বাংলা৭১নিউজ, যশোর: বর্তমানে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ রয়েছে। এতে ভারতের পাচারকারীরা লাভবান হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশি পাচারকারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অগ্রিম টাকা দেওয়া গরু ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হতে বসেছে।
সেই সাথে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। নাভারন শুল্ক আদায় গরু করিডোরের রাজস্ব কর্মকতা আব্দুস সালাম জানান, গত ৩ মাস ভারত থেকে গরু আসা খুবই কমে গেছে। ফলে গরু থেকে পাওয়া প্রতি মাসে আদায়কৃত রাজস্ব ৫ কোটি টাকা থেকে কমে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে।
ভারত থেকে চোরাই পথে গরু বাংলাদেশের পুটখালী গরু কোরিডোরে জমা করা হয়। এখান থেকে গরু প্রতি নির্ধারিত টাকা নিয়ে গরুর শরীরে রাজস্ব আদায়ের সিল মেরে দিতেন নির্ধারিত কর্মকর্তা। সিল মারার পর এ গরু হয়ে যেত বৈধ। এখান থেকে ট্রাকে এসব গরু ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হাটে চলে যেত।
প্রতিবছর কোরবানি ঈদের আগে এ দেশের গরু পাচারকারীরা ভারতের পাচারকারীদের অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকে। এবারও ওপারের গরু পাচারের একাধিক সিন্ডিকেটকে এ পাড়ের সিন্ডিকেট অগ্রিম টাকা দিয়েছে। জানালেন যশোরের বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামের জয়নাল হোসেনসহ আরও কয়েকজন।
তরিকুল নামে একজন বলেন, এ টাকার একটি অংশ ঢাকা, চট্টগ্রামের মহাজনদের কাছ থেকে অগ্রিম নেয়া হয়েছে। এ টাকা ভারতের পাচারকারী সিন্ডিকেট আদৌ ফেরত দেবে কিনা তা নিয়ে এ দেশের গরু পাচারকারী চক্রের সদস্যরা সন্ধিহান।
বিএসএফের কঠোর কড়াকড়ি আরোপ করায় বেনাপোলের পুটখালী গরু করিডোর এ বছর গরুশূন্য। কিছুদিন আগেও এখানে ছিল জমজমাট গরুর হাট। ঈদ মৌসুমে গরু রাখার জায়গা হতো না। এছাড়া প্রতিদিনই কয়েকশ’ গরু ভারত থেকে আসতো এ করিডোরে।
পুটখালী গরু করিডোরের লিজ গ্রহীতা নাসিম রেজা পিন্টু ফোনে জানান, ‘দেশের সবচেয়ে বড় গরু করিডোর পুটখালী। প্রতি মাসে এ করিডোরে ভারত থেকে গরু আসতো কম-বেশি এক লাখ। এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হতো মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকা।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বিএসএফ গরু আসা বন্ধ করে দেওয়ায় এখন মাসে গরু আসে এক থেকে সর্বোচ্চ দেড় হাজার। আর রাজস্ব আদায় কমে এখন দাঁড়িয়েছে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা।’
প্রসঙ্গত, ভারতীয় আইনে কোনো পশু রফতানি নিষিদ্ধ থাকায় ওই দেশ থেকে কখনই বৈধ পথে গরু বাংলাদেশে আসতো না। চোরাই পথে বিএসএফকে সন্তুষ্ট করে রাখালরা কখনো সাঁতরিয়ে গরু নিয়ে নদী পার হয়ে বাংলাদেশে আসতো। স্থল পথও ব্যবহার করা হতো।
বাংলা৭১নিউজ/এসআর