বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে আজ শুক্রবার দুপুরে বের করা বিক্ষোভ মিছিলে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রঙিন পানি ছোড়ে পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ চারজনকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, বিক্ষোভকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মাজার গেটের সামনে পুলিশ তাঁদের লক্ষ্য করে রঙিন পানি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, হাইকোর্টের সামনে কেউ বিক্ষোভ করতে পারেন না। নিরাপত্তার স্বার্থে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করার কথা স্বীকার করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, এই চারজনের একজন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী। পুলিশের বাধায় অন্তত পাঁচজন আহত হওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিক থেকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এই বিক্ষোভ সমাবেশে আছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, উদীচী, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, ছাত্র ঐক্য ফোরামসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষেরা। সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্ট অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে মাজার গেটের কাছে পুলিশ বাধার মুখে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত ভাস্কর্য সরানোর কাজ হয়। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্যটি সরানোর দাবি জানিয়ে আসছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভাস্কর্য সরানোর খবর পাওয়ার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে সর্বোচ্চ আদালতের সামনে ছুটে আসেন বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা। দুইটার দিকে বেশ কিছু তরুণ সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটকের বাইরে স্লোগান দিতে থাকেন।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা-কর্মী ও সাধারণ ছাত্রদের একটি মিছিল আসে। রাত আড়াইটার দিকে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা আদালতের ফটক ধরে ধাক্কাধাক্কি করেন। থেমে থেমে স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা।
স্লোগান ওঠে ‘ন্যায়বিচারের ভাস্কর্য অপসারণ করা যাবে না’, ‘আপস না রাজপথ?—রাজপথ, রাজপথ’, ‘হেফাজতের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মৌলবাদের আস্তানা, ভেঙে দাও জ্বালিয়ে দাও’ ইত্যাদি।
এই বিক্ষোভের মধ্যেই ভাস্কর্যটি অপসারণের কাজ শেষ হয়। ভোর চারটার দিকে ভাস্কর্য অপসারণের কাজ শেষ হওয়ার পর আরও ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে বিক্ষোভকারীরা সেখান থেকে চলে যান। যাওয়ার আগে আজকের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরই অংশ হিসেবে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আজকের বিক্ষোভ সমাবেশ।
বাংলা৭১নিউজ/এসআর