বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: দেশে চলমান রাজনৈতিক আলোচনার শীর্ষে রয়েছে আগামী জাতীয় নির্বাচন। আর এই নির্বাচন নিয়ে যেমনিভাবে অভ্যন্তরীণ কূটনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে, তেমনি বহির্বিশ্বেও বেড়েছে নানামুখী তৎপরতা।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের পর এ নিয়ে বিতর্ক জমে উঠতেই, ফের আলোচনায় কূটনৈতিক তৎপরতা। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আবারো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুক্ত হওয়ার তৎপরতা লক্ষ্যনীয়।
এরই মধ্যে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে আজ বুধবার বাংলাদেশ-ইইউ রাজনৈতিক সংলাপ হতে যাচ্ছে। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক সেখানে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বৈঠকের মূল এজেন্ডা নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার। পররাষ্ট্র সচিবের কাছে আগামী নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাওয়া হতে পারে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বৃহস্পতিবার দ্বিপক্ষীয় সফরে জার্মানি যাচ্ছেন। সেখানে ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকের সুযোগে প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে মার্কেলকে অবহিত করতে পারেন।
বাণিজ্যসহ অপরাপর দ্বিপক্ষীয় ইস্যু আলোচনায় থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় সফরে জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে অন্য নেতাদের সঙ্গে সাইডলাইনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আলোচনা হতে পারে।
এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে বসতে চান বিদেশীরা। নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করার অংশ হিসেবে তাদের এ আগ্রহের কথা এরই মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে অবহিত করেছেন। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনের পরিবেশ নিয়েও সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন তারা। আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হোক- এমন প্রত্যাশা থেকে এসব কার্যক্রম শুরু করেছেন বিদেশীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদেশী কূটনীতিকরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আগ্রহ ব্যক্ত করে নানা তৎপরতা শুরু করেছেন। জাতিসংঘের নেতৃত্বে কয়েকটি দেশের ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকরা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু সরকারপক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো সাড়া মেলেনি।
জানতে চাইলে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ওয়াটকিনস সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ মুহূর্তে আলোচনায় না গেলেও কোনো একপর্যায়ে দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইইউ ও অস্ট্রেলিয়ার কূটনীতিকরা রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন।
দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আবারো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুক্ত হওয়ার বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন বিশ্লেষকরা? সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইনের মতে, একটি দেশের নির্বাচন পদ্ধতি বা গণতন্ত্রের চর্চা কেমন হবে, সেটি নির্ধারণ করবে সে দেশের মানুষ। তাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।
দশম সংসদ নির্বাচন নিয়ে উদ্ভূত জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিদেশিদের নাক গলানোর সুযোগ করে দিয়েছিল। এবারো তারা সেই সুযোগই নিতে চায়। বিদেশিদের এমন তৎপরতাকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভালো চোখে না দেখলেও বিরোধী শিবিরে উচ্ছাস বইছে। তারা এটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন।
বাংলা৭১নিউজ/আরএস