দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে আসা সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ডাকাতি করে আসছিলো একটি চক্র।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, চক্রটি রিকশায় করে গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীদের টার্গেট করত। এরপর পুলিশসহ বিভিন্ন পরিচয়ে মারধর করে সর্বস্ব লুট করত। এমনকি টার্গেট করা ব্যক্তিদের বহনকরা রিকশাও নিয়ে নিত।
সম্প্রতি বরগুনা থেকে আসা তিন যাত্রীর রিকশা থামিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ডাকাত দলের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবির ওয়ারী বিভাগ।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন, ডাকাত দলের সরদার নাহিদ হোসেন ওরফে আনন্দ ও তার সহযোগী মো. বাবুল (৬৩), মো. দেলোয়ার ওরফে রিপন (৩৮), মো. মনতাজুল (৪০), মো. রতন ইসলাম (৩৮।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি করে নেওয়া টাকা ও দুটি রিকশা উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, চলতি মাসের ৪ তারিখ ভোরে বরগুনা থেকে বাসে করে কবির হোসেনসহ তিনজন ঢাকায় আসেন। তারা সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য পুরান পল্টনের একটি এজেন্সির কাছে (ফিটনেস) মেডিকেল করার কাগজ জমা দিতে যাচ্ছিলেন।
ঘটনার দিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাস থেকে নেমে তিনজন মিলে যাত্রাবাড়ী সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে থেকে রিকশায় করে পল্টনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। কিছু দূর যাওয়ার পর ওয়ারী থানার শশী মোহন বসাক লেনে এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে রিকশার গতিরোধ করা হয়।
পরবর্তীতে রিকশা থেকে নামিয়ে ভুক্তভোগী কবিরের কাছে থাকা প্রায় ৩৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এমনকি ডাকাত সরদার নাহিদ ভুক্তভোগী কবিরের মাথা ধরে দেওয়ালে আঘাত করেন। এই ঘটনায় কবির বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার ছায়া তদন্তে নামে ডিবির ওয়ারী বিভাগ।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রিকশায় করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করা এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার মনতাজুল ও রতন দায় স্বীকার করে ছয়জনের সম্পৃক্ততা কথা জানিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
তিন বলেন, গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সরদার নাহিদের বিরুদ্ধে তিনটি ছিনতাই, একটি মাদকসহ পাঁচটি, বাবুলের বিরুদ্ধে ৫টি ছিনতাই, দুটিটি দ্রুত বিচার আইন ও ৩টি মাদক মামলাসহ ১০টি ও দেলোয়ারের বিরুদ্ধে দুটি ছিনতাই মামলা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সায়েদাবাদ, গাবতলী, গুলিস্তান, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালসহ আন্তঃজেলা বাস ও লঞ্চে ঢাকায় আসা যাত্রীদের টার্গেট করে দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছিল তারা। কেউ তাদের কাজে বাধা দিলে আঘাত করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।
ভোরে কেউ ঢাকায় এলে টার্মিনালে একটু অপেক্ষা করে বেলা বাড়লে বের হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, রমজানকে কেন্দ্রে করে ইফতার, সেহরিসহ নির্জন সময়গুলোতে ডাকাতি বা ছিনতাই প্রতিরোধে ডিবি পুলিশ মাঠে থাকবে।
কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে চলা অভিযানের বিষয়ের এক প্রশ্নে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের সাঁড়াশি অভিযান চলমান রয়েছে। এমনকি কেউ যেন শূন্যস্থান পূরণ করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস