সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন করে ৫৭টি দেশকে ভ্রমণের লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে কাতার। এছাড়া, বাংলাদেশসহ আরও নয়টি দেশকে তারা রেখেছে ‘এক্সেপশনাল রেড লিস্ট’ বা বিশেষ লাল তালিকায়। বুধবার (৫ জানুয়ারি) কাতার সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব টাইমস।
ভ্রমণের ক্ষেত্রে দেশগুলোকে সবুজ ও লাল, এ দুটি তালিকাভুক্ত করেছে কাতার। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় স্বাস্থ্যঝুঁকির সূচক এবং বিভিন্ন দেশের মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় ‘বিশেষ লাল তালিকা’ নামে আরেকটি তালিকা রেখেছে তারা।
কাতারের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, তুরস্ক, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কাসহ অন্তত ৫৭টি দেশকে লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর বিশেষ তালিকায় রাখা হয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মিশর, বতসোয়ানা, লেসোথো, নামিবিয়া ও জিম্বাবুয়েকে।
দেশগুলো থেকে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কাতার সরকারের নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ কার্যকর হবে কাতারি সময় আগামী শনিবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা থেকে।
লাল তালিকাভুক্ত দেশগুলোর ভ্রমণকারীদের অবশ্যই কাতার পৌঁছানোর ৭২ ঘণ্টা আগে পিসিআর টেস্ট করাতে হবে। ভ্রমণকারী কাতারের নাগরিক বা বাসিন্দা হলে যদি তাদের পূর্ণডোজ টিকা নেওয়া থাকে, তাহলে আর কোয়ারেন্টাইনের দরকার পড়বে না। কাতারে পৌঁছানোর পরের ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে তাদের আবারও টেস্ট করাতে হবে। এ ধরনের ভ্রমণকারীদের টিকা নেওয়া না থাকলে সাতদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে এবং ষষ্ঠদিনে আবারও করোনা টেস্ট করাতে হবে। এতে নেগেটিভ প্রমাণিত হলেই বাইরে বেরোনোর অনুমতি পাবেন।
ভ্রমণকারী কাতারের নাগরিক বা বাসিন্দা না হলে পৌঁছানোর আগের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর টেস্ট করাতে হবে। তাদের কাতার সরকার অনুমোদিত টিকা নেওয়া থাকলে পৌঁছানোর পর দুই দিন, না নেওয়া থাকলে সাতদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এছাড়া, শর্তসাপেক্ষে অনুমোদিত টিকা নেওয়া ভ্রমণকারীদের কাতার পৌঁছানোর আগে সোরোলজি অ্যান্টিবডি টেস্ট করানো বাধ্যতামূলক। যদি রওয়ানা দেওয়ার আগে তা করাতে না পারেন, তাহলে পৌঁছানোর পর সাতদিন হোটেল কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
বিশেষ লাল তালিকায় থাকা দেশগুলো থেকে যাওয়া ব্যক্তি যদি কাতারের নাগরিক হন, তাহলে টিকা নেওয়া থাকলে দুই দিন, না নিলে সাতদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। পৌঁছানোর আগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরও পিসিআর টেস্ট করাতে হবে। এ ধরনের ভ্রমণকারীরা টিকা নেওয়া থাকলে পৌঁছানোর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আরেকবার টেস্ট করানো বাধ্যতামূলক। আর টিকা নেওয়া না থাকলে কোয়ারেন্টাইনের ষষ্ঠদিনে আবার করোনা টেস্ট করাতে হবে।
এ ধরনের দেশগুলো থেকে যাওয়া ব্যক্তি যদি কাতারের বাসিন্দা বা জিসিসিভুক্ত কোনো দেশের নাগরিক হন, তাহলে টিকাগ্রহীতাদের দুই দিন এবং টিকা না নেওয়া লোকদের সাতদিন কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক। এই শ্রেণির টিকা নেওয়া ভ্রমণকারীরা পৌঁছানোর প্রথমদিনেই পিসিআর টেস্ট করাবেন। টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের হোটেল কোয়ারেন্টাইনের ষষ্ঠদিনে টেস্ট করানো হবে।
বিশেষ তালিকাভুক্ত দেশগুলো থেকে যাওয়া ব্যক্তি যদি উপরোক্ত দুই শ্রেণির বাইরে, অর্থাৎ কাতার বা জিসিসির নাগরিক বা বাসিন্দা না হন, তাহলে টিকাগ্রহীতা হলে পৌঁছানোর পর দুইদিন হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। পৌঁছানোর প্রথমদিনই তাদের আবারও করোনা পরীক্ষা করানো হবে।
তবে এই শ্রেণির ভ্রমণেচ্ছুকদের টিকা নেওয়া না থাকলে তারা কাতারে ঢুকতে পারবেন না।
কাতার কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত চারটি টিকার সরাসরি অনুমোদন দিয়েছে। সেগুলো হলো ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং জনসন অ্যান্ড জনসন (এক ডোজ)। আর সিনোফার্ম, সিনোভ্যাক, স্পুটনিক ভি এবং কোভ্যাক্সিনকে শর্তসাপেক্ষে অনুমোদনের তালিকায় রেখেছে তারা।
বাংলা৭১নিউজ/এবি