বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: ভারতের আসাম রাজ্য থেকে মুসলমানদের বিতারিত করতে যে বিতর্কিত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে রবিবার মধ্যরাতে, তা আজ সোমবার সকালে আসাম রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে টাঙ্গিয়ে দেয়া হবে। এরমধ্যে দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারি নামধারিদের নতুন করে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করার পায়তারা শুরু হবে।কিম্বা এসব তথাকথিত অবৈধদের ভারত কোথায় ঠেলে দেবে?
ইতোমধ্যেই আসামজুড়ে এই তালিকা তৈরি নিয়ে বিতর্ক ও আন্দোলন চালিয়ে আসছে সেখানকার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠন। এই তালিকা নিয়ে আসামে বসবাসকারি ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ কররছে। এই তালিকায় যাদের নাম থাকবে, তারাই কেবল আসাম তথা ভারতের বৈধ নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন এবং রাজ্যের বাদবাকি বাসিন্দাদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য করা হবে – এই কারণেই তালিকাটিকে ঘিরে এত বিতর্ক।
তবে এদিন মধ্যরাতে যে তালিকাটি প্রকাশ করা হবে সেটিই চূড়ান্ত তালিকা নয়, এর পরেও অন্তত আরও দুটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে – আসাম সরকার এ কথা স্পষ্ট করে দেওয়ার পর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও কিছুটা প্রশমিত হয়েছে।
এদিকে, বিবিসি বাংলার দিল্লী প্রতিনিধি শুভজ্যোতি ঘোষ এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের সরকার রবিবার ঠিক মধ্যরাতে সেখানকার বৈধ ভারতীয় নাগরিকদের প্রথম খসড়া তালিকাটি প্রকাশ করতে চলেছে।
৩১শে ডিসেম্বর, অর্থাৎ বছরের শেষ দিনে ঠিক রাত বারোটায় এই তালিকাটি অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। আর পরদিন সোমবার স্থানীয় সময় সকাল আটটায় রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে তালিকার প্রতিলিপি টাঙিয়ে দেওয়া হবে।
‘ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস’ (এনআরসি) নামে এই বহুল-আলোচিত তালিকা থেকে রাজ্যের বহু বাংলা ভাষাভাষী মুসলিম বাদ পড়তে পারেন, এই আশঙ্কা থেকে তালিকাটিকে ঘিরে রাজ্য জুড়ে তীব্র বিতর্ক আর উৎকণ্ঠাও তৈরি হয়েছে।
এই তালিকায় যাদের নাম থাকবে, তারাই কেবল আসাম তথা ভারতের বৈধ নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন এবং রাজ্যের বাদবাকি বাসিন্দাদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য করা হবে – এই কারণেই তালিকাটিকে ঘিরে এত বিতর্ক।
তবে এদিন মধ্যরাতে যে তালিকাটি প্রকাশ করা হবে সেটিই চূড়ান্ত তালিকা নয়, এর পরেও অন্তত আরও দুটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে – আসাম সরকার এ কথা স্পষ্ট করে দেওয়ার পর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও কিছুটা প্রশমিত হয়েছে।
রাজ্যের মানবাধিকার আইনজীবী আমন ওয়াদুদ, যিনি আসামের বহু বাঙালি মুসলিমের কেস নিয়ে লড়ছেন, তিনিও এদিন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন সরকারের এই ঘোষণার ফলে অনেকটাই স্বস্তি ফিরে এসেছে।
তিনি বলেন, “যে সোয়া তিন কোটিরও বেশি লোক এই তালিকাভুক্ত হওয়ার আবেদন করেছিলেন তার মধ্যে প্রথম খসড়া তালিকায় সোয়া দুই কোটি মতো লোকের নাম থাকছে। কিন্তু আপাতত যেটা স্বস্তির বিষয় তা হল বৈধ নাগরিকদের নামের তালিকা এখানেই শেষ হয়ে
যাচ্ছে না।”
আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালও ইতিমধ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রথম তালিকায় যাদের ঠাঁই হচ্ছে না, তাদের অনেকেরই নথিপত্র পরীক্ষা এখনও বাকি আছে।
নাগরিকত্বের সে সব প্রমাণ যাচাই-বাছাই করে তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় খসড়াও মাসকয়েকের মধ্যেই প্রকাশিত হবে।
তবে এই তালিকা প্রকাশের আগে গোটা আসাম জুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্তত পঁয়তাল্লিশ হাজার নিরাপত্তাকর্মী গোটা রাজ্যে মোতায়েন রয়েছে, সেনাবাহিনীকেও ‘স্ট্যান্ডবাই’ রাখা হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গুপ্তাও গত সপ্তাহে দুদিন আসামে কাটিয়ে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও তালিকা প্রকাশের আগের প্রস্তুতিপর্ব পর্যালোচনা করে গেছেন।
গোয়েন্দা সূত্রগুলোও জানিয়েছে, তালিকা প্রকাশের সময় আসামের বিশেষত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে গন্ডগোল হতে পারে, এই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে সেখানে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:বিবিসি বাংলা/ এসএইচবি