বাংলা৭১নিউজ,(ভোলা)প্রতিনিধি: ভোলায় এক মিষ্টির দোকানের কর্মচারী দুলাল মালীকে (৫০) ৮ দিন ধরে রুমের মধ্যে তালাবদ্ধ রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। এতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে দোকানের মালিক মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে।
নিহত দুলাল মালী বরিশাল মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বাহের চর গ্রামের ঝন্টু মালীর ছেলে।
নিহতের স্ত্রী অঞ্জু রানী অভিযোগ করেন, আমার স্বামী দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ভোলার বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে কারিকর হিসেবে কাজ করে আসছেন। আমরা গত ১২ বছর ধরে ভোলা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কালিখোলা এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকি।
তিনি জানান, তার স্বামী (দুলাল মালী) ভোলার ঘুইংগারহাট বাজারের আল মদিনা মিষ্টির দোকানের কাজ করতেন। দোকানের মালিক মো. কামাল হোসেন তাকে গালমন্দ করার কারণে চলতি মাসের প্রথম দিকে ওই দোকানের চাকরি ছেড়ে ভোলার খেয়াঘাট এলাকার আরেকটি মিষ্টির দোকানে কাজ নেন।
অঞ্জু রানী জানান, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আল মদিনা মিষ্টির দোকানের মালিক মো. কামাল হোসেন গত ৯ আগস্ট আমার স্বামীকে খেয়াঘাট থেকে ধরে নিয়ে তার আবাসিক হোটেলের একটি ঘরে হাত-পা বেঁধে আটক করে রাখেন। এদিকে আমরা অনেক দিন তাকে খোঁজাখুঁজি করে কোনো খবর পায়নি। পরে ১৬ আগস্ট রাতে দোকানের এক কর্মচারীর সহযোগিতায় তার মোবাইল থেকে আমাকে ফোন করে তাকে আটকে রাখা ও নির্যাতনের খবর দেন।
তিনি বলেন, ওই রাতেই আমি দৌলতখান থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসি। এ সময় তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষত চিহ্ন ছিল। এবং তিনি খুব অসুস্থ ছিলেন। টাকার অভাবে তাকে আমি হাসপাতালে ভর্তি করতে পারেনি। তাই বিনা চিকিৎসায় আমার স্বামী সোমবার মারা যান।
তিনি আরও জানান, তার স্বামী তাকে মৃত্যুর আগে নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমি কামালের দোকানের চাকরি কেন ছেড়ে দিয়েছি। হিন্দু হয়ে এত সাহস পাই কেমন করে এ কথা বলে প্রতিদিনই কামাল ও তার ছোট ভাই রট এবং লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করতো।
তিনি ওই নির্যাতনকারী কামাল হোসেনের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে দোকানের মালিক মো. কামাল হোসেন পলাতক থাকায় তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার দোকানের কর্মচারী মো. আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের কাছে দুলালকে আটকে রেখে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি শুনেছি তার কাছ থেকে দোকান মালিক ১৮ হাজার টাকা পায়। সে জন্য মনে হয় তাকে আটক করে রেখেছে। তবে আমি সঠিক জানি না।
দৌলতখান থানার ওসি মো. এনায়েত হোসেন জানান, আমরা গত কয়েকদিন আগে ওই দোকান কর্মচারীকে উদ্ধার করেছি। তখন তিনি অসুস্থ ছিল। পরে মারা যাওয়ার পর তার লাশ ভোলা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। আমরা আসামিকে আটকের চেষ্টা করছি।
বাংলা৭১নিউজ/এমএম