বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করেছে ছাত্রলীগ।
তবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে ভিসি চত্বরে কয়েক প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শুক্রবার উপাচার্যের বাসভবনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মসূচির স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্রলীগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকায় জিয়াউর রহমানকে ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ উল্লেখ করা নিয়ে এ বিক্ষোভের শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
কর্মসূচি স্থগিত প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, ‘ইতিমধ্যে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই প্রবন্ধ লেখার সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে উপাচার্যের পক্ষ থেকে।
এ কারণে আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত, তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আবারো কর্মসূচিতে যাবে ছাত্রলীগ।’
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে আটটার দিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে যান।
কিন্তু উপাচার্য তাদের সঙ্গে দেখা করেননি। পরে সেখানে অবস্থানকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সঙ্গে তারা বৈঠক করেন। রাত সোয়া নয়টার দিকে ছাত্রলীগের নেতারা বৈঠক শেষে বের হন।
স্মরণিকায় ‘স্মৃতিতে অম্লান’ শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বর্ণনা দেওয়ার সময় জিয়াউর রহমান হলের পরিচিতিতে জিয়াউর রহমানকে ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। প্রবন্ধটির লেখক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রেজাউর রহমান।
এর প্রতিবাদে শুক্রবার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই সময় উপাচার্য গাড়ি নিয়ে বাসভবনে ঢোকার সময় তার গাড়ি ছাত্রলীগের ভাঙচুরের শিকার হয়। পরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রেজাউর রহমানকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন উপাচার্য।
বিকেল চারটার দিকে ছাত্রলীগ বিক্ষোভ মুলতবি ঘোষণা করেন। কিন্তু বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কয়েকজন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আবারো বিক্ষোভ শুরু করেন।
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এবার বিক্ষোভে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি, প্রক্টরের সঙ্গে হয়েছে।’
গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা নিন্দনীয় ও ন্যক্কারজনক। ভিসির গাড়ি ভাঙচুর করা গর্হিত অপরাধ। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ