বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: চাঁদে চলবে রোভার। জোরে নয় খুব আস্তে। কী করবে রাস্তাটা তো ঢাকা-চট্টগ্রাম বা ডানকুনি-দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের মতো রেশমি নয়। অভিকর্ষের শক্তি সামান্য। অনেক জায়গায় শূন্যতা। প্রতিকূলতায় চলবে সেকেন্ডে মাত্র দু’সেন্টিমিটার। ওজন ২৫ কেজি। অ্যালুমিনিয়ামে তৈরি ৬ চাকার গাড়ি।
আয়েস করে বেড়ানোর জন্য নিশ্চয়ই নয়। ঘুরে ফিরে চাঁদের তথ্য সংগ্রহ করাটাই কাজ। যা করার করতে হবে ১৪ দিনে। ওই ক’দিনই তার আয়ু। চন্দ্রযান-২’এর মহাকাশ অভিযানের দেরি নেই। ইসরো বা ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন আর রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগ। সফল হলে চাঁদকে চেনা যাবে বেশি করে। ইসরো তৈরি করছে দু’টি রোভার। শেষ করতে একটু বাকি। রোভার পেট্রল ডিজেল নয়, লেজারে চলে। নিখুঁত প্রযুক্তিতে গতিময়।
শুধু চন্দ্র অভিযান নয়, মহাকাশে অনেক কাজ। সেখানেই মানুষে মানুষে সংযোগের সেতু। স্যাটেলাইটে টেলি যোগাযোগ। ভারতে ১৯৮০-র ১৮ জুলাই প্রথম দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল এসএনভি-৩, মহাকাশের দিকে যাত্রা করে। এর সাহায্যে ৪০ কেজি ওজনের ‘রোহিনী’ উপগ্রহ পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। আরও দু’টি উৎক্ষেপণ হয় ১৯৮১ আর ১৯৮৩তে। টেলিযোগাযোগ, টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সম্প্রচার, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানানোয় এর জুড়ি নেই। এ কাজে সাহায্য করতে গড়ে উঠেছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্যাটেলাইট সিস্টেম বা ইনসেট।
১৯৭২-এ ভারত সরকার স্পেস কমিশন আর ডিপার্টমেন্ট অব স্পেস বা মহাকাশ বিভাগ গঠন করে। উদ্দেশ্য ছিল, দু’টি সংস্থার মাধ্যমে মহাকাশ প্রযুক্তির উন্নয়ন যা দেশের কাজে লাগে। দু’য়েরই সদর দফতর বেঙ্গালুরুতে। মহাকাশ বিভাগ আর ইসরোর তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মহাকাশ গবেষণা চালাচ্ছে।
এ বার মহাকাশে ভারতের সঙ্গী বাংলাদেশ। তারাও ভারতের পাঠানো উপগ্রহে অংশ নেবে। বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ আর ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা চুক্তিতে সই করেছেন। দু’টি দেশ আকাশ ছুয়ে মহাকাশে পৌঁছবে। উপগ্রহটি তৈরি। শেষ বারের মতো পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। দ্রুত উৎক্ষেপণ করা হবে। খরচ ৪০ কোটি ডলার। পুরোটাই দেবে ভারত। ‘সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইট’ এখন বাংলাদেশ-ভারতের চোখের মণি। মহাকাশে স্থাপিত হওয়ার প্রহর গুনছে। এর ১২টি টান্সপন্ডারের একটি বিনামূল্যে পাবে বাংলাদেশ।
চিন্তায় পাকিস্তান। এটা কী করে হয়। মহাকাশেও ভারতের পাশে বাংলাদেশ। স্যাটেলাইটও চলবে যৌথ সহযোগিতায়। দ্বিপাক্ষিক ঘনিষ্ঠতার মাশুল দিতে হবে না তো পাকিস্তানকে। দু’টি দেশের মহাকাশ মিলনে নতুন ছন্দে ফিরেছে সার্ক। বাংলাদেশের মতই মহাকাশে ভারতের সহযোগী হতে চাইছে নেপাল, ভুটান। তারাও কথাবার্তা শুরু করেছে। তাদের দেখে বায়না ধরেছে ইন্দোনেশিয়া।
সার্কের সদস্য না হয়েও মহাকাশে ভারতের মিত্র হওয়ার দাবি। সেটা পূরণ হলে ভালই হবে। সার্ক বাদে আশপাশের অন্য দেশও এক মঞ্চে আসার সুযোগ পাবে। উন্নত যোগাযোগে একে অন্যকে কাছে টানতে পারবে সহজেই।
বাংলা৭১নিউজ/সংগৃহিত: আনন্দবাজার পত্রিকা