মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন চালু হবে এ মাসেই সাবেক সেনা সদস্য হত্যায় ৯ জনের যাবজ্জীবন ইতা‌লি ভিসাপ্রার্থীদের যে বার্তা দি‌লেন পররাষ্ট্র উপ‌দেষ্টা ময়মনসিংহে ‘চাঁদাবাজ’ রানাসহ ৬ আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার নিরাপদ খাদ্য পেতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমাতে হবে ছয়দিন বন্ধ থাকবে সোনামসজিদ স্থলবন্দর টি-টোয়েন্টি থেকে মাহমুদউল্লাহর অবসর ঘোষণা শেখ হাসিনা কোথায় আছেন, জানালেন ছেলে জয় সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলসহ ৪ জনের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু পিএসসির চেয়ারম্যানসহ সব সদস্যের পদত্যাগ জামিন পেলেন সাবের হোসেন চৌধুরী, কারামুক্তিতে বাধা নেই বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষিত দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: মিলার সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে: ড. ইফতেখারুজ্জামান শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসারদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স শুরু দুর্গাপূজার ছুটি বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন মন্ত্রী-এমপিরা কার ইঙ্গিতে পালালো তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন: ফারুক মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনেই চলবে হেলিকপ্টার! তাপসী তাবাসসুমকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ নেত্রকোণায় লাখ মানুষ পানিবন্দি, এক মৃত্যু আন্দোলন দমাতে অস্ত্র ব্যবহার, যুবলীগ কর্মী আরাফাত গ্রেপ্তার

মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনেই চলবে হেলিকপ্টার!

খুলনা প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

ব্যতিক্রমী কিছু করার চেষ্টা থেকে তিন বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে এক আসনের হেলিকপ্টার তৈরি করেছেন খুলনার ফুলতলা উপজেলার কলেজ ছাত্র নাজমুল খান। দেড়শো সিসির মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনে এই হেলিকপ্টার তৈরিতে কোটি টাকা নয়, খরচ হয়েছে মাত্র দুই লাখ টাকা। উপযুক্ত পরিবেশ পেলেই যন্ত্রটিকে আকাশে উড়ানোর প্রস্তুতি নেবেন নির্মাতা নাজমুল। 

কলেজ শিক্ষার্থীর এমন উদ্ভাবনে উচ্ছ্বাসিত স্থানীয়রা। নাজমুলকে হেলিকপ্টার বানানোর পরিকল্পনায় উৎসাহ যুগিয়েছেন এলাকাবাসী। প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে উৎসুক জনতা ভিড় করছেন হেলিকপ্টারটি দেখার জন্য।

খুলনার ফুলতলার জামিরা ইউনিয়নের ছাতিয়ানি গ্রামের কৃষক পরিবারের একমাত্র সন্তান নাজমুল। পড়ালেখা করছেন বিএল কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে। তার বাবা নজরুল ইসলাম খান পেশায় কৃষক হলেও তার রয়েছে একটি মুদি দোকান। দারিদ্রতার মধ্যেও ছেলের উদ্ভাবনী ইচ্ছায় উৎসাহ যোগাতে করেছেন অর্থ বিনিয়োগ। ছেলের সাফল্যে আবেগাপ্লুত তিনি।

অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সহযোগিতায় জ্ঞান অর্জন করে দেশীয় প্রযুক্তিতে হেলিকপ্টারটি তৈরি করেছেন নাজমুল। হেলিক্প্টারের ইঞ্চিন ব্যয়বহুল হওয়ায় বুদ্ধি খাটিয়ে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের আরপিএম বাড়িয়ে ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। এখন আকাশে উড়ার অপেক্ষায় নাজমুলের হেলিকপ্টার।

তবে, এ জন্য প্রয়োজন আরো অনেক নিরাপত্তা সরঞ্জাম। ইতোমধ্যে নাজমুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। হেলিকপ্টারটিকে নিরাপদ ও আকাশে উড়ার উপযোগী করে তোলার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। 

নাজমুল জানান, হেলিকপ্টারের বডি তৈরিতে তিনি ব্যবহার করেছেন এস এস পাইপ। চায়না দেড়শো সিসির মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের আরপিএম সাড়ে ৬ হাজার থেকে বাড়িয়েছেন ৯ হাজার আরপিএমএ। হেলিকপ্টারের পাখা সাড়ে ৮ ফুট লম্বা, চওড়া ২১ মিটার। পুরো হেলিকপ্টারটির দৈর্ঘ্য সাড়ে ২২ ফুট। হেলিকপ্টারটি এক লিটার অকটেনে ১৮ থেকে ২০ মিনিট চলবে। যার সর্বোচ্চ গতি হবে ৩২০ কিমি/ঘণ্টা।

তিনি বলেন, ‘অনলাইন থেকে ভিডিও দেখে এবং সেখান থেকে ধারণা নিয়ে হেলিকপ্টার তৈরি করেছি। ইতোমধ্যে আমার হেলিকপ্টার তৈরির ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করি, অচিরেই আকাশে উড়াতে পারবো। এটি তৈরিতে ১৫০ সিসি চায়না ইঞ্জিন ব্যবহার করেছি। কিছু যন্ত্রপাতি স্থানীয়ভাবেও সংগ্রহ করা হয়েছে।

হেলিকপ্টার তৈরিতে আমার দুই লাখ টাকার কিছু বেশি খরচ হয়েছে। এটা তৈরিতে কারও সহযোগিতা নেইনি। আমার ওজনসহ ২১০ কেজি নিয়ে হেলিকপ্টারটি উড়তে পারবে। সরকার যদি কোনো সহযোগিতা কিংবা সরকারের কোনো সংস্থা যদি আমাকে কোনোভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করতো তাহলে আমি উপকৃত হতাম।’

তিনি জানান, খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিছুদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বৃষ্টি কমলে হেলিকপ্টার উড়ানো সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করছেন।

নাজমুলের এমন উদ্ভাবনে উচ্ছ্বাসিত গ্রামবাসী ও তার শিক্ষকরা। স্থানীয় জামিরা বাজার আসমোতিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ গাজী মারুফুল কবীর বলেন, ‘নাজমুল আমাদের কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। প্রায় তিন বছর ধরে হেলিকপ্টার তৈরির কাজ করছেন নাজমুল। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে হেলিকপ্টার আকাশে উড়াতে পারবেন তিনি।’

নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘পেশায় আমি একজন কৃষক, বাড়তি আয়ের জন্য একটি মুদি দোকান চালাই। দরিদ্রতার মধ্যেও ছেলের উদ্ভাবনী ইচ্ছাকে উৎসাহিত করতে অর্থ দিয়েছি। এলাকাবাসী নাজমুলের এমন উদ্ভাবনে উচ্ছ্বসিত। নাজমুলের হেলিক্প্টার বানানোর পরিকল্পনাকে উৎসাহ যুগিয়েছেন এলাকাবাসী। প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে উৎসুক জনতা আসছেন এই যন্ত্রটি দেখার জন্য। নাজমুলের বাবা হিসেবে আমি গর্বিত।’

নাজমুল বলেন, ‘পরিবার থেকে আমাকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। আমার বাবার সম্পূর্ণ সহযোগিতা ছিল।’

তিনি বলেন, ‘শুধু সাইন্সের শিক্ষার্থীরা নয়, অন্যান্য বিভাগেও মেধা সম্পন্ন ছাত্ররা রয়েছেন। যাদের সুযোগ-সুবিধা দিলে তারা আমার থেকেও ভালো কিছু করে দেখাতে পারবেন। হেলিক্প্টারটি এখন আকাশে উড়ার অপেক্ষায়। এজন্য প্রয়োজন আরও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও আয়োজন।’

ফুলতলা উপজেলার জামিরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম সরদার বলেন, ‘প্রশাসন পাশে দাঁড়ালে এবং সহযোগিতা করলে তিনি (নাজমুল) একদিন ক্ষুদে বিজ্ঞানী থেকে বড় বিজ্ঞানী হতে পারবেন।’

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘হেলিকপ্টার প্রস্তুতকারক কলেজ শিক্ষার্থী নাজমুলকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ সহযোগিতা করা হবে। হেলিকপ্টার উড়ানোর সময় ফায়ার সার্ভিসসহ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com