বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: রাজধানীর গুলশান এলাকায় ১০ কাঠা জমিসহ একটি বাড়ি অবৈধভাবে দখলের মামলায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) কুতুব উদ্দিন আহমদের ব্যক্তিগত হাজিরা অব্যাহতি আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট প্রণব কুমার হুই এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ২৬ জুন মামলার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন। ওই দিন আসামিকে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দুদকের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. আশিকুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ২০৫ ধারায় আদালতে দাখিল করা হাজিরা অব্যাহতির আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহনাজ আক্তার ও মো. শাহিম উদ্দিন। অপরদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে এর তীব্র বিরোধীতা করেন আইনজীবী রফিকুল ইসলাম জুয়েল। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির আবেদন নাকচ করেন।
আদালত সূত্র জানায়, এর আগে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত থেকে জামিন পান কুতুব উদ্দিন। এরও আগে ৮ এপ্রিল দুপুরে মামলা দায়েরের পর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে দুদক। এরপর ওই দিন বিকালে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ‘ভূমি কুতুব’ হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভকারী কুতুব উদ্দিনসহ দু’জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলাটি করেন দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম। মামলায় তার পদবি ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘পার্সোনাল অফিসার’ হিসেবে উলে¬খ করা হয়।
মামলার অপর আসামির নাম নাজমুল ইসলাম সাঈদ। মগবাজারের ১/৭ মীরবাগের বাসিন্দা সাঈদকে জমির ভুয়া আমমোক্তার সাজিয়ে তা হাতিয়ে নেয়া হয়। কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও ভুয়া আমমোক্তারনামার মাধ্যমে গুলশানে ১০ কাঠার একটি প¬ট তার শ্বশুরসহ কয়েকজনের নামে বরাদ্দ করেন তিনি।
এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনেকগুলো অভিযোগ দুদকে অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গুলশান ১ নম্বরের ১ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ি পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন কুতুব। ১০ কাঠার ওপর বাড়িটির দলিলে শ্বশুর আবদুল জলিল মৃধার নাম থাকলেও প্রকৃত মালিক কুতুব উদ্দিন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতা দেখিয়ে ও অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে কৌশলে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে রাজউকের হুকুম দখল করা সম্পত্তি অবমুক্ত করা হয়।
এরপর সাঈদকে জমির ভুয়া আমমোক্তার সাজিয়ে শ্বশুরসহ আরও দু’জনকে ক্রেতা সাজিয়ে জমিটি আত্মসাৎ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, শ্বশুরের নামে জমিটি ক্রয় দেখানো হলেও তিনি কখনও জমি ভোগ করেননি বা সেখানে বসবাস করেননি। কুতুবই জমিটি দখলে রেখেছেন।
এমনকি সপরিবারে তিনি সেখানে বসবাসও করছেন। এ জমির অপর ক্রেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ডা. একেএম আনোয়ার উল¬াহ ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামসুন্নাহারের নাম থাকলেও তারা ওই জমি ভোগদখল করেননি। এমনকি জমিটি তাদের দখলেও নেই। কুতুব তাদের প্রভাবিত ও প্ররোচিত করে কম দামে গুলশানে জমি কিনে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের নাম দলিলে ক্রেতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস