সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
গণঅভ্যুত্থানে আহত-নিহতদের তালিকা প্রকাশসহ ৯ দাবি শেখ পরিবারের ছয় সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘দেশের ৬ কোটি শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও মজুরির মানদণ্ড নেই’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলবে যে ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার মণিপুরে আসাম রাইফেলসের ক্যাম্পে হামলা উত্তেজিত জনতার রেমিট্যান্স আহরণে ‘গোল্ড অ্যাওয়ার্ড’ পেলো ইসলামী ব্যাংক মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ নতুন করে ভ্যাট আরোপ হবে সরকারের নির্দয় সিদ্ধান্ত : জিএম কাদের মোবাইল-ইন্টারনেট সেবায় ভ্যাট প্রত্যাহার না করলে এনবিআর ঘেরাও রমজান ও ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করল আরব আমিরাত এবার মহাশূন্যে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্প বানাবে চীন! ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব সাধারণ নির্বাচনকে ‘সর্বশ্রেষ্ঠ ও ঐতিহাসিক’ করতে চায় সরকার টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জাকিরের ঝড়, সিলেটের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি কাউন্সিল নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত বগুড়া বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে হেনরীর জমি, ফ্ল্যাটসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেশে এইচএমপি ভাইরাস শনাক্ত ২৬ ফুট লম্বা স্যান্ডেল, গিনেসে নাম উঠছে সানিয়ার দীর্ঘমেয়াদী ও বড় ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ইরান

মিরসরাইয়ে এখনও প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে

স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এখনো পানিবন্দি রয়েছে প্রায় দুই লাখ মানুষ। কয়েকটি এলাকায় পানি কিছুটা কমলেও নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে অন্যান্য এলাকা। টানা চারদিন বিভিন্ন বহুতল ভবনে আটকে রয়েছেন শত শত মানুষ।

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে এখানকার ফেনী নদীর পানির উচ্চতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বুধবার থেকে ১১টি ইউনিয়নের প্রায় ১৬৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। রোববারও কয়েকটি ইউনিয়নে ক্রমাগত পাড়ি বাড়ায় অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। বানের পানিতে ভেসে গেছে হাজার কোটি টাকা মূল্যের মাছ। যা চট্টগ্রামের মৎস্য চাহিদার ৭০ ভাগ পূরণ করতো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একদিকে বন্যায় পানিবন্দি লাখো অসহায় মানুষ, অন্যদিকে ফেনী নদীর ভাটিতে অবস্থিত দেশের বৃহত্তর সেচ প্রকল্প মুহুরীর দুটি গেইট পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। অকেজো আছে আরও দুইটি গেইট। এ কারণে একদিকে জোয়ারের সময় ফেনী নদী হয়ে ঢুকছে বঙ্গোপসাগরের পানি, আবার ভাটার সময় দুটি গেইট অকেজো থাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে ১৯৯৪ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মিরসরাইয়ের জনবসতি রক্ষায় চর ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় এখানকার বাঁশখালী ও ইছাখালী মৌজায় ১১.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সাগর প্রতিরক্ষা বাঁধ তৈরি করে। যা গত কয়েকদিনের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

বাঁধ এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, বাঁধের অনেক স্থানে ফটল দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে এলাকার লোকজন চরম আতঙ্কের মধ্যে সময় অতিবাহিত করছে।

এ বিষয়ে এবং মুহুরী প্রকল্পের গেট ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ারকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এদিকে কয়েকদিনের বন্যায় চট্টগ্রামের মৎস্য উৎপাদনের অন্যতম জোন হিসেবে পরিচিত মুহুরী প্রজেক্ট এলাকার কয়েক হাজর একর মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে এখানকার চাষিদের ৫০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুহুরী প্রজেক্ট মৎস্যচাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।

 

তিনি বলেন, বন্যা শুরু হয়েছে গত বুধবার। তার পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে মাছের ঘের ডুবতে শুরু করে। বর্তমানে এখানকার কয়েক হাজার একর ঘের পানির নিচে। এখানে সরকারি হিসাবে প্রতি বছর ৪৯ হাজার মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হতো। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। এবারের বন্যায় এগুলোর অর্ধেকেরও বেশি ঘের পানিতে ডুবে সব মাছ ভেসে গেছে।

মিরসরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার নাসিম আল মাহমুদ জানান, এ বছর মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার মেট্রিক টন। তবে বন্যায় অধিকাংশ মাছের ঘের ডুবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো ক্ষতির হিসাব বলা যাচ্ছে না।

অপরদিকে গত কয়েকদিন বন্যার কারণে দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে বিবেচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিল। রোববার সকাল থেকে ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে গত কয়েকদিন পথে আটকে থাকার কারণে মালবাহী অনেক যানবাহনে থাকা নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচা পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে।

মিরসরাই উপজেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় গঠিত কমিটির অন্যতম সদস্য মিরসরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খাঁন জানান, রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত উপজেলার ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই আবার আশ্রয়কেন্দ্র থেকে আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন ত্রাণ কার্যক্রম মনিটরিং করছে।

মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী সর্বশেষ বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে জানান, শনিবার রাত থেকে রোববার পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কিছু কিছু এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, যুব রেডক্রিসেন্ট অ্যালমনাই, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং শিক্ষার্থীরা পৃথক পৃথকভাবে বানভাসি মানুষদের উদ্ধার এবং তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানিয়, ওষুধ ও খাবার বিতরণ করছে।

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ বারইয়ারহাট জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হেদায়েত উল্যাহ ও মিরসরাই জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আদনান আহমেদ জানান, কিছু কিছু এলাকায় পানির তীব্রতা কমে যাওয়ায় বিদ্যৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। এখনো বন্যাকবলিত অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎসেবা দেওয়া যাচ্ছে না।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com