বাংলা৭১নিউজ, হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: গ্রামবাংলার ঐতিহ্য মাসকালাইয়ের হাতের রুটি তৈরি ও বিক্রি করে ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুরের হিলির আলিয়া বেগম। বিকাল ৪ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে তার এই বেচাকেনা। মাসকালাই রুটি বিক্রি করেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন।
দেখা গেছে, হিলির মহিলা কলেজ সংলগ্ন জয়পুরহাট বাসস্ট্যান্ডে তৈরি করছেন তিনি মাসকালাইয়ের রুটি। দোকানের সামনে রাখা ব্র্যাঞ্চে বসে কয়েকজন বাসযাত্রী তার হাতের তৈরি রুটি খাচ্ছেন। তাদের খাওয়ার গতি দেখে অনুমান করা যাচ্ছে,তারা মনে হয় অনেকদিন ধরে এই খাবার খুঁজে আসছেন।
এক সময়ের রুটির দেশ কুষ্টিয়া জেলায় এই রুটির প্রচলন ছিলো। এখন আর আগের মত শোনা যায় না। তবে রাজশাহী জেলার অনেক স্থানে এই মাসকালাইয়ের রুটি বিক্রি করতে দেখা যায়।
একজন ৬০ বছর বয়সী বাসযাত্রীর সাথে কথা হয় তিনি বলেন, মাসকলাইয়ের রুটি বানানো দেখে আমি আর লোভ সামলাতে পারলাম না। অনেক আগে যখন মা বেঁচে ছিলেন তখন তিনি মাঝে মধ্যে মাসকালাইয়ের রুটি বাড়ীতে তৈরি করতেন। এখনও সেই মায়ের হাতের রুটির স্বাদ অনুভব করি। আজ এই মহিলার হাতের বানানো মাসকালাইয়ের রুটি খেয়ে আমার মায়ের কথা মনে পড়ে গেলো।
জহিরুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা জানায়, বেশ কয়েক বছর যাবত প্রতিদিন দুইটা করে রুটি খাই। তার হাতের রুটি না খেলে আমার পেট ভরে না।
আলিয়া বেগম (৫০) জানান, আমি প্রায় ১৮ বছর ধরে মহিলা কলেজ এবং এই বাসস্ট্যান্ডে মাসকালাইয়ের রুটি তৈরি করে আসছি। চাউল ও মাসকালাইয়ের ডাল মিলে প্রতিদিন ৫ কেজি করে আটা তৈরি করি। তা থেকে প্রায় ৫০ টি রুটি হয়।প্রতিটি রুটি ১০ টাকা করে বিক্রি করি। রুটির সাথে শুকনা মরিচ পেঁয়াজের চাটনি ও ধনাপাতার ভর্তা দিয়ে থাকি। প্রায় সময় ক্রেতার এতো ভিড় হয় আমি রুটি তৈরি করতে হিমশিম খায়। প্রতিদিন এথেকে দুই থেকে আড়াই’শ টাকা আয় হয়। তাই দিয়ে এক ছেলে দুই মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ