জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বর্তমান ঠিকানাই বর্তমানে ভোটার এলাকা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে কোনো কারণে বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন হলে ভোটার এলাকাও পরিবর্তন হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নাগরিকদের। সেইসঙ্গে ঠিকানা পরিবর্তন করতে হলে দুইবার ফি দিতে হয় সেবাগ্রহীতাদের। অবশেষে এনআইডিতে ঠিকানা পরিবর্তনে এইসব ঝামেলা থেকে রেহাই পাচ্ছে নাগরিকরা।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাগরিকদের এনআইডি সেবা সহজীকরণে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে সমস্যা ও উত্তোরণের উপায় নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেবা সহজীকরণ কমিটির প্রধান ও ইসির উপসচিব এম মাজহারুল ইসলামের দাখিল করা ওই প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে বিষয়টি।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যমান পদ্ধতি বা ব্যবস্থায় বর্তমানে আবেদনকারী যে এলাকায় স্থানান্তরিত হতে চান সেই ব্যক্তিকে উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন দাখিল করতে হয়। আবেদন প্রাপ্তির পর উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসার দাখিলকৃত দলিলাদি যাচাই-বাছাই শেষে আবেদন ইস্যু করেন। এরপর নির্বাচন অফিসার কর্তৃক আবেদন অনুমোদন করতে হয়। অর্থাৎ ঠিকানা ও চাহিত ঠিকানা দুই জায়গায় থানা বা উপজেলার দুই কর্মকর্তার অনুমোদন প্রয়োজন হয়।
সমস্যা হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান ও চাহিত ঠিকানা দুই জায়গায় উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার অনুমোদন প্রয়োজন হয় বলে স্থানান্তর কার্যক্রমে ধীরগতি হয়ে। এজন্য আবেদনকারী চাহিত ঠিকানার উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন দাখিল করবেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসার দলিলাদি যাচাই বাছাই করে অপারেটরকে আবেদন ইস্যু করার জন্য অনুমতি দেবেন।
এক্ষেত্রে অপারেটর আবেদন ইস্যু করার পর উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসার ইলেট্রনিক্যালি অনুমোদন করবেন। এতে পূর্বের ঠিকানায় আর উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসারের অনুমোদন প্রয়োজন হবে না অর্থাৎ একই অফিসে কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় দ্রুততম সময়ে আবেদন নিষ্পত্তি হবে।
এইভাবে ভোটার এলাকার পরিবর্তনের জন্য যে উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসের অধীন এলাকা হতে ভোটার স্থানান্তরিত হয়েছেন সে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার অবগতির জন্য কার্ড ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের তার এলাকা হতে স্থানান্তরিত এলাকাভিত্তিক ভোটার সংখ্যা ও ভোটারের তথ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
এদিকে ভোটার স্থানান্তর সম্পন্ন হওয়ার পর আবেদনকারীর মোবাইলে স্থানান্তরিত ঠিকানার কার্ড সংগ্রহের জন্য মোবাইলে এসএমএস দেওয়া হয়। এতে বর্তমান নিয়মানুযায়ী প্রথমে মাইগ্রেশন আবেদন দাখিল করতে হয়। এরপর তা অনুমোদন হলে স্থানান্তরিত ঠিকানার কার্ড সংগ্রহের জন্য ফি প্রদানপূর্বক আবার ডুপ্লিকেট কার্ডের আবেদন করতে হয়। এভাবে আবেদনকারীর সময় অপচয় হয়।
এছাড়া মেসেজ ভুল তথ্য সরবরাহের জন্য ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এজন্য স্থানান্তর আবেদনের সঙ্গে স্থানান্তরিত ঠিকানার কার্ড সংগ্রহের জন্য একবারেই ফি গ্রহণ করা যেতে পারে। স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবেদনকারী পোর্টাল হতে যেন কার্ড ডাউনলোড করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
পাশাপাশি আবেদনকারী সরাসরি অফিসে এসে কার্ড সংগ্রহ করতে চাইলে কার্ড প্রিন্টের জন্য সফটওয়ারেও প্রিন্টের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এতে করে স্থানান্তর কার্যক্রম ও স্থানান্তরিত ঠিকানার কার্ড গ্রহণের জন্য একাধিকবার আবেদনের প্রয়োজন হবেনা, ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রদান সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি সিস্টেমের মধ্যে এনআইডি কার্যক্রমটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। আমি এখানে নতুন এসেছি। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া যেকোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন নেওয়ারও প্রয়োজন পড়ে। তবে নাগরিকদের যাতে সহজে সেবা দেওয়া যায় আমাদের সেটাই লক্ষ্য। আমরা সে চেষ্টাই করছি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ