দেশের শেয়ারবাজারে ভয়াবহ দরপতন হয়েছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (৭ মার্চ) এক দিনেই সূচক কমেছে ২ দশমিক ৭৪ শতাংশে।
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন ৫৭ পয়েন্ট সূচক পতনের স্মৃতি নিয়ে দ্বিতীয় কর্মদিবসে সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর সময় যত গড়িয়েছে, সূচক কেবল পড়েছেই। বেলা শেষে আগের দিনের চেয়ে ১৮২ পয়েন্ট কমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪৫৬ পয়েন্ট।
যে ৩৭৯ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে, তার মধ্যে দাম বেড়েছে কেবল ১০টির। এর মধ্যে আবার তিনটির দাম বেড়েছে এক শতাংশের কম। দর ধরে রাখতে পেরেছে ৮টি কোম্পানি, আর কমেছে ৩৬৪টির দর।
এক দিনে এত বেশি কোম্পানির শেয়ারের দরপতন সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই দরপতনের তালিকায় নাম লেখাতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান, যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মাত্র সাতটি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬৪টির। ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
২০২০ সালের পর এতো বড় দরপতন আর দেখা যায়নি। শেয়ারবাজারের এ দরপতনকে ‘অস্বাভাবিক’ বলছেন বিশ্লেষকরা। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পুঁজি করে কোনো চক্র কম দামে শেয়ার কেনার জন্য এ দরপতন ঘটাচ্ছে।
বাজারসংশ্লিষ্ট একাধিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী ও বেশ কয়েক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দিনের শুরু থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যেই শেয়ার বিক্রির প্রবণতা ছিল সবচেয়ে বেশি।
ডিএসইর তথ্য বলছে, এ বাজারের প্রধান সূচকটি আবারও সাত মাস আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই এ সূচক ৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল। আজ দিন শেষে এ সূচক কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪৫৬ পয়েন্টে। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে সূচক কমতে শুরু করে। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে সূচকের এ পতন আরও ত্বরান্বিত হয়। সঙ্গে লেনদেনও আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়।
ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে অন্য দুই সূচকের। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৩৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ