জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩। তবে প্রজ্ঞাপন এখনই কার্যকর হচ্ছে না। ঈদের ছুটি শেষে মিল-কারাখানা চালু হলে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে।
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর মিরসরাই জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বর্তমানে প্রতিদিন ১১৩ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে ৪০ মেঘাওয়াট, নিজামপুর সাবস্টেশনের আওতায় ১৪ মেঘাওয়াট, মঘাদিয়া সাবস্টেশনের আওতায় ১০ মেঘাওয়াট, মিঠাছরা সাবস্টেশনের আওতায় ১৪ মেঘাওয়াট, আবুরহাট সাবস্টেশনের আওতায় ১০ মেঘাওয়াট, ছদরমাদিঘী (সোনাপাহাড়) সাবস্টেশনের আওতায় ১৫ মেঘাওয়াট ও করেরহাট সাবস্টেশনের আওতায় ১০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের আগে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকায় বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ ছিল। তবে ঈদের আগের দিন থেকে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ রয়েছে। তেমন লোডশেডিং হচ্ছে না।
এদিকে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় মিরসরাই পৌর সদরের কাশেম শপিং সেন্টারের ব্যবসায়ী ও আর ফ্যাশনের সত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ রিপন বলেন, ‘একে তো অসহ্য ভ্যাপসা গরম। এরওপর এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং থাকবে। কী করে ব্যবসা করবো বুঝতে পারছি না।’
বারইয়ারহাট এলাকার ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কোন ফিডারে কখন বিদ্যুৎ থাকবে, কখন থাকবে না সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা কী করে বুঝবে। কর্তৃপক্ষের উচিত এলাকায় ও বাজারে মাইকিং করে সবাইকে জানানো।’
মিরসরাই জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সাইফুল আহমেদ বলেন, জ্বালানি সংকটের কারণেই পাওয়ার প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাই কখন কী হবে বলা যাচ্ছে না। ওপর থেকে যে নির্দেশনা আসছে আমরা সেভাবেই কাজ করছি। তবে এ কয়দিন তো লোডশেডিং হচ্ছে না। ঈদের ছুটির কারণে মিলকারাখানা এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। মিলকারাখানা পুরোদমে চালু হলে এখানে লোডশেডিং হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং থাকবে। তবে একদিন যে সময় লোডশেডিং থাকবে পরেরদিন সে সময় থাকবে না। জোড়-বিজোড় তারিখ হিসাব করে শিডিউল করা হয়েছে। আবার একটি সাবস্টেশনের আওতায় চারটি ফিডার থাকলে দুটিতে লোডশেডিং থাকবে, দুটি চালু থাকবে।’
বারইয়ারহাট জোনাল অফিসের ডিজিএম আবু জাফর বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় ফিডার অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু ও বন্ধ থাকবে। যেমন করেরহাট সাবস্টেশনের আওতায় ছয়টি ফিডার রয়েছে। সেখানে প্রতি ঘণ্টায় তিনটি ফিডার লোডশেডিং থাকবে এবং তিনটি চালু থাকবে। উপজেলায় ছয়টি সাবস্টেশনের আওতায় ৩১টি ফিডার রয়েছে। পর্যায়ক্রমে ফিডারগুলো লোডশেডিং ও চালু থাকবে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও হতে পারে।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ