শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মুম্বাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬ চাঁদপুরে একের পর এক দেখা মিলছে রাসেলস ভাইপারের মুসলিম দেশ ঐক্যবদ্ধ থাকলে গাজার বিপর্যয় রোধ করা যেত ঢাকায় আজ বিএনপির সমাবেশ, আ. লীগের আলোচনা সভা ইরানে চলছে ভোট গণনা, এগিয়ে কট্টরপন্থি জালিলি সক্রিয় মৌসুমি বায়ু, ৬ বিভাগে বৃষ্টি থাকবে ৩ দিন গাজায় ৬ লাখেরও বেশি শিশু ৮ মাস ধরে স্কুলে যেতে পারছে না: জাতিসংঘ ভিনিসিউস জাদুতে বড় জয় ব্রাজিলের এসএসএফ সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালালে ‘ধ্বংসকারী যুদ্ধ শুরু হবে’ সাগরে লঘুচাপ, বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত চট্টগ্রামে মার্কেটে ভয়াবহ আগুন, নিহত ৩ ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু: ওবায়দুল কাদের বিষয় ছাড়া কীভাবে ডায়ালগ হবে? প্রধানমন্ত্রীকে ড. ইউনূসের প্রশ্ন সব ধরনের সবজির বাজার উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল পাউবো’র ৮টি জোনের মধ্যে প্রথম স্থানে ফরিদপুর মুখোমুখি বিতর্কে বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্প এগিয়ে আজ ফুটবলার রাউল গঞ্জালেজের জন্মদিন ‘খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন, দায় সরকারের না’ ৪০ লাখ ডলার জেতার আনন্দে হার্ট অ্যাটাক করলেন তিনি

মাদক কারবারি চক্রের কাছে জিম্মি এলাকাবাসী

ভোলা প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় দুই-চার জন রাজনৈতিক নেতার ছাত্র ছায়ায় প্রকাশ্যে এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে মাদকের করালগ্রাসে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংস হচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ বাঁধা দিলেই তাকে মারধর করে মাদক দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয় চক্রটি।

এ চক্রটির মূল ঘাটি উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নে। এ ইউনিয়ন থেকেই আশপাশের ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা লালমোহনেও মাদক ছড়িয়ে পড়ছে। এদের কাছে ওই ইউনিয়নের মানুষ এখন জিম্মি।

মাদক চক্রের মূল হোতা শম্ভুপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে চর কোড়ালমারা গ্রামের কাঞ্চন মিঝির মেঝো ছেলে নুরে আলম। নুরে আলমের সঙ্গে তাঁর ছোট ভাই নুর নবী, বড় ভাই বজলুসহ ১০-১৫ জন সহযোগী রয়েছে। এদের মদদদাতাদের মধ্যে শম্ভুপুর ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতা শামীমের নামও রয়েছে। শামীম এক সময় বিএনপি করলেও এখন তিনি নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে থাকেন। যাদিও ছাত্রলীগে তাঁর কোনো পদবী না থাকলেও আওয়ামী লীগের দলীয় সভা সমাবেশেও থাকেন নিয়মিত।

এদিকে মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেওয়ায় গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) ওই এলাকার মো. নসু নামের এক গাছকাটা শ্রমিককে বৈদ্যুতিক খুটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে দিয়েছে নুরে আলম সহ তাঁর সহযোগীরা। পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় দুই দিন পর নসুকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নসুকে মারধর ও ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে নুরে আলম ও তাঁর ছোট ভাইকে নুর নবীসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে করে থানায় পৃথক দুইটি মামলা করা হয়। একটি মাদক মামলা, সেটির বাদী তজুমদ্দিন থানার এসআই মামুনুর রশিদ। অপরটির বাদী মো. নসু নিজে।  

এর আগেও এলাকায় মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেওয়ায় ওই এলাকার অটোচালক রাকিব ও শাহাবুদ্দিনকে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে দিয়েছে নুরে আলম ও তাঁর সহযোগীরা। মিথ্যা মাদক মামলায় প্রায় তিন মাস জেল খেটে রাকিব ও শাহাবুদ্দিন এখন নুরে আলমের ভয়ে এলাকা ছাড়া।

ভুক্তভোগী শ্রমিক মো. নসু অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে কোড়ালমারা গ্রামের কাঞ্চন মিঝির ছেলে নুরে আলম, নুর নবী ও বজলুসহ স্থানীয় ১০-১২ জনের একটি চক্র এলাকায় মাদক বিক্রি করে আসছে। এদের কারণে এলাকার উঠতি বয়সের ছেলেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে।

এমনকি তাঁরা তজুমদ্দিন উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী লালমোহন উপজেলায় গিয়েও ইয়াবা ও গাঁজা বিক্রি করে। এলাকায় মাদক বিক্রি করতে নিষেধ করায় নুরে আলম ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগ নেতা শামীমসহ ১০-১২ জন মিলে আমাকে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে মারধর করে ধরে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে। পরে প্রকাশ্যে সকলের সামনে আমার পরনের লুঙ্গির ভাজে ইয়াবা দিয়ে তজুমদ্দিন থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে ইয়াবাসহ থানায় নিয়ে যায়।

বুধবার (২৩ মার্চ) সরজমিনে তজুমদ্দিন উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের কোড়ালমারা গ্রামে গেলে সেখানকার বাসিন্দা সিরাজ, আবুল কাশেম, ভুট্টু, মিলন, মিরাজসহ প্রায় ২০-২৫ জনের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানায়, নুরে আলম ও তাঁর দুই ভাইসহ স্থানীয় একটি মাদক চক্র দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় ইয়াবা বিক্রি করে আসছে। এদেরকে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় ছাত্রলীগ নেতা মো. শামীম।

ইয়াবা চক্রটি কোনো জামেলায় পড়লেই শামীম তাদেরকে সহযোগিতা করে থাকে। এরা এলাকার কাউকে মানে না। এদেরকে কেউ বাঁধা দিলেই তাদেরকে গালমন্দসহ মারধর করে। এমনকি যারা তাঁদের এ কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তাদেরকে ইয়াবা বা গাঁজা দিয়ে তাকে পুলিশে দিয়ে দেয়। গত ছয় মাসে এালাকায় এমন তিনটি ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য স্থানীয়রা এদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না। এলাকাবাসী সবাই এদের আতঙ্কে থাকে।

স্থানীয়রা আরো জানায়, নুরে আলমসহ তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। মাদক মামলায় নুরে আলম একাধিকবার জেলও খেটেছে। তারপরও তিনি মাদক থেকে ফিরে আসেনি।

নুরে আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘নসুর কারণে তিন মাস আগে আমি দুই মাস জেল খেটে বের হয়েছি। সে আমাকে জেল খাটিয়েছে। নসুকে আমি মারধর করি নাই। বরং স্থানীয়রা নসুকে মাদক সেবন করতে দেখে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দিয়েছে। ‘

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তজুমদ্দিন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান নসুকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে। দুই মামলাই নুরে আলম ও তাঁর ভাই নুর নবীসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ ছাড়াও নুরে আলমের বিরুদ্ধে পূর্বের দুইটি মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি। এ ছাড়াও তজুমদ্দিনে ইয়াবাসহ কাউকে ধরা হলেই তাকে জিজ্ঞেস করলেই সে নুরে আলমের কথা বলে। তবে এ ঘটনার পর থেকে নুরে আলমসহ তাঁর সহযোগীরা গাঁ ঢাকা দিয়েছে। আমরা মামলায় অভিযুক্তদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করছি খুব শিগগির তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারব। ‘

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com