বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: মিয়ানমারে মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংগি লি তাড়াহুড়ো করে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর না করার আহবান জানিয়েছেন।তিনি বলেছেন, ভাসানচরে সাইক্লোন হলে কি পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে সেটা না দেখে এবং দ্বীপটির সুযোগ সুবিধা পর্যাপ্ত যাচাই না করে কোন ভাবেই তাড়াহুড়ো করে রোহিঙ্গাদের সেখানে পাঠানো উচিত হবে না।
একইসাথে রোহিঙ্গাদের নিজেদের সরাসরি সেখানে গিয়ে দ্বীপটি দেখার সুযোগ করে দেয়ার কথাও বলেছেন তিনি যাতে তারা নিজেরা দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে সেখানে তারা যেতে চান কিনা।
বৃহস্পতিবার ভাসানচরে এক সফরের পর শুক্রবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বক্তব্য দেন। তিনি অবশ্য হেলিকপ্টার থেকে দ্বীপটির অবস্থা যাচাই করার চেষ্টা করেছেন।
জাতিসংঘ দূত বলেন, তাড়াহুড়ো করে একটি দ্বীপে রোহিঙ্গাদের পাঠানো হলে মিয়ানমারের কাছে ভুল বার্তা দেয়া হবে ।
তিনি বলেন, মিয়ানমার এমন বার্তা পেতে পারে যে বাংলাদেশেই রোহিঙ্গাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা হয়ে যাচ্ছে, তাদের ফেরত না নিলেও চলবে।”তারা (মিয়ানমার) একটি জঘন্যতম অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে বলে ভাবতে পারে।”
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রায় এক লক্ষ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। জানা গেছে, ভাসানচরে বেড়িবাধ নির্মাণ, ঘরবাড়ি, সাইক্লোন শেল্টারসহ অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।তবে রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে একেবারেই প্রস্তুত নয় বলে জানা গেছে।
জাতিসংঘের বিশেষ দূতের এসব বক্তব্য নিয়ে সরকারের তাৎক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ভাসানচরে যে ব্যাপক একটি প্রস্তুতি চলছে সেই ধারনা সরকারের পক্ষ থেকে আগেই দেয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের থাকার বাড়িঘরসহ নানা ধরনের ব্যবস্থাপনা ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে। সেখানে গেলে মৌলিক যে সুবিধাগুলো দরকার সেগুলো রোহিঙ্গাদের দেয়া হবে বলে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। যারা ভাসানচরে যাবেন সেইসব রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে এসে মাঝেমধ্যে আত্মীয়দের দেখতে যেতে দেয়া হবে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
তবে বিবিসি সম্প্রতি সরেজমিনে কক্সবাজার গিয়ে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে ধারণা পেয়েছে যে রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে চায় না।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাতিসংঘ দূত বলেন, তাদের ফরিয়ে নিয়ে যেতে হলে যে পরিস্থিতি তৈরি করা দরকার মিয়ানমার তা একেবারেই করছে না, বরং এখনো সহিংস পথ বেছে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, এখনো যে কজন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে অবশিষ্ট রয়েছে তাদের জন্য খুব ভয়ের একটি পরিবেশ তৈরি করে ধীরে ধীরে সেখান থেকে তাদেরকে বাংলাদেশে বিতাড়নের পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
জিরো লাইনে এখনো যে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা রয়েছ সেখানে তাদের নিয়মিত ফাঁকা গুলি ছুড়ি ভয় দেখানো, রেডিওতে তাদের নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে যাতে তারা বাংলাদেশে ঢুকে যায়।
ইয়াংগি লি বলেন, বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গারা অদূর ভবিষ্যতে মিয়ানমারে ফেরত যেতে পারবে এমন বলা যাচ্ছে না।
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:বিবিসি বাংলা/এসএইচ