বাংলা৭১নিউজ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন উপজেলায় খাঁচায় মাছ চাষ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে সফলতা পাচ্ছে বেকার যুবকেরা। সাথে সাথে লাভবান হচ্ছে মৎস্য ব্যবসায়ীরা। জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ রায়গঞ্জে ফুলজোড় নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন বেকার যুবকরা। শুষ্ক মৌসুমে একটু সমস্যা হলেও গত তিন দিনের বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সমস্যা আর নেই। খাঁচা প্রতি বছরে প্রায় লাভ করছেন ১ লাখ টাকা এমনটাই বললেন চাষিরা। এমন সফলতা দেখে স্থানীয় অনেকে এগিয়ে এসেছেন এই মৎস্য চাষে। আর এই কাজে সার্বিক সহযোগীতা করছেন স্থানীয় মৎস্য বিভাগ।
সোমবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, লোহার রড, বাঁশ ও জাল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাছ চাষের এ খাঁচা। ২০ ফুট দৈর্ঘ্য, ১০ ফুট প্রস্থ ও ৬ ফুট গভীরতার প্রতিটি খাঁচায় ছাড়া হয়েছে ১ হাজার পিস মনো ও তেলাপিয়া পোনা। প্রতিটি মাছ এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়। প্রতিটি খাঁচা থেকে প্রতি তিনমাস অন্তর অন্তর প্রায় ১৫ মণ মনোসেক্স জাতের তেলাপিয়া মাছ উৎপাদিত হয়।
জেলার উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় খাঁচায় মাছ চাষে আগ্রহী মৎস্য চাষিরা। এই মাছ চাষে খরচ যেমন কম তেমনি আয়ও বেশী। সারা বছর মাছ ধরে যারা জীবিকা নির্বাহ করে আসছে তারাও এখন নদীতে মাছ না ধরে খাঁচায় মাছ চাষে ঝুঁকে পড়েছে।
জেলায় রায়গঞ্জ উপজেলায় ফুলজোড় নদীতে সব চেয়ে বেশী খাঁচায় মাছ চাষ বেশী হচ্ছে। মাছ চাষ করে ভাগ্য ফিরতে শুরু করেছে এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের। চাকরির পেছনে না ছুটে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করে এলাকার বেকার ও শিক্ষিত যুবকেরা।
রায়গঞ্জের বেকার যুবক মৎস্য চাষই আব্দুস ছালাম জানান, আমরা সারা বছর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কিন্তু আগের মতো মাছ এই নদীতে ধরা পড়ে না। এখন খাঁচায় মাছ চাষ করে আমরা খুব ভাল আছি। এবং পরিবার ও সচ্ছল ভাবে চলছে।
উল্লাপাড়ার মাছ চাষই আব্দুল আলীম জানান, প্রবহমান নদীতে খাঁচায় মাছ চাষে উৎপাদন খরচ কম। নদীতে চাষ করা মাছের জন্য আলাদা করে ওষুধ দিতে হয় না, প্রাকৃতিকভাবেই রোগ বালাই প্রতিরোধ হয়। মাছ দ্রুত বৃদ্ধির জন্যে শুধু ভাসমান খাবার দিলেই চলে।
স্থানীয় বেকার যুবক ও মৎস্যজীবীরা জানান, এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ লাভজনক হওয়ায় খাঁচার সংখ্যা যেমন দিন দিন বাড়ছে তেমনি অনেকেই এর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, খাঁচায় মাছ চাষে স্থানীয় মৎস্য অফিস থেকে নানা ভাবে তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এমন কি যারা খাঁচায় মাছ চাষে আগ্রহী তাদের এক মাসের ফ্রি টেনিং দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নদীতে খাঁচায় মাছ চাষে কোনো ইজারা নিতে হচ্ছে না। বাৎসরিক কোনো খাজনা দিতে হয় না। এজন্য খাঁচায় মাছ চাষে বেশী লাভ হচ্ছে। এ কারণেই সবাই এ মাছ চাষে ঝুঁকে পড়েছে। এই পদ্ধতিতে খাঁচায় মাছের চাষ বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি জেলার মৎস্য চাহিদা পূরণে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এমনটাই মনে করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস