মিয়ানমার থেকে শত শত গুলি ও মর্টার শেল এসে পড়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের নয়াপড়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সীমান্তের রহমতের বিল এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মিয়ানমারের ভেতর জান্তার বাহিনী ও বিদ্রোহীদের সংঘাতের কারণে সীমান্তে গুলি এসে পড়ছে বলে দাবি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ফলে সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বিজিবি জানিয়েছে, ২০-২৫ জনের একটি দল আজ শুক্রবার দুপুরে মিয়ানমার থেকে আসা অবিস্ফোরিত মর্টার শেল ও বোমা নিষ্ক্রিয় করে। এ সময় বিকট শব্দ হয়। এর কয়েক মিনিট পর মিয়ানমারের ভেতর তুমুল গোলাগুলি শুরু হয়। এতে এপারেও গুলি ও মর্টার সেল আসতে থাকে।
স্থানীরা জানান, আজ সকাল থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের নয়াপড়া সীমান্ত এলাকায় বিজিবি, সেনা বাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয় দলের ২০-২৫ সদস্যরা অবিস্ফোরিত বোমা বা মর্টার শেল বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়া এলাকা থেকে একের পর এক গুলি আসতে থাকে। এ সময় কয়েক শত গুলি ছোড়া হয়। এপারের লোকজনকে লক্ষ্য করেই এই গুলি ও মর্টার সেল ছোড়া হয়েছে। এ সময় স্থানীয় লোকজন দিকবিদিক ছুটতে থাকে। আবার অনেকেই জমিতে শুয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে সবাই নিরাপদ স্থানে চলে যায়। গোলাগুলির পর থেকে সীমান্তে আবারও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘটনাস্থলে থাকা বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়ন কর্মকর্তা লে. কর্ণেল আজিজ জানিয়েছেন, মিয়ানমারের ভেতরে দুপক্ষের সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হচ্ছে। এর জের ধরে এ পারে গুলি এসে পড়েছে।
এদিকে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের মধ্যে বাংলাদেশে সীমান্ত পরিস্থিতি দুই দিন শান্ত থাকলেও গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওপারে মুহুর্মুহু গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাওয়া গেছে। এবার গুলির শব্দ পাওয়া গেছে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নাফ নদ সীমান্তের ওপারে।
আজ সকালে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কানজরপাড়া সীমান্তের নাফ নদের ওপারে গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাওয়া যায়।’
বর্তমানে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্ত ও উখিয়ার পালংখালীর পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম ও পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী।
অপরদিকে, উখিয়া উপজেলার থাইংখালী সীমান্ত এলাকায় অজ্ঞাত দুটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। তারা বিষয়টি পাশের বিজিবি সীমান্ত চৌকিতে অবহিত করেন। পরে বিজিবির মাধ্যমে মরদেহ উদ্ধারে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। তবে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমান্তে মুহুর্মুহু গুলির কারণে পুলিশ ও বিজিবি মরদেহ দুটি উদ্ধার করতে পারেননি।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সীমান্তে দুইটি মরদেহ পড়ে থাকার খবরটি বিজিবি জানিয়েছে। তবে সীমান্তে গোলাগুলির কারণে এখনো মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ