বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: ‘অস্পৃশ্যতা দাসত্বের চেয়ে খারাপ‘— বলেছেন ভারতীয় দলিত সম্প্রদায়ের অবিসংবাদিত নেতা ড. ভিমরাও আম্বেদকর।
হিন্দু বর্ণভেদ প্রথার কারণে ভারতে দলিতদেরকে সমাজের একেবারে ‘নীচু জাত’ হিসেবে বিবেচনা করে অত্যন্ত ঘৃণা ও উপেক্ষার চোখে দেখা হয়।
কিন্তু কেবল হিন্দু সম্প্রদায়েই নয়, ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যেও যে ‘অস্পৃশ্য’ বা ‘দলিত’ মুসলিম আছে— সেই তথ্যই উঠে এসেছে দেশটিতে পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
ভারতে বর্তমানে প্রায় ১৪ কোটি মুসলিম নাগরিক আছে। এদের একটা বিরাট অংশই হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত।
মনে করা হয়, হিন্দু জাত-পাত প্রথার নিগ্রহ থেকে রক্ষা পেতেই নিম্নবর্ণের হিন্দুদের এই ধর্ম বদল।
সাধারণত, ইসলাম সকল মানুষের সমতার কথা বলে। আর মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থেও বর্ণভেদ প্রথার কোনো উল্লেখ নেই।
তাই, সামাজিক-চর্চায় অস্পৃশ্যতার বিষয়টি বিরাজমান থাকলেও এর বিরুদ্ধে মুসলিম সমাজ তেমন উচ্চ-বাচ্য নেই।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সময় এসেছে বলেই মনে করছেন গবেষকেরা।
গবেষক প্রশান্ত কে ত্রিবেদী, শ্রীনিবাস গোলি, ফাহিমুদ্দিন ও সুরিন্দর কুমার মিলে ভারতের ১৪টি জেলার মোট সাত হাজারের বেশি বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
২০১৪ এর অক্টোবর থেকে ২০১৫ এর এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের উত্তর প্রদেশে চলে এই গবেষণার তথ্য সংগ্রহ।
শুধু ভারতীয় হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায় নয় এমনকি শিখদের মধ্যেও বর্ণ-ভেদ দেখা যায়। তবে, পার্সিরা কিছুটা ব্যতিক্রম।
এই গবেষণার পর গবেষক প্রশান্ত কে ত্রিবেদী বলেছেন, দলিত হিন্দুদের মতই দলিত মুসলিম ও খ্রিষ্টানদেরকেও আলাদাভাবে কিছু সামাজিক সুযোগ-সুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা চালু করা উচিত।
তবে, এই গবেষণার ফলাফলে যে চিত্র উঠে এসেছে তার মোদ্দা কথা দাঁড়াচ্ছে এমন যে, ভারতে কেউ হয়তো তার জাত পরিত্যাগ করার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু সে জাতকে ছাড়তে চাইলেও জাত তাকে ছাড়বে না। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস