বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: একজন ক্রিকেট কোচের সবচেয়ে বড় সাফল্য কী? স্থানীয় কোচদের ক্ষেত্রে বলতে গেলে তার শিষ্য যেন জাতীয় দলের জার্সি পরে খেলে, এমন স্বপ্নই দেখেন।
সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে কোচ আল মাহমুদের। সর্বোচ্চ শিখরে তার প্রথম সাফল্য মেহেদী হাসান মিরাজ। তরুণ এই অলরাউন্ডার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সফল হওয়ার পর এবার জাতীয় দলের জার্সিতে একাই কুপোকাত করলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের।
মিরাজের এই সাফল্যে দারুণ খুশি কোচ আল মাহমুদ। এবার তার স্বপ্ন, মিরাজ যেন দীর্ঘদিন জাতীয় দলকে সার্ভিস দিতে পারেন। কোচ আল মাহমুদের বিশ্বাস, মিরাজ সেটা করতে পারবেন। মঙ্গলবার মিরাজকে নিয়ে তার স্বপ্ন, সাফল্য আর সম্ভাবনার কথা জানান তার ক্রিকেটের প্রথম জীবনের এই কোচ।
আজকে মিরাজের মিরাজ হয়ে ওঠার পেছনে সব থেকে বড় অবদান তার প্রথম জীবনের কোচ আল মাহমুদের। মিরাজ নিজেও বহুবার একথা স্বীকার করেছেন। খালিশপুরের মুসলিম একাডেমীর কোচ আল মাহমুদ মিরাজের প্রতিভা আর খেলার প্রতি আগ্রহ দেখে নিজেই তাকে খেলার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করে দেন। এমনকি ক্রিকেট ব্যাট, প্যাডসহ অন্য সব সরঞ্জাম নিজেই কিনে দেন কোচ।
এরপরই মিরাজের ক্রিকেটার হয়ে ওঠার গল্প শুরু। আর মিরাজের কাছে যেন কোচ আল মাহমুদই অনেক কিছু। মাত্র দুই দিনের জন্য খুলনাতে এসেছেন ছুটি কাটাতে। আর প্রায় পুরোটা সময় রেখে দিয়েছেন কোচের জন্য। যেখানেই যাচ্ছেন, সঙ্গে থাকছেন কোচ আল মাহমুদ। সোমবার বাসার সামনে মাইক্রো থেকেই নেমেই প্রথমে খুঁজলেন মাহমুদ স্যার কোথায়। কোচ আল মাহমুদও নিরাশ করেন না। যখনই যেভাবে প্রয়োজন মিরাজকে পরামার্শ দেন তিনি। এমনই ভালোবাসা গুরু-শিষ্যের।
মিরাজ অনূর্ধ্ব-১৪, ১৬ ও ১৮ ক্রিকেটে খুলনা জেলার হয়ে সাফল্য পান। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে খুলনা জেলা ও বিভাগের হয়ে নেতৃত্ব দেন তিনি। আর তখন থেকেই তিনি বিসিবি’র নজরে পড়ে যান। তবে কোচ আল মাহমুদকে কখনো ভোলেননি মিরাজ। এখনও যখনই কোনো সমস্যায় পড়েন, কোচ আল মাহমুদের দারস্থ হন তিনি।
সেদিনের সেই ছোট্ট মিরাজ আজ ক্রিকেট দুনিয়ায় বিশ্ব কাঁপাচ্ছেন, এতে দারুণ রোমাঞ্চিত কোচ আল মাহমুদ। তবে অবাক নন মোটেই, ‘মিরাজের সামর্থ্য নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। পুরো ক্রিকেট বিশ্ব হতবাক হলেও আমি জানতাম মিরাজ এটা করতে পারবেই। তার মধ্যে সেই ক্ষমতা আছে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটেও তার যোগ্যতার প্রমাণ পেয়েছে পুরো ক্রিকেটবিশ্ব। এবার মূল মঞ্চ কাঁপানোর পালা।’
মিরাজের জন্য এখনও কিছু করতে পারলে ভালো লাগবে জানিয়ে কোচ আল মাহমুদ বলেন, ‘এই দুই টেস্টে তার ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে কনফিডেন্সে কোথাও ঘাটতি রয়েছে। মিরাজ অবশ্যই অনেক ভালো ব্যাটসম্যান। মনে রাখতে হবে সে বয়সে এখনও তরুণ। আর দুই টেস্টেই সে যখন ব্যাট করেছে, তখন দল খুব চাপে ছিল। এ সময় ভলো ব্যাট করতে হলে মনসংযোগের একটুও ঘাটতি রাখা যাবে না। এই জায়গাটায় তার আরো উন্নতি করতে হবে। তার সব থেকে বড় গুণ, সে খুব দ্রুত শিখতে পারে। আমার বিশ্বাস এই জায়াগাতেও সে খুব দ্রুত উন্নতি করতে পারবে।’
মিরাজের জন্য আরো একটা বড় পরামর্শ রয়েছে কোচ আল মাহমুদের। সেটি হচ্ছে, মানসিকতায় যেন কোনোভাবেই পরিবর্তন না আসে, ’সে এমনিতেই খুব ভদ্র, নমনীয় ছেলে। কখনও কারও সাথে রুঢ় আচরণ করে না। বড় ক্রিকেটার হতে হলে এটিকে ধরে রাখতেই হবে।’
কোচ বিশ্বাস করেন, মিরাজ অবশ্যই এটি করতে পারবেন।
বাংলা৭১নিউজ/এম