মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সমুদ্রপথে হজযাত্রী পাঠানোর প্রস্তাবে সৌদি সরকারের সম্মতি রাব্বী হত্যা মামলায় ঢাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার সেপ্টেম্বরে সড়কে ঝরেছে ৪২৬ প্রাণ, ৪২ শতাংশই মোটরসাইকেলে দুর্নীতি কিছুটা কমেছে, চাঁদাবাজি তেমন একটা কমেনি হাইকোর্টে আপিল শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: অ্যাটর্নি জেনারেল নেত্রকোণায় ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ, ৪টি ইউনিয়নে কংসের পানি চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের ২ বিজ্ঞানী দুর্গাপূজায় স্কুল-কলেজ টানা ১১ দিন ছুটি ৮ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি শিউলি আজাদ উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি চায় এনজিওগুলো: দেবপ্রিয় চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আসিফ রহমানের সঙ্গে গোলাম পরওয়ারের সাক্ষাৎ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত ম্যাক্রোঁর অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বানে চটেছেন নেতানিয়াহু কোটা উঠিয়ে লটারির মাধ্যমে রাজউকের প্লট বরাদ্দের প্রস্তাব গণপূর্ত উপদেষ্টার সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেনকে ১০ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ চৌধুরী নাফিজ সরাফতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আমি কোনো দুর্নীতি করিনি : মাদকের ডিজি শুধু মেগা প্রজেক্ট নয়, সবুজায়ন বাড়াতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিমের তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ভারতে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ আইন’ বাতিল, গণপিটুনি ও সন্ত্রাসের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

বাতিল হচ্ছে ভারতীয় সংবিধান থেকে দেশদ্রোহ বা রাষ্ট্রদ্রোহের চিরাচরিত আইনটি। বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে ফৌজদারি দণ্ডবিধির আমূল বদলের নীলনকশা তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সেখানেই তিনি একথা বলেছেন।

অমিত শাহ জানিয়েছেন, ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’, ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড’ এবং ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’-এর নাম বদলে হতে চলেছে যথাক্রমে ভারতীয় ন্যায়সংহিতা (বিল), ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিল) এবং ভারতীয় সাক্ষ্য (বিল)। তিনটি বিলই স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতীয় আইনব্যবস্থা বহুলাংশে ইংরেজ আমলে তৈরি আইনকে ভিত্তি করে তৈরি। এ বার ফৌজদারি আইনব্যবস্থার ভারতীয়করণের লক্ষ্যেই তিনি বদলের সূচনা করছেন। মূলত, ঔপনিবেশিক আইনকে বদলে পুরোদস্তুর ভারতীয় করাই শাহের লক্ষ্য।

প্রস্তাবিত নয়া আইনে দেশদ্রোহ বা রাষ্ট্রদ্রোহের চিরাচরিত আইনটি আর থাকছে না। শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ১২৪এ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা ছিল। তা বাতিল করা হচ্ছে। যদিও নতুন বিলে উল্লেখ রয়েছে, ভারতের সার্বভৌমত্ব, একতা এবং অখণ্ডতাকে বিপন্ন করে এমন কাজ করলে যথোচিত শাস্তি হবে। বিলে সেকশন ১৫০-য় সেই সংস্থান রাখা হয়েছে।

কিন্তু শুধুই কি ঔপনিবেশিক চিহ্নকে সরিয়ে নতুন আইনের প্রবর্তন? তার জবাবও বাদল অধিবেশনের শেষ দিন লোকসভায় দাঁড়িয়ে দিয়েছেন শাহ। এই আইনগুলির আমূল বদলের কারণ কী? তার জবাবও লোকসভায় দাঁড়িয়ে দিয়েছেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘ঔপনিবেশিক শাসনে এই আইনগুলি তৈরি হয়েছিল। তার মূল কারণ ছিল ভারতের মাটিতে ইংরেজ শাসনের ভিত্তিকে আরও পাকাপোক্ত করা। এর বদলে আমরা নতুন আইন আনছি। ইংরেজদের তৈরি করা আইনের উদ্দেশ্য ছিল দণ্ড দেওয়া, ন্যায়প্রতিষ্ঠা নয়।’’ শাহের দাবি, ইংরেজ আমলের আইনকে সরিয়ে নতুন ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির উদ্দেশ্য শাস্তি দেওয়া নয়। বরং বিচার প্রক্রিয়াকে আরও সুসংহত করা। যেখানে মানুষের মনে অপরাধ বন্ধ করার অনুভূতি তৈরি করার একমাত্র লক্ষ্যেই শাস্তিপ্রদান।

এ ছাড়া, জিএসটি সংক্রান্ত একটি বিল-সহ আরও একাধিক বিল পেশ সংসদের বাদল অধিবেশনের একেবারে শেষ দিনে। লোকসভায় যখন একের পর এক বিল পেশ এবং পাশ করানোর প্রক্রিয়া চলছে, তখন সংসদের বাইরে এককাট্টা হয়ে বিরোধীরা আক্রমণ শানিয়েছে মোদী সরকারের দিকে। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা তথা বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর সাসপেনশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে কংগ্রেস। শুক্রবার সকালেই কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে বৈঠকে বসেন কংগ্রেস সাংসদরা। তাতে হাজির ছিলেন, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, রাহুল গান্ধীরা। অধীর নিজেও হাজির ছিলেন সেই বৈঠকে।

এরই মধ্যে আপ সাংসদ রাঘব চড্ডাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক সাংসদের সই জাল করার অভিযোগ রয়েছে। যদিও রাঘবকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তকে বিজেপির বাধ্যবাধকতা হিসাবেই অভিহিত করছে আপ। রাঘবের নিজের দাবি, একজন ৩৪ বছরের সংসদ সদস্য মোদী সরকারের নাভিশ্বাস তুলে দিচ্ছে, তা মানতে কষ্ট হচ্ছে বিজেপির। তাই সাসপেন্ড।

ঢেলে সাজছে ফৌজদারি দণ্ডবিধি

বাদল অধিবেশনের শেষ দিন ঔপনিবেশিক আমলের তিনটি মহাগুরুত্বপূর্ণ ফৌজদারি আইন বদলে নতুন আইনের বিল পেশ হল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কথায়, ‘‘ইংরেজদের তৈরি করা আইনের উদ্দেশ্য ছিল দণ্ড দেওয়া, ন্যায়প্রতিষ্ঠা নয়। ইংরেজ আমলের আইনকে সরিয়ে নতুন ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির উদ্দেশ্য শাস্তি দেওয়া নয়। বরং অপরাধের অনুভূতি তৈরি করতেই শাস্তির সংস্থান।’’

শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করে জানান, ১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ প্রতিস্থাপিত হবে ভারতীয় ন্যয় সংহিতা দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ প্রতিস্থাপিত হবে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা দ্বারা এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ প্রতিস্থাপিত হবে ভারতীয় সাক্ষ্য বিলে। তার পরেই বিল তিনটি সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত আইনগুলির মূল উপজীব্য হল, কেন্দ্রীয় স্তরে ভারতীয় নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত রাখা। শাহ জানিয়েছেন, নতুন আইনগুলি পাশ হয়ে যাওয়ার পর ভারতের ফৌজদারি আইনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে এবং প্রত্যেকে সর্বোচ্চ তিন বছরের মধ্যে সুবিচার পাবেন।

কী কী বিশেষত্ব?

• বর্তমানে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারায় রয়েছে দেশদ্রোহ। নয়া বিলে তা পুরোপুরি বাদ যাচ্ছে। যদিও ভারতের সার্বভৌমত্ব, একতা এবং অখণ্ডতা বিপন্ন হলে তা অবশ্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেই গণ্য করা হবে। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম শাস্তি তিন থেকে বছর থেকে বৃদ্ধি করে সাত বছর করা হয়েছে বিলে।

• নতুন বিল বলছে, ধর্ষণে অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হলে ন্যূনতম ১০ বছরের জেলের সাজা। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তির সংস্থান রাখা হচ্ছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। গণধর্ষকদের অন্ততপক্ষে ২০ বছরের জেলের সাজার সংস্থান রয়েছে।

• ১২ বছরের কম বয়সি নাবালিকাকে ধর্ষণের ক্ষেত্রে অপরাধীর সর্বনিম্ন ২০ বছরের সশ্রম জেল হবে। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ১২ বছরের কম বয়সি নাবালিকাকে ধর্ষণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তির সংস্থান মৃত্যুদণ্ড।

• গণপিটুনির ঘটনায় জড়িতদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তির সংস্থান মৃত্যুদণ্ড।

• ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এর আগে সন্ত্রাসের কোনও নির্দিষ্ট সংজ্ঞা ছিল না। শাহের পেশ করা নয়া বিলে সন্ত্রাসকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। নতুন বিলে সন্ত্রাসের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

• এই প্রথম সমাজ কল্যাণমূলক কাজকে (কমিউনিটি সার্ভিস) শাস্তি হিসাবে গণ্য করা হবে। অর্থাৎ, আদালত শাস্তি হিসাবে সামাজিক কল্যাণমূলক কাজের সাজা দিতে পারবে।

• নয়া বিলে একটি নতুন বিধান আনা হয়েছে যেখানে মৃত্যুদণ্ড কেবলমাত্র যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হতে পারে এবং শাস্তিদানের প্রথম সাত বছরের মধ্যে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ক্ষমা করা যেতে পারে। শাহ জানিয়েছেন, অনেক সময়ই বিভিন্ন সরকার শাস্তি মকুবের মাধ্যমে এই আইনের অপব্যবহার করে। তা রুখতেই এই নয়া বিধান।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: আনন্দবাজার

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com