বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: কর্পোরেট মুনাফাবাদের বিরোধিতা করে এবং ‘রাজনৈতিক বিপ্লব’ ঘটানোর প্রত্যয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রচারণা শুরু করেছেন মার্কিন সিনেটর ও ডেমেক্র্যাট রাজনীতিবিদ বার্নি স্যান্ডার্স।
নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে এক বক্তব্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে অ্যামেরিকার ‘সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
ভারমন্ট অঞ্চলের ৭৭ বছর বয়সী স্বতন্ত্র সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের হয়ে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে হিলারি ক্লিন্টনের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। তিনি আরো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
এবার ডেমোক্র্যাটদের হয়ে প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন পেতে আরো অন্তত ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করবেন।এদের মধ্যে রয়েছেন ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, নিউ জার্সির সিনেটর কোরি বুকার আর স্যান অ্যান্টনিওর মেয়র হুলিয়ান ক্যাস্ত্রো।
স্যান্ডার্স তাঁর বক্তব্যে অঙ্গীকার করেছেন যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ‘মানুষকে ঐক্যবদ্ধ’ করবেন।
বেশকিছু নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি এবং ‘ধনিক শ্রেণী’ ও তাদের লোভকে প্রতিহত করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মি. স্যান্ডার্স ‘অর্থনৈতিক, সামাজিক, জাতিগত ও পরিবেশগত ন্যায়বিচার’ নিশ্চিত করার বিষয়টিতেও কাজ করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন।
ব্রুকলিনে জন্ম নেয়া মি. স্যান্ডার্স তার বক্তব্যের একপর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে নিজের তুলনাও তুলে ধরেন।
মি. স্যান্ডার্স রঙ বিক্রেতার কাজ করা একজন ইহুদি অভিবাসীর সন্তান হিসেবে অ্যামেরিকায় বড় হয়েছেন, যেখানে মি. ট্রাম্প একজন ধনী রিয়েল এস্টেট ডেভলাপারের পুত্র।
“আমার বাবা আমাকে অঢেল সম্পদ দিয়ে যাননি যা দিয়ে বিলাসবহুল অট্টালিকা বা আমোদের জন্য কান্ট্রি ক্লাব তৈরি করা যায়।
কিন্তু তিনি আমার সামনে একজন আদর্শ পিতার উদাহরণ তৈরি করে গেছেন, যিনি অর্থ-বিত্ত ছাড়াই অসীম সাহসের সাথে নতুন জীবনের জন্য লড়াই করতে সক্ষম ছিলেন।”
মি. স্যান্ডার্স যখন এই বক্তব্য রাখছিলেন সেসময় ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বক্তব্যে ডেমোক্র্যাটদের পরিকল্পনার সমালোচনা করেন এবং পরের নির্বাচনে জয়ের আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেন।
মার্কিন কংগ্রেসের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে স্বতন্ত্র সিনেটর হিসেবে ছিলেন বার্নি স্যান্ডার্স।
তবে ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকানদের হয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা না করলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যাবে বলে ডেমোক্র্যাটদের হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন বলে জানান তিনি।
তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা করেছেন এবং ১৯৬০ ও ১৯৭০ এর দশকে যুদ্ধবিরোধী এবং নাগরিক অধিকারের জন্য হওয়া আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন।
১৯৯৯০ সালে ৪০ বছরের মধ্যে প্রথম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মার্কিন প্রতিনিধি সভার একজন প্রতিনিধি নির্বাচিত হন মি. স্যান্ডার্স।
২০০৭ সালে সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি প্রতিনিধি সভায় অন্তর্ভূক্ত ছিলেন।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শুরুতে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত না হলেও কয়েকটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তাঁর বিতর্ক প্রচারিত হবার পর হঠাৎই তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
নিজেকে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে দাবী করা মি. স্যান্ডার্স এমন একটি অর্থনীতি তৈরি করার প্রত্যাশা করেন ‘যা শুধু ধনীদের জন্য নয়, সব পর্যায়ের মানুষের জন্য’ কাজ করবে।
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:বিবিসি বাংলা