রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ বের করতে হবে: তারেক রহমান স্পেন্ড অ্যান্ড উইন : বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে মাস্টারকার্ড বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে মুইজ্জুর আসন্ন ভারত সফর কী বার্তা দিচ্ছে? হবিগঞ্জে থানা চত্বর থেকে পরিত্যক্ত শটগান উদ্ধার গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যা নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনা-শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে মামলা মাঝ রাস্তায় যাত্রী ওঠা-নামা বন্ধের নির্দেশ সোনার দামে নতুন রেকর্ড, ভরি ১৩৩০৫১ টাকা পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ সেনা নিহত বাংলাদেশের ইলিশ পাঠানোর ঘোষণায় পশ্চিমবঙ্গে খুশির জোয়ার সাজেকে আটকা পড়েছে ৮ শতাধিক পর্যটক সিলেটে বজ্রপাতে একদিনে ৪ জনের মৃত্যু ইতিহাসে প্রথমবার ২৬০০ ডলার ছাড়ালো সোনার আউন্স আইনশৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে হাত ভেঙে দেওয়া হবে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ মুখোমুখি, যা বললেন জাতিসংঘ প্রধান কাশিমপুর থেকে পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া: ফখরুল ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাতের মধ্যে নতুন যুদ্ধাস্ত্র সামনে আনলো ইরান সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে বৃদ্ধের মৃত্যু কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না: নজরুল ইসলাম খান

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী একটি সেতুর জন্য লাখো মানুষের দুর্ভোগ

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘীরপার বাজারের পশ্চিমপাশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার শাখা নদী। এ নদীতে সেতু না থাকায় ট্রলারই (ইঞ্জিনচালিত নৌকা) একমাত্র যাতায়াতের ভরসা মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, চাঁদপুরসহ নদী বেষ্টিত ৫টি জেলার অন্তত ১১টি ইউনিয়নের মানুষের। এতে করে ঝড়-তুফানে ঝুঁকি, রাত-বিরাতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এ পথ ব্যবহারকারী লাখো বাসিন্দাদের। 

স্থানীয় এ নৌপথ ব্যবহারকারীরা জানান, দিঘীরপার বাজারের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে পদ্মার শাখা নদী। নদীর পূর্বপারে দিঘীরপার বাজার, স্কুল ও কলেজ রয়েছে। মুন্সীগঞ্জ জেলা শহর এবং রাজধানীর ঢাকায় যাতায়াতের পথও এদিক দিয়ে।

নদীর পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণ পাড়ে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড়, কামারখাড়া, হাসাইল বানারি ও পাঁচগাও ইউনিয়নের ১২-১৩টি গ্রাম, মুন্সীগঞ্জ সদরের শিলই ও বাংলাবাজার ৩-৪টি গ্রাম, শরীয়তপুরের নওপাড়া, চরআত্রা, কাঁচিকাটা, কুন্ডের চর ও কোরবি মনিরাবাদ ঘড়িশালসহ ৫টি ইউনিয়নের ১০-১২টি গ্রাম। 

এছাড়াও কুমিল্লার জেলার এলামচর, পূর্ব বানিয়াল, চাঁদপুরে হাইমচরের কিছু অংশ মুন্সীগঞ্জ জেলার সঙ্গে লাঘোয়া। এসব ইউনিয়নের গ্রামগুলোর অন্তত দুই লাখ মানুষ তাদের প্রয়োজনে এ নদী পারাপার হচ্ছেন। নদী পারাপার হয়ে টঙ্গিবাড়ী শহর, মুন্সীগঞ্জ সদর, ঢাকা-নারায়নগঞ্জে যাতায়াত করেন তারা। এসব গ্রামবাসী দিঘীরপাড় বাজার ঘাট এলাকায় দিনের পর দিন একটি সেতুর দাবি জানিয়ে আসলেও তাদের সে দাবি পূরণ হচ্ছে না।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দিঘীপার বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ট্রলার ভর্তি করে নদীর পশ্চিমপাড় থেকে মানুষজন আসছেন। ট্রলার থেকে নেমে তাদের প্রয়োজনে দিঘীরপার বাজার, টঙ্গিবাড়ী উপজেলা পরিষদ, মুন্সীগঞ্জ শহর ও রাজধানীর ঢাকার দিকে ছুটছেন।

একইভাবে প্রয়োজন শেষে এ পার থেকে ট্রলার ভর্তি করে নদীর পশ্চিম পাড়ে যাচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়াও নদীর উত্তর এবং দক্ষিণ পাশ থেকে ট্রলার ভর্তি করে দিঘীরপাড় হাটে কেউ মালামাল বিক্রি করতে আসছেন। কেউ কেউ আবার এ হাট থেকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গৃহস্থালির জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। সব কিছুই হচ্ছে ট্রলারের উপর ভরসা করে। 

এদিন কথা হয় শরীয়তপুর কাঁচিকাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. ইয়াসিন বেপারী সঙ্গে। তিনি কাজের সুবাদে এ পথ হয়ে রাজধানীর দিকে যাচ্ছিলেন। ইয়াসিন বলেন, আমরা শরীয়তপুরের মানুষ হলেও আমাদের সব কাজকর্ম মুন্সীগঞ্জেই সুবিধা। আমাদের হাট বাজার করতে হয় দিঘীরপাড় বাজারে। ঢাকায় যাই এ পথ দিয়ে। 

তিনি আরও বলেন, রাত-বিরাতে ট্রলার পাওয়া যায় না। ট্রলার পেলেও ৫০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা গুনতে হয়। নদীপথে সময় লাগে বেশি। এছাড়াও ট্রলারে করে দিঘীরপার আসার সময় প্রায়ই আমাদের ডাকাতির শিকার হতে হয়। যদি দিঘীরপারে বাজার এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ করা হতো, তাহলে আমাদের কষ্ট হয় না। খুব সহজে সড়ক পথে ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জ যেতে পারতাম।

সরকারি হরগঙ্গা কলেজের সম্মান শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মোবারক হোসেন। তিনি মুন্সীগঞ্জ সদরের শিলই  ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি সপ্তাহে ৪ দিন ট্রলারে করে পদ্মার শাখা নদী পার হয়ে মুন্সীগঞ্জে আসা-যাওয়া করেন। মোবারক বলেন, দিঘীরপাড় খেয়াঘাট থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব দুই কিলোমিটার।

নদীর পশ্চিমপাড়ে সড়কের অবস্থাও তেমন ভালো না। যাত্রীবাহী কোনো যানবাহন চলে না। এই টুকু রাস্তা পাড়ি দিয়ে দিঘীর পারে আসা-যাওয়া করতে মোটরসাইকেল ২০০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। সেতু নেই তাই ঘাটে এসে ট্রলারের জন্য প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট বসে থাকতে হয়। তবে ট্রলার পার হতে পারলে দিঘীরপাড় থেকে মুন্সিগঞ্জে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে ৩০ মিনিটের মধ্যে যেতে পারি। যাওয়া-আসা করতেও মাত্র ৮০ টাকা খরচ হয়। 

মোবারক আরও বলেন, যদি দিঘীরপার এলাকায় একটি সেতু থাকতো, তাহলে অল্প সময়ে কম খরচে প্রতিদিন আমাদের মত শিক্ষার্থীরা মুন্সীগঞ্জে যাতায়াত করতে পারতো। 

দিঘীরপাড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আরিফুল ইসলাম হালদার বলেন, একটি সেতুর অভাবে মানুষের কত দুর্ভোগ সেটি আমি নিজের চোখে প্রতিনিয়ত দেখছি। সেতু নির্মাণের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার জানিয়েছি। যতদূর জানতে পেরেছি এখানে খুব শীঘ্রই একটি সেতু নির্মাণ হবে। সেই লক্ষ্যে কাজও চলছে। 

এ নদীর উপর দিয়ে ১০০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ এবং নদীর পশ্চিম পাশে ৪ কিলোমিটারের একটি আরসিসি সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান টঙ্গিবাড়ী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. শাহ মোয়াজ্জেম। 

এই কর্মকর্তা বলেন, সেতু নির্মাণের প্রাথমিক কাজ মাটি পরীক্ষা ও অন্যান্য সার্ভে সম্পন্ন করেছে বুয়েটের একটি বিশেষজ্ঞ দল। এখন নকশা করে বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে। বরাদ্দ হলে দরপত্র আহ্বান করা হবে। বরাদ্দ পেলে আগামী বছরের মধ্যে কাজ শুরু করা যাবে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com