, জানালেন ছেলে জয় সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলসহ ৪ জনের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু পিএসসির চেয়ারম্যানসহ সব সদস্যের পদত্যাগ জামিন পেলেন সাবের হোসেন চৌধুরী, কারামুক্তিতে বাধা নেই বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষিত দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: মিলার সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে: ড. ইফতেখারুজ্জামান শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসারদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স শুরু দুর্গাপূজার ছুটি বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন মন্ত্রী-এমপিরা কার ইঙ্গিতে পালালো তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন: ফারুক মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনেই চলবে হেলিকপ্টার! তাপসী তাবাসসুমকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ নেত্রকোণায় লাখ মানুষ পানিবন্দি, এক মৃত্যু আন্দোলন দমাতে অস্ত্র ব্যবহার, যুবলীগ কর্মী আরাফাত গ্রেপ্তার

মোবাইলে পরিচয়ে প্রেম-বিয়ে: স্ত্রীর হাতে খুন ‘জিনের বাদশা’

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা:
  • আপলোড সময় বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০২২
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

জিনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারণাই পেশা জাকির হোসেন বাচ্চুর (৩৮)। প্রতারণার জন্য ফোন দিলে জাকিরের সঙ্গে পরিচয় হয় মোছা. আরজু আক্তারের (২৩)। ফোনে আলাপ থেকেই প্রেম, একপর্যায়ে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের পর আরজু আক্তারকেও জিনের প্রতারণার কাজে যুক্ত করেন জাকির।

আরজু আক্তারের সঙ্গে বসবাস করলেও পরকীয়ায় আসক্ত জাকির প্রতারণায় উপার্জিত সব অর্থ ব্যয় করতেন অনৈতিককাজে। এ নিয়ে মনোমালিন্য থেকে একপর্যায়ে আরজুকে তালাক দেন জাকির।

তালাক হলেও তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক ছিল, প্রায়ই একসঙ্গে বসবাস করতেন। তবুও জাকিরের একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক ও তালাকের কারণে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন আরজু আক্তার। সে অনুযায়ী লঞ্চযোগে ভোলা যাওয়ার পথে কেবিনে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে জাকিরকে হত্যা করেন আরজু।

গত ২৯ জুলাই সদরঘাট এলাকায় এমভি গ্রিন লাইন-৩ লঞ্চের স্টাফ কেবিন থেকে জাকির হোসেন বাচ্চুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩১ জুলাই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত জাকিরের প্রথম স্ত্রী সুরমা আক্তার।

সোমবার (১ আগস্ট) মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ভোরে সাভারের নবীনগর এলাকায় ঢাকাগামী একটি বাস থেকে আরজু আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। এ দিনই আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আরজু আক্তার।

বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।

তিনি বলেন, জিনের বাদশা জাকির হোসেন বাচ্চুর বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দীনে। সেখানে তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানরা থাকতেন। জিনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারণা করে আসা জাকির দুই বছর আগে একদিন ফোন দেন আরজু আক্তারকে। জিনের বাদশা পরিচয়ে দেওয়া সেই ফোন থেকেই প্রেম এরপর তাকে বিয়ে করে ঢাকার ভাড়াবাসায় বসবাস করতে থাকেন জাকির।

বিয়ের পর আরজু জানতে পারেন তিনি জাকিরের দ্বিতীয় স্ত্রী। এরপরও জাকিরের একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বিবাদের জেরে গত দুই মাস আগে তাদের তালাক হয়ে যায়। তালাক হলেও তারা একজন আরেকজনের বাসায় গিয়ে থাকতেন। তালাক দেওয়া ও একাধিক সম্পর্কের কারণে প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন আরজু।

এর মধ্যে আরজু আক্তার জানতে পারেন ২৯ জুলাই জাকির লঞ্চযোগে ভোলা গ্রামের বাড়ি যাবেন। আরজুর বাড়ি জাকিরের বাড়ির পাশের গ্রামে হওয়ায় কেবিন ভাড়া করে তাকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে বলেন আরজু। ওইদিন সকালে এমভি গ্রিন লাইন লঞ্চের একটি স্টাফ কেবিন ভাড়া করে দুজন ভোলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। লঞ্চে ওঠার আগে একপাতার ঘুমের ওষুধ ও এক বোতল দুধ কিনে নেন আরজু।

পিবিআই এসপি বলেন, লঞ্চের কেবিনে প্রথমে তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। এরপর জাকির পানি আনতে লঞ্চের নিচতলায় গেলে দুধের বোতলে পাঁচটি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে রাখে আরজু। কিছুক্ষণ পর জাকির কেবিনে এলে তাকে ওষুধ মেশানো দুধ খেতে বলেন। দুধ খেয়ে জাকির ঘুমিয়ে পড়েন, এরপর তার হাত-পা ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলেন। এরপর আরেকটি ওড়না দিয়ে জাকিরকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

হত্যার পর জাকিরকে কেবিনের স্টিলের খাটের নিচে লুকিয়ে রুমটি ভালোভাবে গুছিয়ে রাখেন আরজু। এরপর লঞ্চটি ভোলার ইলশা ঘাঁটে পৌঁছালে আরজু নেমে যান। লঞ্চের ক্লিনার ওই কেবিনে এসে রুমটি গুছানো দেখে আর ভেতরে যাননি। দুপুরে লঞ্চটি আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে দুই নারী তিন বাচ্চাকে নিয়ে সেই কেবিনে ওঠেন।

এর মধ্যে একটি বাচ্চা খাটের নিচে গেলে এক নারী যাত্রী তাকে আনতে গিয়ে জাকিরের মরদেহ দেখতে পেয়ে লঞ্চের স্টাফদের খবর দেন। পরে স্টাফরা এসে মরদেহ দেখতে পেয়ে ঢাকার নৌ পুলিশকে খবর দেন। লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছালে নৌ পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পিবিআই।

পিবিআইর এ কর্মকর্তা বলেন, মামলা হওয়ার পর পিবিআই ঢাকা জেলা মামলাটির তদন্তভার নেয়। তদন্তের ধারাবাহিকতায় আরজু আক্তারকে শনাক্ত করা হয়। আরজু ভোলা নেমে স্পিডবোটযোগে বরিশাল যান। সেখান থেকে বাসযোগে দৌলদিয়া হয়ে ঢাকা ফেরার পথে নবীনগর এলাকায় ঢাকাগামী বাস থেকে আরজু আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, লঞ্চের কেবিনে কোনো যাত্রী উঠলে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রাখার কথা থাকলেও লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জাকির ও আরজুর কোনো পরিচয়পত্র রাখেননি। এছাড়া তারা যে কেবিনটি ভাড়া দিয়েছিল সেটি ছিল স্টাফ কেবিন। স্টাফ কেবিন হওয়া সত্ত্বেও তাদের কাছে ভাড়া দেন লঞ্চের স্টাফরা।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com