বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরের জঙ্গি আস্তানায় সাতজনের দগ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। আজ বেলা সোয়া তিনটার পর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ এ কথা জানান।
ঘটনাস্থলের কাছে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, আজ ভবনে সাতজনের কঙ্কাল হয়ে যাওয়া দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। কক্ষের মধ্যে এখন ৫৫ থেকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রয়েছে।
বেনজীর আহমেদ বলেন, নিহতদের মধ্যে জঙ্গি আব্দুল্লাহ, তাঁর দুই স্ত্রী, দুই ছেলে এবং বাকি দুজন কর্মচারী বলে ধারণা করা হচ্ছে। আব্দুল্লাহ জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের আল-আনসার সদস্য ছিলেন। তিনি বলেন, জেএমবির এই অংশটির প্রধান সারোয়ার জাহান, কানাডীয় নাগরিক তামিম চৌধুরী, অংশটির আরেক নেতা সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজসহ অনেকেই আব্দুল্লাহর বাড়িতে ঘুমিয়েছেন। সারোয়ার-তামিম অংশটি ভেঙে যাওয়ার আগে পুরোনো অংশের এক শুরার সদস্য, তাঁর নাম আমি বলতে চাই না, তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর আব্দুল্লাহর বিষয়ে জানিয়েছিলেন।
বেনজীর আহমেদ জানান, বিস্ফোরণ হওয়া বাড়িটিতে কবুতরের খামার ছিল। বিস্ফোরণে অনেকগুলো কবুতর মারা গেছে। তিনি বলেন, এখানে রাসায়নিক বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত সোমবার রাত ১১টার দিকে মিরপুর মাজার রোডের বর্ধনবাড়ি এলাকার ‘কমল প্রভা’ নামের বাড়িটি ঘেরাও করে র্যাব। বাড়ির পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে জঙ্গিদের অবস্থান র্যাব চিহ্নিত করে। পরে বাড়ির বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
এক প্রবাসীর মালিকানাধীন ছয়তলা বাড়িটির ২৪টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ২৩টি ফ্ল্যাটের ৬৫ জন বাসিন্দাকে সোমবার রাতেই সরিয়ে নেয় র্যাব।
জঙ্গি আস্তানাটি ঘিরে রাখার প্রায় ২৪ ঘণ্টার মাথায় গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বাড়িটিতে পরপর তিনটি বড় ধরনের বিস্ফোরণ হয়। বাড়ি থেকে আগুন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী বের হয়।
বিস্ফোরণের পর র্যাবের কর্মকর্তারা বলেন, বাড়ির ভেতরে থাকা জঙ্গিরা নিজেরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।
এ ছাড়া আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। আজ সকালে ওই ভবনে তল্লাশি শুরু করেন বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
র্যাব-৪-এর সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আউয়াল জানান, জঙ্গি আবদুল্লাহর গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গায়। তাঁর বাবা ইউসুফ আলী অনেক আগেই মারা গেছেন। ওই আস্তানায় আবদুল্লাহর সঙ্গে তাঁর দুই স্ত্রী ফাতেমা ও নাসরিন ছিলেন। ছিল দুই শিশু ওসামা ও ওমর। সঙ্গে আবদুল্লাহর দুই সহযোগীও ছিলেন। তিনি জানান, আবদুল্লাহর চুয়াডাঙ্গার বাড়ি থেকে তাঁর বোন মেহেরুন্নেসা মেরিনাকে আটক করে র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
আজও ওই আস্তানার আশপাশে কড়া অবস্থানে রয়েছে র্যাব। গাবতলীর দিক থেকে ওই এলাকায় যাওয়ার পথ বন্ধ রয়েছে।
আজ সকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ও র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ওই এলাকা পরিদর্শন করেন।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস