রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মালয়েশিয়ায় ১৩২ বাংলাদেশি গ্রেফতার ডুমুরিয়ায় অস্তিত্ব সংকটে ৭ নদী জাপানে শক্তিশালী ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুত গতির বাসচাপায় নারী নিহত রোববার থেকে ফের তিনদিনের হিট অ্যালার্ট জারি হতে পারে দাবদাহে ঢাকায় উৎপাদনশীল খাতে বছরে ক্ষতি ২৭০০ কোটি ডলার ঘুমন্ত হেলপারকে পুড়িয়ে হত্যা: একজনের দায় স্বীকার, দুজনের রিমান্ড ভারতীয় মসলায় ক্যানসারের উপাদান: তথ্য সংগ্রহ করছে যুক্তরাষ্ট্র দেশে আলাদা ফরেনসিক বিশ্ববিদ্যালয় এখন সময়ের দাবি : সিআইডি প্রধান গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছে ২৯ প্রতিষ্ঠান নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের আহ্বান প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক ৩ মাসে গ্রামীণফোনের আয় ৩৯৩২ কোটি টাকা, গ্রাহক বেড়েছে ১০ লাখ পাঁচদিনে সোনার দাম কমলো ৬৪৯৭ টাকা প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান প্রতিমন্ত্রীর ঢাকায় দিনে-দুপুরে জুয়েলারি ব্যবসায়ীর সর্বস্ব লুট বনানীতে যাত্রীবাহী বাসে হঠাৎ আগুন হাসপাতালে ডাক্তার না থাকায় অনেককে শোকজ করা হয়েছে বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করতেন তারা

‘ভয়ঙ্কর ব্যাধি রোধে আসুন একত্রে কাজ করি’

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
  • ১০৪ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক তিনটি সংক্রমন ব্যাধি এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে একত্রে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

শুক্রবার কানাডার মন্ট্রিয়েলে অনুষ্ঠিত ফিফথ গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ) রিপ্লেনিসমেন্ট কনফারেন্সের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধযোগ্য এবং এসব রোগ চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন অঙ্গীকার, সংকল্প এবং সংহতি। একত্রে কাজ করার এই অঙ্গীকার এই ব্যাধির অবসান ঘটাতে পারে।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দেশের সব জনগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে তাঁর সরকারের প্রচেষ্টায় বৈশ্বিক তহবিলের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অবকাঠামো, স্বাস্থ্যপণ্য ও সেবায় বিনিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে আমার সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। আমাদের প্রচেষ্টায় আমরা বৈশ্বিক তহবিলের সহায়তা আশা করছি।

এইডস, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্পর্কিত কার্যক্রমের জন্য প্রধান অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে গ্লোবাল ফান্ড। এই তহবিলের সহায়তা কার্যক্রম গোটা বিশ্বব্যাপী, এর মূল লক্ষ্য বিশ্বের সেই সব এলাকা যেখানে এসব রোগব্যাধি বড় বোঝা হয়ে আছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সল, টোগো’র প্রেসিডেন্ট ফুয়ারে গ্রেন্সিভ, গ্লোবাল তহবিলের নির্বাহী পরিচালক মার্ক আর দাইবাল এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা লা ফ্রাঙ্কোফনি’র মহাসচিব মিখায়েল জেন সম্মেলনে বক্তব্য দেন।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এবং লা ফ্রাঙ্কোফনির বিষয়ক কানাডীয় মন্ত্রী ম্যারেই ক্লদি বিবেউ অধিবেশন পরিচালনা করেন।

উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ দিক’ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সমাজের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা অত্যন্ত জরুরি।’ তিনি বলেন, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নির্ভর করে দারিদ্র্য দূরীকরণের ওপর, খাদ্য নিরাপত্তা এবং এমনকি জলবায়ু পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা… সুষম উন্নয়ন সব চ্যালেঞ্জ নির্ভর করে সক্ষম ও টেকসই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব আজ উন্নয়ন প্রত্যাশার এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। দারিদ্র্যমুক্ত সবল একটি বিশ্ব সমাজ সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০১৫ সালে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।’

তিনি বলেন, সক্ষমতা ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত লক্ষ্যসমূহসহ এমডিজি’র লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, গত দুই দশকে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ কমেছে এবং পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুহার ৬৬ শতাংশ ও গত দেড় দশকে নবজাতকের মৃত্যুহার ৬২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের কার্যকর নীতি ও বাস্তবসম্মত কার্যক্রম গ্রহণের ফলে এটি সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২০ সাল নাগাদ ম্যালেরিয়া নির্মূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং গত দু’দশক ধরে এইচআইভি/এইডস প্রাদুর্ভাবের নিম্ন হার বজায় রেখেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ২০০৪ সাল থেকে প্রায় ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করেছি এবং এর মধ্যে ৯৪ শতাংশ রোগীর সফলভাবে চিকিৎসা করা হয়েছে। আমরা এই সাফল্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’

বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে বালিকা ও নারীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের যুক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের অঙ্গীকার বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী তিনটি বিষয় চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, তার সরকার নারীর ক্ষমতায়নের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার শিক্ষার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছে।

তিনি বলেন, আমরা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা এবং তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপবৃত্তি চালু করেছি। এর ফলে তাদের স্কুলে উপস্থিতির হারই শুধু উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি নাবালিকা বিয়ে এবং মা ও শিশু মৃত্যুহারও হ্রাস পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয়ত, সহিংসতার ফলে নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য গম্ভীরভাবে প্রভাবিত হয়। তাই ‘আমরা নারীর বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও বঞ্চনার ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছি।

তিনি বলেন, তৃতীয়ত, তার সরকার দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ১৬ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করেছে। এই ক্লিনিকগুলোর কর্মীদের অধিকাংশই নারী এবং এইসব কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ দেয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত শক্তিশালীকরণে গ্লোবাল ফান্ডসহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, গ্লোবাল ফান্ড বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন সহায়তা করেছে যা, মূলত ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা ও এইচআইভি আক্রান্তদের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করছে।

এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণদানের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে গিয়ে উপস্থাপক এবং কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও ফ্রাঙ্কোফোনি বিষয়ক মন্ত্রী মেরির ক্লদ বিবে বলেন, শেখ হাসিনাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই ‘তিনি নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্তম্ভ’।

আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এইসব মরনঘাতি রোগের মহামারী নির্মূলে তহবিল সংগ্রহের লক্ষে পঞ্চম জিবি সম্মেলনের আয়োজন করেছে কানাডা।

আয়োজকদের মতে, এই সম্মেলন বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক তিনটি রোগ এইডস, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মার মহামারী নির্মূল করতে সারা বিশ্বের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে।

আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া নির্মূলের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে এই সম্মেলনে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ, স্বাস্থ্য ও অর্থমন্ত্রীদের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছে।

আগামী ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মারাত্মক এই তিনটি রোগের কবল থেকে ৮ মিলিয়ন জীবন রক্ষায় ১৩শ’ কোটি মার্কিন ডলার এবং ২০২০ সালের মধ্যে ৩০-৩২ মিলিয়ন জীবন রক্ষায় চার হাজার ১শ’ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল সঙগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে পঞ্চম রিপ্লেনিসমেন্ট সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যার ফলে এসব দেশের ২৯ হাজার কোটি মার্কিন ডলার অর্থনৈতিক সাশ্রয় হবে। এই বিনিয়োগ লাখ লাখ মানুষের জন্য বিশেষ করে গরীব দেশগুলোর নারী ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার সুযোগ সৃষ্টি করবে।

সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) থেকে জন্ম নেয়া প্রতিষ্ঠান হচ্ছে গ্লোবাল ফান্ড। এই ফান্ড বিশ্বজুড়ে রোগের ভারে জর্জরিত ১০০ টিরও বেশি দেশে সহস্রাধিক কর্মসূচি বাস্তয়ানের মাধ্যমে ১৭ মিলিয়নেরও বেশি জীবন রক্ষায় অংশীদার।

প্রতি তিন বছরে একবার গ্লোবাল ফান্ডের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ওয়াশিংটনে পূর্ববর্তী সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন।

বাংলা৭১নিউজ/সিএইস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com